দলাই লামা। —ফাইল চিত্র।
চিনের অনুমোদন ছা়ড়া পঞ্চদশ দলাই লামার মনোনয়ন হবে না! বুধবার এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকার। আগামী ৬ জুলাই ৯০ বছরে পা দেবেন বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা। তার আগেই হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় বসে তিনি তাঁর উত্তরসূরি মনোনীত করতে পারেন বলে জল্পনা রয়েছে। সেই আবহেই এই হুঁশিয়ারি দিল বেজিং। ঘটনাচক্রে, চিনা বিদেশ দফতরের ওই হুঁশিয়ারির দিনেই দলাই লামা তাঁর উত্তরসূরি মনোনয়নের বার্তা দিয়েছেন। ভারতে স্বেচ্ছানির্বাসিত সর্বোচ্চ বৌদ্ধ ধর্মগুরু বলেছেন, ‘‘পরবর্তী দলাই লামার মনোননের দায়িত্ব গাহদেন ফোড্রাং ট্রাস্টের। এই প্রক্রিয়ায় বাইরের কাউকেই হস্তক্ষেপ করতে দেওয়া হবে না।’’
২০১৯ সালে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চতুর্দশ দলাই লামা তেনজ়িং গ্যাৎসো জানিয়েছিলেন, চিন বা চিন-অধিকৃত তিব্বত নয়, তাঁর উত্তরসূরি মনোনীত হবেন ভারত থেকেই। তার পরেই বৌদ্ধধর্মের সর্বোচ্চ গুরুর কুর্সি ঘিরে তৎপরতা বাড়িয়েছে একদলীয় চিনের কমিউনিস্ট শাসকবর্গ। সম্প্রতি ধর্মশালায় তিব্বতের নির্বাসিত সরকারের ডেপুটি স্পিকার ডোলমা শেরিং তেখাং বলেছিলেন, “চিন আমাদের প্রতিষ্ঠানকে কব্জা করতে চাইছে। রাজনৈতিক কারণেই এটা করছে।” দলাই লামার উত্তরসূরি মনোনয়নের দায়িত্ব যে কোনও ভাবেই তাঁরা বেজিঙের হাতে ছাড়বেন না, সে কথাও স্পষ্ট জানিয়েছিলেন শেরিং।
প্রসঙ্গত, প্রায় ছ’দশক আগে আগে চিন অধিকৃত তিব্বত থেকে গোপনে ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন চতুর্দশ দলাই লামা। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৪! চিনের লাল ফৌজের হাত থেকে বাঁচতে তিব্বতের লাসা থেকে সেনার ছদ্মবেশে সে দিন বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। দু’দিন দু’রাত পায়ে হেঁটে, ব্রহ্মপুত্র নদ পেরিয়ে, দুর্গম হিমালয়ের বাধা টপকে ভারতে পৌঁছেছিলেন ১৯৫৯ সালের ১৭ মার্চ। তাঁর সঙ্গেই চিন-অধিকৃত তিব্বত ছেড়ে পালিয়ে এসেছিলেন পরিজন ও অনুগামীরা। হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা-সহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ঠাঁই পেয়েছিলেন কয়েক হাজার তিব্বতি বৌদ্ধ।