প্রতীকী ছবি।
যে বয়সে খাতা-পেন ধরার কথা, সেই বয়সেই হাতে উঠছে বন্দুক-রাইফেল-গোলাগুলি। এটাই এখন ঝাড়খণ্ড-ছত্তীসগঢ়ের মতো মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যের শিশুদের বাস্তব। ভাল নেই জম্মু-কাশ্মীরও। পড়ুয়াদের চোখের সামনেই পুড়ছে স্কুল। একটি রিপোর্টে এমনটাই জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
সশস্ত্র যুদ্ধে শিশুদের ভূমিকা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সম্প্রতি একটি বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করে বলেন, সরকার ও জঙ্গিদের মধ্যে যুদ্ধে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুদের ভবিষ্যৎ। সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর কাশ্মীরে অন্তত তিরিশটি স্কুল জ্বালিয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা। বেশ কিছু জায়গায় আবার সেনাবাহিনীর প্রয়োজনে দখল করা হয়েছে স্কুল। ফলে বন্ধ রয়েছে পঠনপাঠন।
আরও পড়ুন: বিনুনি কাটার গুজবে মার কাশ্মীরে
২০১৫-র রিপোর্টে রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছিল, বিহার, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, ওডিশা এবং পশ্চিমবঙ্গ— এই ছ’টি রাজ্যে লড়াইয়ের কাজে শিশুদের ব্যবহার করছে জঙ্গিরা। ২০১৬ সালে মাত্র দু’টি রাজ্যে ওই পরিসংখ্যান সামান্য কমলেও তা উল্লেখ করার মতো নয়। ফলে এই সমস্ত রাজ্যের শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
যুদ্ধক্ষেত্রে শিশু নিয়োগ বন্ধ করতে ভারত সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা ও পরিকাঠামো গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন গুতেরেস। মহাসচিবের মতে, সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র জঙ্গিদের সংঘর্ষে কত জন সাধারণ নাগরিক হতাহত হয়েছেন তার হিসেব মিললেও ঠিক কত শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সাধারণত সেই খবর পাওয়া যায় না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রও বলছে, সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষে গত বছর মোট ২১৩ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৫-তে সংখ্যাটা ছিল ১৭১। তবে কত জন শিশু মারা গিয়েছে, তার কোনও হিসেব নেই ।
সূত্রের খবর, ছত্তীসগঢ়ে কিছু স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি যুদ্ধবিদ্যারও ক্লাস নিচ্ছে মাওবাদীরা। তবে অনেক ক্ষেত্রে পুলিশও মাওবাদী দমনে শিশুদের নানা ভাবে ব্যবহার করছে বলে জানতে পেরেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।