Advertisement
E-Paper

অমিত শাহের পথে না গিয়ে রাজ্যে রাজ্যে ‘জনসম্পর্ক’ কংগ্রেসের

রাজস্থান, গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যে গত কয়েক সপ্তাহে এই অভিযান শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:০০
রাজ্যে কংগ্রেসের জন্য তাঁর দাওয়াই তাই ‘জনসম্পর্ক অভিযান’।

রাজ্যে কংগ্রেসের জন্য তাঁর দাওয়াই তাই ‘জনসম্পর্ক অভিযান’।

লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের সঙ্গে টক্কর দিতে রাস্তায় নেমেছেন রাহুল গাঁধী। গোটা দেশে দলকেও রাস্তায় নামাতে চান তিনি। রাজ্যে কংগ্রেসের জন্য তাঁর দাওয়াই তাই ‘জনসম্পর্ক অভিযান’। নামে বিজেপির কর্মসূচির সঙ্গে হুবহু মিল থাকলেও কাজের ধরনে শাহদের থেকে ফারাক রাখছে রাহুলের দল।

প্রদেশ কংগ্রেসের কাছে এআইসিসি-র তরফে নির্দেশিকা এসেছে, ‘জনসম্পর্ক অভিযান’ রাজ্য থেকে শুরু করে ব্লক হয়ে একেবারে বুথ স্তর পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। লোকসভা ভোটের আগে মাসছয়েক ধরে এই কর্মসূচির মাধ্যমে গত সাড়ে চার বছরে মোদীর সরকার কী ভাবে নানা ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে এবং কংগ্রেস ভবিষ্যতের জন্য কী ভাবছে— তার খতিয়ান তুলে ধরতে হবে। সেই সঙ্গেই দল চালানোর জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজও করতে হবে আম নতার কাছ থেকে। প্রতি বুথ এলাকায় কংগ্রেসের যাতে ১০ জন করে কর্মী থাকে, এই অভিযানের সাংগঠনিক লক্ষ্য সেটাই।

আরও পড়ুন
দরকারে জোর করে সভা করব, এসপি অফিস ঘেরাও করে চ্যালেঞ্জ দিলীপ ঘোষের

রাজস্থান, গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যে গত কয়েক সপ্তাহে এই অভিযান শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস। বস্তুত, রাজস্থানে সচিন পায়লটদের এর আগে করা ‘মেরা বুথ, মেরা গৌরব’ কর্মসূচির সাফল্য দেখেই এআইসিসি বুথে যাওয়ার অভিযান বাকি সব রাজ্যে ছ়ড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সূত্রেই এ বার বাংলার পালা। তবে হাইকম্যান্ডের বার্তা পাওয়ার পরে চিন্তায় পড়়েছে বিধান ভবন। কারণ, রাজ্যের অনেক জেলায় এখন কংগ্রেসের ব্লক স্তরে কমিটিই নেই! বুথ তো অনেক দূরের কথা! এই ভাঙা সংগঠন নিয়ে ‘জনসম্পর্ক’ কত দূর করা যাবে, সংশয় সেখানেই।

বিজেপি আগেই ‘জনসম্পর্ক অভিযান’ করেছে রাজ্যে রাজ্যে। সংগঠনের প্রসার ঘটানো তাদেরও উদ্দেশ্য ছিল। ওই ‘জনসম্পর্কে’র অঙ্গ হিসেবেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি শাহ এসে কখনও উত্তরবঙ্গে, কখনও কলকাতার আশেপাশে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে পাত পেড়ে খেয়েছেন। কখনও আবার রাহুল সিংহ, শমীক ভট্টাচার্যেরা দলের প্রচার-পুস্তিকা নিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, চন্দন সেনের মতো বাংলার বিশিষ্ট জনেদের বাড়িতে গিয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেসের কর্মসূচির ধরন ঠিক এই রকম নয়। সেখানে সনিয়া বা রাহুল গাঁধীর এসে কোনও পাড়ায় কারও বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা নেই। রাহুলেরা চাইছেন, এলাকার কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের সম্পর্ক থাকুক। দলীয় সূত্রের বক্তব্য, ঠিক এই কারণেই জলপাইগুড়ির নেতা পিনাকী সেনগুপ্তের সঙ্গে ফোনে কথা হওয়ার সময়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল তাঁর কাছে এলাকার পাঁচ জনের নাম জানতে চেয়েছিলেন। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘রাহুল এক দিন এসে কোনও এলাকা বা কারও বাড়িতে গেলেই তো দল শক্তিশালী হয়ে যাবে না! তার চেয়ে ওঁরা চান, স্থানীয় স্তরে কংগ্রেস সংগঠন তৈরি করুক।’’

আরও পড়ুন
রাজ্যে ৫ দিনের মধ্যে ৩ জনসভায় অমিত, রথের চোখধাঁধানো সূচনার পরিকল্পনায় বিজেপি

প্রথা ভেঙে এ বার লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহার তৈরির আগেও জনমত নিচ্ছে কংগ্রেস। এআইসিসি-র ইস্তাহার কমিটির চেয়ারম্যান পি চিদম্বরমের কলকাতায় আসার কথা ৮ নভেম্বর। ঠিক হয়েছে, তারও আগে ইস্তাহার সংক্রান্ত কাজেই ৩ নভেম্বর শহরে আসবেন ‘প্রফেশনাল কংগ্রেসে’র সর্বভারতীয় চেয়ারম্যান শশী তারুর। ইস্তাহারের কাজে লাগানোর জন্য কলকাতায় বায়ুদূষণ, পানীয় জল, জলস্তরের সমস্যা-সহ পরিবেশ সংক্রান্ত নোট তৈরি হয়েছে বাংলার কংগ্রেসে। যে সব বিষয় রাজনীতিতে আগে উপেক্ষিতই ছিল!

ইস্তাহারের খসড়া তৈরির আগে কিছু ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ শুরু করেছে প্রদেশ স্তরেও। বিভিন্ন বিষয়ে তারা তথ্য সংগ্রহ করে নোট তৈরি করছে। সর্বভারতীয় ইস্তাহার কমিটি এবং রিসার্চ শাখার সঙ্গে সে সব নিয়ে আলোচনা হবে। কোনও নির্বাচনের ইস্তাহারে জন্য এমন বিশদে প্রস্তুতি রাহুল জমানার আগে কংগ্রেসে দেখা যায়নি বলেই অনেকের মত!

Congress BJP Amit Shah অমিত শাহ রাহুল গাঁধী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy