বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে সংসদে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার ভাবনা কেন্দ্রের। —ফাইল চিত্র।
বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট (বরখাস্ত) প্রস্তাব আনার ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে নিয়ে এগোতে চায় কেন্দ্র! বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। আগামী ২১ জুলাই থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হবে। ওই অধিবেশনে বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার পথে এগোতে পারে কেন্দ্র। ওই বিষয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে কেন্দ্র আলোচনা শুরু করেছে বলে জানান রিজিজু।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, বিষয়টির সঙ্গে বিচার বিভাগে দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ জড়িত। ফলে এটি নিয়ে প্রতিটি দলের পৃথক রাজনৈতিক অবস্থানের কোনও বিষয় নেই। তাই এটি নিয়ে সংসদকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলেও মনে করছেন রিজিজু। সংসদীয় মন্ত্রী জানান, তিনি ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। প্রতিটি দলের সঙ্গেই তিনি যোগাযোগ করবেন বলে জানান। তিনি বলেন, “এটি নিয়ে প্রতিটি দলের আলাদা আলাদা রাজনৈতিক অবস্থানের কোনও জায়গা নেই। বিষয়টি খুবই গুরুতর এবং দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার ব্যবস্থা হোক বা অন্য কোনও ক্ষেত্রে, যখনই দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হবে, তাতে দেশের কথা আগে মাথায় রাখতে হবে।”
ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব নিয়ে কেন্দ্রের কী ভাবনা, তার একটি আভাস দিয়েছেন মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, সরকার চাইছে সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনতে। বিচারপতি বর্মাকে ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত হয় চলতি বছরের দোলের দিন। দিল্লি হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাসভবনের গুদামে আগুন লেগে যায়। দমকলকর্মীরা আগুন নেবাতে গিয়ে আধপোড়া নোটের রাশি রাশি বান্ডিল উদ্ধার করেন বলে দাবি করা হয়। বিতর্ক বৃদ্ধি পেতেই ওই বিচারপতিকে দিল্লি থেকে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে সরিয়ে দেওয়া হয়। ক্রমে মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালত ওই ঘটনার অনুসন্ধানের জন্য হাই কোর্টের তিন বিচারপতিকে নিয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে। গত ৩ মে ওই অনুসন্ধান কমিটি একটি মুখবন্ধ রিপোর্ট জমা দেয় সুপ্রিম কোর্টে।
সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে কয়েক দিন আগেই পিটিআই জানায়, যদি বিচারপতি বর্মা নিজে থেকে পদত্যাগ না করেন, তা হলে বাদল অধিবেশনেই তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার কথা ভাববে কেন্দ্র। অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখে অবসরগ্রহণের দিনকয়েক আগে বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের সুপারিশ করে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিচারপতি বর্মাকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করার আর্জিও জানিয়েছিলেন। যদিও অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্টও প্রকাশ্যে আনা হয়নি। অন্য দিকে, আগেই পদত্যাগ করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন বিচারপতি বর্মা। নিজেকে নির্দোষ বলেও দাবি করেছেন তিনি।