India-China

‘সীমান্ত নির্ধারণের বিষয়টি জটিল ও সময়সাপেক্ষ, তবে আলোচনায় প্রস্তুত চিন’, বলল জিনপিং সরকার

গত ২৬ জুন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে কিংডাওতে চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জ়ুনের সঙ্গে আলোচনার বসেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫ ২৩:২৮
Share:

(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। —ফাইল চিত্র।

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের স্থায়ী সমাধানের বিষয়টি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ বলে জানালেন চিনা বিদেশমন্ত্রী মাও নিং। তবে সেই সঙ্গেই সোমবার তাঁর মন্তব্য, ‘‘সীমান্ত নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনার জন্য চিন সর্বদা প্রস্তুত।’’

Advertisement

গত ২৬ জুন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে কিংডাওতে চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জ়ুনের সঙ্গে আলোচনার বসেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তার পরে তিনি জানিয়েছিলেন, সীমান্ত সমস্যার জটিল ক্ষেত্রগুলির সমাধানের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপদ্ধতির (রোডম্যাপ) তৈরির উপর জোর দিয়েছে ভারত। তার পরেই এই প্রতিক্রিয়া জানাল চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকার।

প্রসঙ্গত, গত মার্চে বেজিঙে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-য় সংঘাতের অবসান ঘটানো এবং ‘টহলদারির সীমানা’ নির্ধারণের বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক পর্যায়ের আলোচনা হয়েছিল। ‘ওয়ার্কিং মেকানিজ়ম ফর কনসাল্টেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন’ (ডব্লিউএমসিসি)-এর সেই ৩৩তম বৈঠকে স্থির হয়েছিল, চলতি বছরের শেষে সীমান্ত সমস্যার সমাধানে যৌথ মেকানিজ়ম নিয়ে দিল্লিতে বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। তার আগে জিনপিং সরকারের এই বার্তা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এলএসি পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় এলএসি পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গালওয়ানে চিনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েক জন চিনা সেনাও নিহত হয়েছিলেন। গালওয়ান-কাণ্ডের পর থেকেই সামরিক স্তরে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়েছিল। পাশাপাশি কূটনৈতিক স্তরে ডব্লিউএমসিসি-এর বৈঠকের মাধ্যমেও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা শুরু হয়েছিল।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে চুশুল-মলডো পয়েন্টে দুই সেনার কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে এলএসির কিছু এলাকায় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। কিন্তু প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া ফিঙ্গার এরিয়া, উত্তর-পূর্বে ডেপসাং উপত্যকা, দক্ষিণ পূর্ব লাদাখের ডেমচক -সহ বিভিন্ন এলাকা নিয়ে সমস্যা মেটেনি। এই আবহে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলতে থাকে। গত অক্টোবরে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘‘পূর্ব লাদাখের এলএসিতে ‘ডিসএনগেজমেন্ট’ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।’’ এর পরে চিনা বিদেশমন্ত্রকের তরফেও ‘সমাধানসূত্র’ খুঁজে পাওয়ার বার্তা দেওয়া হয়। মার্চে বেজিংয়ের বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘উভয় পক্ষই ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সুনির্দিষ্ট এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সম্মত হয়েছে’। এর পরে ২০২০ থেকে বন্ধ থাকা কৈলাস-মানস যাত্রা চালুর ঘোষণা করেছিল বেজিং।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement