অযোধ্যা মামলা এ বার কোন পথে, ঠিক করতে বসছেন প্রধান বিচারপতি

কবে থেকে নতুন করে রাম মন্দির-বাবরি মসজিদের জমি বিবাদ মামলার শুনানি শুরু হবে, তা ঠিক করার সঙ্গে তাঁর নিজের বেঞ্চেই এই মামলা শোনা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্তও নিতে হবে প্রধান বিচারপতিকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৪৯
Share:

রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ মামলা কোন পথে এগোবে, সোমবার তা ঠিক করতে বসছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।

অযোধ্যায় রাম মন্দির ঘিরে আবেগকে ২০১৯-এর অন্যতম অস্ত্র করে তুলতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা। সেই রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ মামলা কোন পথে এগোবে, সোমবার তা ঠিক করতে বসছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। আর তার ঠিক আগে গেরুয়া শিবির সুপ্রিম কোর্টকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, হিন্দুদের আস্থার কথাও যেন শীর্ষ আদালত মাথায় রাখে।

Advertisement

কবে থেকে নতুন করে রাম মন্দির-বাবরি মসজিদের জমি বিবাদ মামলার শুনানি শুরু হবে, তা ঠিক করার সঙ্গে তাঁর নিজের বেঞ্চেই এই মামলা শোনা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্তও নিতে হবে প্রধান বিচারপতিকে। বিজেপি নেতারা এখন যে বিষয়টি দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন, তা হল, অযোধ্যার মামলার কি রোজ শুনানি হবে? কারণ তাঁদের হিসেবে, একমাত্র রোজ শুনানি হলেই লোকসভা ভোটের আগে তা শেষ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোর্ট যে সিদ্ধান্তই নিক, বিজেপি প্রয়োজন মতো প্রচারের কৌশল নিতে পারবে।

এই কারণেই সোমবার মামলা ওঠার আগে অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথরা শীর্ষ আদালতকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আইনের কচকচির সঙ্গে কোর্ট যেন মানুষের আস্থা, আবেগের কথাও মাথায় রাখে। যা দেখে কংগ্রেস নেতারা বলছেন, প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের আমলে বিচার বিভাগকে লাগাম পরানো যাবে না বুঝে চাপের কৌশল নিচ্ছে বিজেপি। অমিত শনিবারই কেরলে বলেছিলেন, ‘‘আদালতের এমন নির্দেশই দেওয়া উচিত, যা পালন করা সম্ভব। এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া উচিত নয়, যাতে মানুষের আস্থায় আঘাত লাগে।’’ ‘দক্ষিণের রাম মন্দির’ হয়ে ওঠা শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশের অনুমতির সমালোচনা করে অমিত এই মন্তব্য করলেও, তাঁর কথায় অযোধ্যা নিয়েও বার্তা স্পষ্ট।

Advertisement

আরও পড়ুন: এ বার গোমাতাদের কানে ট্যাগ পরাচ্ছে মোদী সরকার

অমিতরা যে রাম মন্দির নিয়ে দ্রুত রায় চাইছেন, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তা স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন, ‘‘যদি সুপ্রিম কোর্ট শবরীমালা নিয়ে রায় দিতে পারে, তা হলে আমাদের আর্জি, রাম মন্দির নিয়েও দ্রুত রায় ঘোষণা হোক।’’ এর সঙ্গেই যোগীর দাবি, ‘‘রাম জন্মভূমি আস্থা, ধর্মীয় ভাবাবেগের বিষয়। রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক নেই।’’ উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আদালত মন্দির নির্মাণের বিরুদ্ধে রায় দিলেও তাকে অস্ত্র করেই লোকসভা ভোটে যাবে বিজেপি। সংসদে আইন পাশ করিয়ে রাম মন্দির তৈরির জন্য লোকসভায় আরও বেশি সাংসদ এবং রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে বিজেপিকে জিতিয়ে আনার আর্জি জানানো হবে। মৌর্য বলেন, ‘‘রাম লালার জন্মভূমিতে তাঁর ভক্তরা বাবরের নামের কিছু মেনে নেবেন না। আদালতের মাধ্যমে মন্দির তৈরি সম্ভব না হলে সংসদে আইনের পথ খোলা থাকছে।’’ কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট সোমবার শুনানির রূপরেখা ঠিক করতে চলেছে। তা না বুঝেই আদিত্যনাথরা এই মামলায় রাজনীতির রং লাগাচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: অমিত শাহের পথে না গিয়ে রাজ্যে রাজ্যে ‘জনসম্পর্ক’ কংগ্রেসের

মন্দির ভাবাবেগ উস্কে দিতে দীপাবলিতে ঘটা করে সরযূ নদীর তীরে ‘দীপোৎসব’-এর আয়োজন করছে যোগী সরকার। সেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টও হাজির থাকবেন বলে যোগী জানিয়েছেন। ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি প্রয়াগরাজে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে সাধু-সন্তদের ধর্ম সংসদ বসছে। অমিতও সেখানে যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন