ছবি: এপি।
আপনি মহান। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের কাছে এই মন্ত্র জপ করলেই নাকি সব ছাড় পাওয়া যায় বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। আর তার প্রমাণ দিতে আজ দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করল কংগ্রেস। তাতে হাজির হলেন দলের আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি ও নতুন মুখপাত্র প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কন্যা শর্মিষ্ঠা। গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া তিনটি ঘটনা সামনে এনে নিজেদের অভিযোগ প্রমাণ করতে চাইলেন তাঁরা।
প্রথম ঘটনা সিকিমের। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী প্রেমসিংহ তামাং। ভোটে দাঁড়াননি, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ফলে ছ’মাসে তাঁকে জিতে আসতে হবে। অথচ দুর্নীতির অভিযোগে এক বছর জেল খেটেছেন। ফলে নিয়ম মাফিক ছ’বছর ভোটে লড়তে পারবেন না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের অধিকার প্রয়োগ করে ভোট থেকে ‘নির্বাসন’-এর মেয়াদ এক বছর করে দিল। যে এক বছর ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে এখন অনায়াসে ভোটে লড়তে পারবেন তিনি। আজ মনোনয়নও পেশ করে দেন প্রেমসিংহ।
মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘এমন জাদু হল কী করে? কারণ, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দল বিজেপির সঙ্গী। ‘তুস্সী গ্রেট হো’ বললেই সব আইন বদলে যেতে পারে। নির্বাচন কমিশনও নির্বাসনের মেয়াদ কমানোর জন্য খুঁজে-পেতে ১৯৭৭ সালের একটি নজির বার করে এনেছে। আমি নিজে লালুপ্রসাদের আইনজীবী। আমি তো লালুজিকে বলব, এখন থেকে তিনিও ‘আপনি মহান’ মন্ত্র জপ করুন। তাঁর নির্বাসনও মকুব হবে।’’
দ্বিতীয় ঘটনা পঞ্জাবের। গুরু নানকের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা বিয়ন্ত সিংহের হত্যাকারী বলবন্ত সিংহ রাজওয়ানার মৃত্যুদণ্ড বদলে যাবজ্জীবন সাজা করেছে। আরও আট শিখ বন্দির শাস্তি লঘু হয়েছে। রাজওয়ানা কোনও দিন ফাঁসি মকুবের আর্জি জানাননি। জানিয়েছিল বিজেপির শরিক অকালি দল ও শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ অবশ্য বরাবর মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী। কিন্তু তিনি আজ জানান, এই সিদ্ধান্তে তাঁর সরকারের কোনও হাত নেই। তবে বিয়ন্ত সিংহের সাংসদ-নাতি রবনীত বিট্টু বলেন, ‘‘আমি স্তম্ভিত। এ তো কালো দিন।’’ আর মনু সিঙ্ঘভির বক্তব্য, ‘‘রাজওয়ানা শুধু মুখ্যমন্ত্রীরই হত্যাকারী নন, আরও ১৬ জনের হত্যার জন্য দায়ী।’’
তৃতীয়টি শাহজহানপুরের আইনের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনা। রাহুল গাঁধী-প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা গোড়া থেকেই অভিযোগ করছেন, আড়াল করা হচ্ছে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা চিন্মায়নন্দকে। অভিযোগকারিণীই তোলাবাজির দায়ে গ্রেফতার হয়েছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ শাহজহানপুর থেকে লখনউ পর্যন্ত পদযাত্রার আয়োজন করেছিল কংগ্রেস। সেই পদযাত্রাকেও আটকে দেয় উত্তরপ্রদেশের যোগী প্রশাসন। তার বিরুদ্ধে রাহুল-প্রিয়ঙ্কাও সরব হন। মনু সিঙ্ঘভির অভিযোগ, ‘‘আইনের যে ধারায় দশ বছরের বেশি সাজা হতে পারে, সে ধারা প্রয়োগই হয়নি। এত দিনে চার্জ গঠনও হয়নি। কারণ নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ আর যোগী আদিত্যনাথের কাছে গুরুত্বপূর্ণ চিন্ময়ানন্দ।’’ বিজেপির অবশ্য দাবি, সব আইন মেনেই হচ্ছে।