ভয়াবহ: বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে ফরবিসগঞ্জে দুর্ঘটনা। —নিজস্ব চিত্র
গুজব ছড়িয়েছিল, ভিআইপি ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বেশি সুস্বাদু খাবার দেওয়া হচ্ছে। আর তার জেরেই লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজপ্রতাপের বিয়ের আসরে একদল লোক ভাঙচুর এবং লুঠপাট চালাল গত কাল রাতে। অভিযুক্তরা লালুপ্রসাদেরই দলের কর্মী বলে জানা গিয়েছে। এই আরজেডি কর্মীরা খাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট জায়গাটি শুধু লন্ডভন্ডই করেনি, ক্যাটারারের বাসনপত্র নিয়েও পালিয়েছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি চালাতে হয় দলের নেতাদের। কিছু সময়ের জন্য গোটা এলাকা হয়ে ওঠে রণক্ষেত্র। যদিও থানায় কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে গোটা ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ লালুপ্রসাদ ও তাঁর পরিবারের লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, খাবারের কাউন্টারগুলির সামনে এমনিতেই ভিড় ছিল। সেখানেই অনেকের সঙ্গেই কথা কাটাকাটি হচ্ছিল পরিবেশনকারী এবং তদারককারী কর্মীদের। এর পরেই দু’রকমের খাবার দেওয়ার কথা রটে যায়। খাবারের কাউন্টারে শুরু হয় হামলা। উল্টে দেওয়া হয় কাউন্টারগুলি। ক্যাটারারের বাসনপত্র তুলে নিয়ে নিয়ে চলে যেতে শুরু করেন তাঁরা। খাবারের প্লেট ভেঙে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন আরজেডির পটনার নেতারা। লাঠিপেটা করে ভিড়কে হটানো হয়। এর আগে তেজপ্রতাপের বিয়ের মঞ্চের সিঁড়ি ভেঙেও কয়েক জন অল্পবিস্তর চোট পান। সেখানেও ছুটোছুটি শুরু হয়েছিল। যদিও নিরাপত্তাকর্মীরা এগিয়ে এসে সকলকে উদ্ধার করেন।
বড় অঘটনটি ঘটে আজ ভোরে। বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ৩ আরজেডি নেতা-সহ ৪ জনের। পটনা থেকে গাড়িটি কিষণগঞ্জ যাচ্ছিল। ভোর ছটা নাগাদ অররিয়া-ফরবিসগঞ্জ সড়কের সিমরাহা থানার কাছে চালক কোনও ভাবে লেন পাল্টে ফেলেন। এতে উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। নিহতরা হলেন, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ইসলামুদ্দিনের ছেলে ইক্রামুল হক বাগী (৪৬), দলের কিষাণগঞ্জের জেলা সভাপতি ইন্তিখাব আলম (৪৫), দিঘালগঞ্জের ব্লক সভাপতি মহম্মদ পাপ্পু (৪৩) এবং গাড়ি চালক সাহিল ওরফে আসরুল হুসেন (৩১)। পুলিশের ধারণা, কোনও ভাবে চালকের চোখ লেগে গিয়েছিল। সেই কারণে তিনি গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। গাড়িতে চার জনই ছিলেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় প্রত্যেকের। সকলেই ছিলেন বিহারের বাহাদুরগঞ্জ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা।