China

দলাই লামার তথ্য জোগাড় করছিলেন ১০০০ কোটির হাওয়ালা কাণ্ডে ধৃত চিনা নাগরিক?

গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, লুও স্যাংয়ের গোটা হাওয়ালা চক্রই যোগাযোগ ও কথোপকথন চালাত চিনা অ্যাপ ‘উই চ্যাট’-এর মাধ্যমে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২০ ১৬:০০
Share:

হাওয়ালা কাণ্ডে গ্রেফতার লুও স্যং। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

১০০০ কোটি টাকার হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে দিল্লিতে গ্রেফতার চিনা নাগরিক কি দলাই লামার সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করছিলেন? এক সপ্তাহ আগে গ্রেফতার হওয়ার পর তদন্তে নেমে এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না আয়কর দফতরের গোয়েন্দারা। তাঁরা জানতে পেরেছেন, দিল্লির মঞ্জু কা টিলা এলাকার অনেককেই ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল। ওই এলাকায় অধিকাংশই তিব্বতীদের বসবাস। যাঁরা টাকা নিয়েছেন, তাঁদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আয়কর কর্তারা।

Advertisement

গত মঙ্গলবার দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালান আয়কর দফতরের গোয়েন্দারা। সেই অভিযানেই গ্রেফতার হয় লুও স্যাং (ওরফে চার্লি পেং)। তার পর থেকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে একাধিক সূত্র মিলেছে। তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পেরেছেন, চিনের বিভিন্ন শেল কোম্পানি বা ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা চিনে পাঠিয়েছে লুও স্যাং। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল সে। তার পর জামিনে ছাড়া পেয়েছিল।

মঙ্গলবার গ্রেফতার হওয়ার পরে থেকে গত কয়েক দিনে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ২০১৪ সালে চিন থেকে নেপাল হয়ে বেআইনি ভাবে ভারতে প্রবেশ করে লুও স্যাং। মিজোরামের এক মহিলাকে বিয়ে করে রীতিমতো সংসার পেতে বসেছিল। গত ছ’বছরে আধার, প্যান-সহ সমস্ত জরুরি নথিপত্র এমনকি ভারতীয় ভুয়ো পাসপোর্টও বানিয়ে ফেলেছিল সে।

Advertisement

আরও পড়ুন: আগের চেয়ে ভাল আছেন প্রণব, জানালেন ছেলে অভিজিৎ

দিল্লির মঞ্জু কি টিলা এলাকায় বহু তিব্বতী বাস করেন। তাঁদের কারও কারও সঙ্গে তিব্বতী ধর্মগুরু দলাই লামা বা তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে যোগাযোগও রয়েছে। সেই সূত্রেই দলাই লামার সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতে এই এলাকার বহু মানুষকে লুও স্যাং টাকা দিয়েছে বলে অভিযোগ। কাউকে দু’লক্ষ কাউকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দারা আরও জানতে পেরেছেন, ওই টাকা ঘুষ হিসেবে দিয়েছেন লুও স্যাং-এর অফিসের কর্মীরা। টাকা হস্তান্তরের কথা কয়েক জন কর্মী স্বীকারও করেছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর। তাঁরা জানিয়েছেন, সবাইকেই আতস কাচের তলায় রাখা হয়েছে। জুতসই তথ্যপ্রমাণ পেলেই গ্রেফতার করা হবে।

আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসেও অব্যাহত তিক্ততা, চা-চক্রে মমতা যোগ না দেওয়ায় ঝাঁঝালো টুইট রাজ্যপালের

তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পেরেছেন, লুও স্যাংয়ের গোটা হাওয়ালা চক্রই যোগাযোগ ও কথোপকথন চালাত চিনা অ্যাপ ‘উই চ্যাট’-এর মাধ্যমে। চিনের বিভিন্ন সংস্থার নামে ভুয়ো চালান-সহ যাবতীয় নথিপত্রও তৈরি হয়ে যেত। ভারত থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ওই সব সংস্থাকে টাকা পাঠানো হত। সেগুলির কয়েকটির সম্পর্কে ইতিমধ্যেই তথ্য সংগ্রহও করে ফেলেছেন গোয়েন্দারা। বেশিরভাগ টাকা পাচার করা হত হংকং-এর মাধ্যমে। এই হাওয়ালার ক্ষেত্রেও কথাবার্তা চলত উই চ্যাটের মাধ্যমেই।

তদন্তকারী অফিলারদের স্ক্যানারে রয়েছে দিল্লির এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টও। তিনি এই চক্রকে চিনে টাকা পাঠাতে সাহায্য করতেন বলে অভিযোগ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তবে এখনও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। অন্য দিকে তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ভারতে ৪০টির মতো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছিল লুও স্যাং। সেই সব অ্যাকাউন্টগুলি ফ্রিজ করেছেন গোয়েন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন