সাংবাদিক বিনোদ বর্মা।- ফাইল ছবি।
প্রচুর অশ্লীল সিডি রাখা আর সেগুলি ছড়ানোর অভিযোগে যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেই প্রবীণ সাংবাদিক বিনোদ বর্মাকে তাঁর রাজনৈতিক উপদেষ্টা করলেন ছত্তীসগঢ়ের নতুন মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেস নেতা ভূপেশ বাঘেল। গত বছরের অক্টোবরে গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন বাঘেলের ঘনিষ্ঠ অনুগামী বিনোদ।
ছত্তীসগঢ়ের পান্দ্রি থানায় বিজেপি নেতা প্রকাশ বাজাজের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিনোদকে গ্রেফতার করেছিল রায়পুর পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভয় দেখিয়ে টাকা তোলার মামলা রুজু করা হয়। প্রকাশের অভিযোগ ছিল, তাঁকে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি টেলিফোনে বিরক্ত করছেন। ভয় দেখাচ্ছেন, তাঁর (প্রকাশ) সঙ্গে ছত্তীসগঢ়ের তদানীন্তন পূর্তমন্ত্রী রাজেশ মুনাতের যৌন সম্পর্কের অশ্লীল সিডি রয়েছে তাঁর কাছে আর সেগুলি তিনি প্রকাশ করে দেবেন।
মুনাত অবশ্য পরে ওই সিডি’গুলিকে ‘ভুয়ো’ আখ্যা দিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। লিখিত অভিযোগে মুনাত জানান, তাঁর মর্যাদা হানির উদ্দেশ্যেই ওই ‘ভুয়ো’ সিডি’গুলি ছড়ানো হয়েছে।
রায়পুর পুলিশ ওই সময় বিনোদের বাড়ি থেকে ৫০০টি অশ্লীল সিডি ও প্রচুর পেন ড্রাইভ উদ্ধার করেছিল।
কিন্তু দু’মাসের মধ্যে পুলিশ আদালতে চার্জশিট পেশ করতে না পারায় ওই সময় জামিন পেয়ে যান বিনোদ। পরে ছত্তীসগঢ়ের তদানীন্তন বিজেপি সরকারের সুপারিশে মামলাটি যায় সিবিআইয়ের হাতে। ছত্তীসগঢ় প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে অবশ্য বিনোদের বিরুদ্ধে ওঠা ওই অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে, অভিযোগ সঠিক হলে, রায়পুর পুলিশ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেন আদালতে চার্জশিট পেশ করতে পারল না?
আরও পড়ুন- যে কোনও কম্পিউটারে চালানো যাবে নজরদারি, নয়া নির্দেশিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের
আরও পড়ুন- প্রবল বৃষ্টিতে বিশৃঙ্খলার মধ্যেই শপথ নিলেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল
এ বছরের সেপ্টেম্বরে বিশেষ আদালতে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। তাতে বিনোদ, বাঘেল-সহ মোট ৫ জনকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৯, ৪৭১, ১২০বি এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৭এ ধারায় মামলা রয়েছে।
বাঘেল প্রাথমিক ভাবে ওই মামলায় আগাম জামিন নিতে না চাইলেও, পরে আদালতে জামিন পেয়ে যান। সিবিআইয়ের তদন্ত চলার মধ্যেই গত জুনে আর এক অভিযুক্ত রিঙ্কু খানুজা আত্মঘাতী হন।
বিনোদ ছাড়াও বৃহস্পতিবার ছত্তীসগঢ়ের নুতন মুখ্যমন্ত্রী বাঘেল তাঁর উপদেষ্টার দায়িত্ব দিয়েছেন আর যাঁদের, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন একটি হিন্দি দৈনিকের একদা সম্পাদক রুচির গর্গ। যিনি এ বার ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভা ভোটের আগে পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। রুচিরকে দেওয়া হয়েছে বাঘেলের মিডিয়া উপদেষ্টার দায়িত্ব।
বাঘেলের পরিকল্পনা, নীতি, কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন উপদেষ্টা হয়েছেন প্রদীপ শর্মা। আর রাজেশ তিওয়ারিকে দেওয়া হয়েছে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর পরিষদীয় উপদেষ্টার দায়িত্ব।