অনিল অম্বানী
আগামী পরশু সুপ্রিম কোর্টে রাফাল মামলার শুনানি। তার আগে আজ মামলার আবেদনকারীদের হাতে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত নথি তুলে দিল নরেন্দ্র সরকার। তাতে অবশ্য রাফালের দাম জানানো হয়নি। বলা হয়েছে, বন্ধ খামে রাফালের দাম শীর্ষ আদালতকে জানানো হয়েছে। এমনকি, অনিল অম্বানীকে বরাত দেওয়ার কথাও এখনও পর্যন্ত তারা জানে না বলে সরকার দাবি করেছে।
লোকসভা ভোটের আগে মোদীর বিরুদ্ধে রাহুল গাঁধীর অন্যতম বড় অস্ত্র রাফালের ‘দুর্নীতি’। এই নিয়ে একগুচ্ছ মামলাও হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সবক’টি মামলাকে একসঙ্গে নিয়ে ৩১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর বেঞ্চ সরকারের কাছে রাফাল যুদ্ধবিমানের দাম জানতে চেয়েছিল। একই সঙ্গে রাফাল চুক্তি সংক্রান্ত তথ্য মামলাকারীদের হাতেও তুলে দিতে বলে।
গত শুনানির সময়ই অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল যুক্তি দিয়েছিলেন, রাফালের দাম ‘গোপন’। সংসদকেও সেটি জানানো হয়নি। প্রধান বিচারপতি তখনই নির্দেশ দিয়েছিলেন, দাম গোপন কেন, সেটিও হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে আদালতকে। দু’দিন আগে রাহুল গাঁধীও অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী, অনিল অম্বানী, ওলাঁদ, মাকরঁ, সাংবাদিক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বাবুরা, দাসোর প্রতিযোগী সংস্থাও রাফালের দাম জানেন। তবু এটি জাতীয় গোপন তথ্য।’’ যদিও আজ সরকারের এক সূত্র দাবি করে, সরকারের লুকনোর কিছু নেই। রাফালের দাম বন্ধ খামে আদালতকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তা শুধু বিচারপতিদের জন্যই।
সরকার আজ জানিয়েছে, দাসো কাকে ‘অফসেট’ (বিমানের সরঞ্জাম বা যন্ত্রাংশ) দেবে, সেটি এখনও সরকারকে জানায়নি। ২০১৩ সালে ‘অফসেট’ নিয়ে ইউপিএর নীতি মেনেই সরকার চুক্তি করেছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ আগেও এই দাবি করেছিলেন। পাশাপাশি সরকার আজ জানায়, ফ্রান্সের সঙ্গে ভারতের ‘নেগোশিয়েশন টিম’ দফায় দফায় বৈঠক করেই সবকিছু নির্ধারণ করেছে। তারপর নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার অনুমোদনও নেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘সরকার যে খতিয়ান আজ মামলাকারীদের হাতে দিয়েছে, তাতে গোটা রামায়ণ আছে, কিন্তু রাম নেই। দামের কথা বলা হয়নি। দ্বিতীয়ত, সরকার আজ ফের স্পষ্ট করল, প্রথমে প্রধানমন্ত্রী নিজের শিল্পপতি বন্ধু অনিল অম্বানীকে ফ্রান্সে নিয়ে গিয়ে ৩৬টি বিমান নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তারপর যাবতীয় প্রক্রিয়া পূরণ করার চেষ্টা হয়েছে। এমনকি, নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার অনুমোদনও আগে নেওয়া হয়নি। এ তো গাড়ির পিছনে ঘোড়া জুতে দেওয়া!’’