E-Paper

পরমাণু ভান্ডারের চাবি মুনিরকে

সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে আপত্তি থাকলেও দেশের অন্দরে সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠা মুনিরের পদোন্নতিতে এক রকম বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। সেনাকে না চটিয়ে গদিতে থাকতে মরিয়া পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জ়ারদারিও এই নিয়োগে সম্মতি জানিয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৪৫
আসিম মুনির।

আসিম মুনির। — ফাইল চিত্র।

নির্বাচিত সরকারের থেকেও সেনাবাহিনীর শক্তি ফের বাড়ল পাকিস্তানে। তার থেকেও বাড়ল পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের শক্তি। পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে আসিম মুনিরকে নিয়োগ করল পাকিস্তান সরকার। এর ফলে মুনিরের হাতে দেশের পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের চাবিও তুলে দেওয়া হল। সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে আপত্তি থাকলেও দেশের অন্দরে সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠা মুনিরের পদোন্নতিতে এক রকম বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। সেনাকে না চটিয়ে গদিতে থাকতে মরিয়া পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জ়ারদারিও এই নিয়োগে সম্মতি জানিয়েছেন। এ ছাড়া এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমদ বাবর সিধুর মেয়াদও দু’বছর বাড়ানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন জ়ারদারি।

পাঁচ বছর আগে পাকিস্তান সেনার প্রধান হওয়ার পর থেকেই নিজের ক্ষমতা আরও বাড়াতে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও ভারত-বিরোধী জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে পুরোদমে মদত দিতে শুরু করেন মুনির। চলতি বছর এপ্রিলে কাশ্মীরের পহেলগামে সাধারণ পর্যটকদের উপর পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হামলার পরেই পাকিস্তানে থাকা জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান চালায় ভারতীয় সেনা। সেই অভিযানে পাক জঙ্গিদের বহু ঘাঁটি ধ্বংস এবং শতাধিক জঙ্গির মৃত্যুর পাশাপাশি পাক সেনারও বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়। কিন্তু তার পরেও পাক সেনা এবং সরকারে আরও ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন মুনির। গত ২০ মে আয়ুব খানের পরে পাকিস্তানের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করা হয়। কিন্তু তাতেও হয়নি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মুনিরের একাধিক সাক্ষাৎ এবং ট্রাম্পের প্রশংসা তাঁকে পাকিস্তানে আরও ক্ষমতাধর করে তোলে। যার জেরে গত মাসেই সংবিধান সংশোধন করে মুনিরের যে কোনও অপরাধ বা প্রশাসনিক অভিযোগের ক্ষেত্রে আজীবন আইনগত দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়। তখনই জল্পনা শুরু হয়, মুনিরকে দেশের প্রথম সিডিএফ হিসেবে নিয়োগ করা হবে। যদিও পাক প্রধানমন্ত্রীর এতে আপত্তি ছিল বলে সরকারি একটি সূত্রে জানানো হয়েছিল। তার পরেও বৃহস্পতিবার নতুন পদে মুনিরকে নিয়োগ করে সেনা ও প্রতিরক্ষা দুই বিভাগেরই শীর্ষপদে বসানো হল। তুলে দেওয়া হল দেশের পরমাণু ভান্ডারের চাবি। এর ফলে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক কর্তা হয়ে গেলেন মুনির। এমনিতেই পাকিস্তান সরকারকে বকলমে নিয়ন্ত্রণ করে সেনা। মুনিরের এই অসীম ক্ষমতাপ্রাপ্তিতে পাক সরকার আরও চাপে পড়ল।

দিন দুয়েক আগেই জেলবন্দি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাঁর বোন উজ়মা খানুমের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, মৌলবাদী মুনির ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ বাধাতে মরিয়া। এমনকি মুনিরের জন্যই আফগানিস্তানের সঙ্গেও পাকিস্তানের শত্রুতা বেড়েছে। এই অবস্থায় মুনিরের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে সতর্ক নজর রাখবে দিল্লি, কাবুল ছাড়াও একাধিক দেশ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pakistan atomic bombs

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy