ছোটা রাজন ও জ্যোতির্ময় দে
অন্ধকার জগৎ নিয়ে বই লিখছিলেন। তাতে হয়তো তেমন অসুবিধে ছিল না। কারণ ‘খাল্লাস’, ‘জিরো ডায়াল’ তো তিনিই লিখেছিলেন। তবে নতুন বইয়ে ছোটা রাজনকে তুচ্ছ করা এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দাউদ ইব্রাহিমকে শক্তিশালী হিসেবে দেখানোটাই কাল হয় সাংবাদিক জ্যোতির্ময় দে-র। সেই জন্যই তাঁকে খুন করায় ছোটা রাজন। শুক্রবার ‘মকোকা’ (মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অব অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্ট) আদালতে জ্যোতির্ময় দে হত্যাকাণ্ডের অতিরিক্ত চার্জশিটে এমনই দাবি করল সিবিআই।
জে দে নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন মুম্বইয়ের একটি ট্যাবলয়েডের ক্রাইম রিপোর্টার জ্যোতির্ময় দে। অন্ধকার জগতের উপর তিনি যে বই লিখছিলেন, তাতে ছোটা রাজনকে ‘চিন্দি’ অর্থাৎ তুচ্ছ এবং দাউদ ইব্রাহিমকে ‘মুম্বইয়ের ডন’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছিল। সিবিআইয়ের চার্জশিট অনুযায়ী, ছোটা রাজনের কানে এই খবর যেতেই সে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠে। এবং নিজের লোকেদের জে দে-কে খুন করার নির্দেশ দেয়। এ ছাড়া এই খুনের জন্য টাকার জোগাড়ও করেছিল ৫৪ বছরের ডন।
২০১১ সালের ১১ জুন মুম্বইয়ের পওয়াইয়ে নিজের বাড়ির কাছে গুলি করে খুন করা হয় জে দে-কে। খুনের আগে বহু দিন ধরে কোঙ্কন উপকূল এলাকায় ঘুরে ঘুরে তেল পাচার চক্রের খবর জোগাড় করছিলেন এই সাংবাদিক। তাই প্রথমে সন্দেহ করা হয়েছিল তেল মাফিয়াদের। কিন্তু তদন্ত এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে উঠে আসে অন্ধকার জগতের ডন ছোটা রাজনের নাম। ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় গ্রেফতার হয়েছে ছোটা রাজন। ২০১৫ সালের নভেম্বরে তাকে দেশে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন ডনের ঠিকানা মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুম্বই পুলিশের কাছ থেকে জে দে হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ২৫ জুলাই বিশেষ আদালত সিবিআইকে ‘শেষ সুযোগ’ দিয়ে জানায়, ৫ অগস্টের মধ্যে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিতে হবে। সেই চার্জশিটে নতুন প্রমাণ জমা দিতে না পারলে রাজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হবে। সেই মতো এ দিন অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করে সিবিআই।
এ দিনের অতিরিক্ত চার্জশিটে ৪১ জন নতুন সাক্ষীর নাম ও ৪১টি নয়া নথিও পেশ করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজন এবং জে দে হত্যাকাণ্ডের অন্য অভিযুক্তদের কথোপকথনের ফরেন্সিক রিপোর্টও পেশ করেছে সিবিআই।