ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি)-র রিপোর্ট বলছে, হোমে থাকতে থাকতেই তার মধ্যে মৌলবাদী মানসিকতা গড়ে উঠেছে। এই অবস্থায় নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডের নাবালক অপরাধীকে আরও কিছু সময় হোমে রাখতে চেয়ে সোমবার দিল্লি হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। ওই অপরাধী সমাজে মুক্ত ঘুরলে কারও ক্ষতি হবে না, তা নিশ্চিত না করে তাকে মুক্তি দেবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। আদালত এতে কী রায় দেয় তা পরের কথা, কেন্দ্রের এই অবস্থানে আপাতত স্বস্তিতে নির্ভয়ার পরিবার।
শাস্তির তিন বছর শেষ করে বছর একুশের ওই অপরাধীর ছাড়া পাওয়ার কথা আগামী রবিবার। এ দিন প্রধান বিচারপতি জি রোহিনী এবং বিচারপতি জয়ন্ত নাথের বেঞ্চে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এসিজি) সঞ্জয় জৈন জানান, হোমের রিপোর্টে উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁর বাসিন্দা ওই অপরাধীর মানসিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত কোনও তথ্যই উল্লেখ করা নেই।
শুধু তাই নয়, ছাড়া পাওয়ার পর ওই অপরাধী নিজের জীবন নিয়ে কী পরিকল্পনা করেছে, সে নিয়েও হোমের রিপোর্টে স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি। ফলে গত তিন বছর হোমে থেকে আদৌ তার মানসিকতায় কোনও পরিবর্তন এসেছে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এই যুক্তিতে ওই অপরাধীকে আরও কিছু সময় হোমে রাখতে চেয়ে আবেদন জানায় কেন্দ্র।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্থা আইবি-র দেওয়া একটি রিপোর্টে বলা হয়, হোমে ওই অপরাধীর সঙ্গে আলাপ হয় ২০১১-র দিল্লি হাইকোর্ট বিস্ফোরণের মূল অভিযুক্তের। তার প্রভাবে ধর্ষণকারী ওই যুবক মৌলবাদী হয়ে উঠেছে বলেই জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে। এই অবস্থায় তার মুক্তিতে সমাজের বড় ক্ষতি হতে পারে— এই যুক্তিতে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী জনস্বার্থে একটি মামলা করে জানান, অপরাধীর মতিগতি নিয়ে নিশ্চিত না হয়ে যেন কোনও মতেই তাকে মুক্ত না করা হয়। আদালত আপাতত সেই মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়ে আইবি-র কাছে ওই রিপোর্ট তলব করেছে।
এ দিন শুনানির পর ওই বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘ভয়াবহ অপরাধ করে শুধু বয়সের দোহাই দিয়েই যে পার পাওয়া যায় না, তা নিশ্চিত করতে আদালত যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে বলেই আমি আশাবাদী।’’ নির্ভয়ার বাবার গলাতেও শোনা গিয়েছে একই সুর। তিনি বলেন, ‘‘বয়স নয়, সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল আপরাধটা। জেলে বসেই যদি জেহাদি হতে পারে, বাইরে মুক্ত ঘুরলে কী করবে?’’
সম্প্রতি বিজয়ওয়াড়াতে একটি দেহব্যবসা চক্র ফাঁস করেছে অন্ধ্র পুলিশ। সেই প্রসঙ্গে টেনে এ দিন জেলা শাসকদের নিয়ে একটি সভায় অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত সব সমাজবিরোধীকে নির্ভয়া আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন।