গ্রামে বরাদ্দ প্রায় ৬০ হাজার কোটি

নির্বাচনী মরসুমেই জনমোহিনী জেটলি

সামনে উত্তরপ্রদেশের ভোট। কিন্তু নোট বাতিলের ফলে সমস্যায় পড়েছেন কৃষিজীবী মানুষ। গ্রামের মন জিততে তাই শুধু ১০০ দিনের কাজ নয়, কৃষি থেকে গ্রামের টেলিফোন সংযোগেও আরও টাকা ঢালছে কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৩৬
Share:

সামনে উত্তরপ্রদেশের ভোট। কিন্তু নোট বাতিলের ফলে সমস্যায় পড়েছেন কৃষিজীবী মানুষ। গ্রামের মন জিততে তাই শুধু ১০০ দিনের কাজ নয়, কৃষি থেকে গ্রামের টেলিফোন সংযোগেও আরও টাকা ঢালছে কেন্দ্র।

Advertisement

আজ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সংসদে অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দের যে প্রস্তাব পেশ করেছেন, তাতে সবচেয়ে বেশি অর্থ ধার্য হচ্ছে গ্রাম ও কৃষি ক্ষেত্রে। একশো দিনের কাজে বাড়তি ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যার ফলে চলতি আর্থিক বছরে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মোট বরাদ্দ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৪৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গ্রামের মানুষের রোজগার সুনিশ্চিত করার এই প্রকল্পে অতীতে এত অর্থ কোনও দিন বরাদ্দ হয়নি। সনিয়া-মনমোহনের জমানাতেও নয়।

এতেই থামেননি জেটলি। কৃষক কল্যাণ, ফসল বিমা যোজনার মতো কৃষি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে বাড়তি আরও ৩০৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন তিনি। গ্রাম ও প্রত্যন্ত এলাকায় টেলিফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা বাড়াতে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কয়েক মাস আগে ডালের দাম আকাশ ছোঁয়ায় মোদী সরকারকে গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল। রাহুল গাঁধী প্রধানমন্ত্রীকে ‘অড়হর মোদী’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এ বার তার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে বিদেশ থেকে ডাল আমদানি ও দেশের কৃষকদের থেকে ডাল কেনার জন্য ১৯৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করছেন জেটলি।

Advertisement

কিন্তু যে নরেন্দ্র মোদী এত দিন সনিয়া-মনমোহনের পাইয়ে দেওয়ার নীতির সমালোচনা করতেন, সেই তিনিই এখন একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পে অর্থ ঢালতে শুরু করায় প্রশ্ন উঠেছে, এ কি ভোল বদল! মোদী নিজেই কি তবে ‘কড়ক চা’ ছেড়়ে জনমোহিনী রাজনীতির পথ ধরলেন! মোদীর থেকে যাঁরা সাহসী সংস্কার দেখতে চান, তাঁরা বলছেন, এ তো তৃতীয় ইউপিএ সরকারের প্রত্যাবর্তন ঘটল! আর রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা বলছেন, উত্তরপ্রদেশ আর পঞ্জাব ভোটের দিকে তাকিয়েই মোদী চলছেন। গ্রামীণ অর্থনীতিতে এখনই টাকার জোগান বাড়াতে না পারলে নোট আকালে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া মুশকিল হতে পারে। সুতরাং হাত উপুড় করা ছাড়া উপায় নেই।

বিজেপি নেতারা অবশ্য বলতে চাইছেন, এ নিতান্তই সময়ের দাবি। নোট বাতিলের ফলে ধাক্কা খেয়েছে অসংগঠিত ক্ষেত্র। শহরের পাশাপাশি গ্রামের খেতমজুররা ব্যাপক হারে কাজ হারিয়েছেন। ফসল বোনার মরসুমে চাষির হাতে টাকা নেই। শহরের অবস্থা আরও খারাপ। যারা কাজের অভাবে শহরে গিয়েছিলেন, তারা ফের গ্রামে ফিরছেন। এই অবস্থায় গ্রামে রোজগার বাড়ানোর জন্য এ দিন সব মিলিয়ে মোট ৫৯,৯৭৮ কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ প্রস্তাব পেশ করেন জেটলি। এ জন্য কোষাগার থেকে বাড়তি খরচ হবে ৩৫ হাজার ১৭১ কোটি চাকা। বাকি অর্থ আসবে বিভিন্ন মন্ত্রকের সঞ্চিত অর্থ থেকে।

বাড়তি টাকা

• ১০০ দিনের কাজ ৪০০০ কোটি

• কৃষি ৩০৯৬ কোটি

• ফোন-ইন্টারনেট ২০০০ কোটি

• ডালের বিক্রিবাটা ১৯৮৮ কোটি

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement