দুর্ঘটনায় মৃতদের স্মরণে। অরুণাচলে জু-৭ চূড়ার পাদদেশে। —নিজস্ব চিত্র।
হেলিকপ্টার-সহ নিখোঁজ হওয়ার আট দিন পর টিরাপের জেলাশাসক কমলেশকুমার জোশী ও কপ্টারের দুই চালক— অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এম এস ব্রার এবং ক্যাপ্টেন রাজীব হোসকোটের ছিন্নভিন্ন দেহাংশ উদ্ধার করল সেনাবাহিনীর পর্বতারোহী কম্যান্ডোরা।
সেনাসূত্রে খবর, ৪ অগস্ট অরুণাচলপ্রদেশের খোনসা থেকে ওড়ার পরে ১২ কিলোমিটার দূরে সানলিয়াম গ্রামের কাছে ৬ হাজার ফুট উঁচু একটি পাহাড় চূড়ায় ধাক্কা মেরে ভেঙে পড়ে কপ্টারটি। স্থানীয়ভাবে চূড়াটির নাম জু-৭। দুর্ঘটনার দিন সেখানে ঘন মেঘ ছিল। কাল গভীর খাদে ডফিনের ধ্বংসাবশেষ দেখা গিয়েছিল। কিন্তু, ঘন অরণ্য ও খাড়া পাহাড় বেয়ে সেখানে নামা সম্ভব ছিল না। সেনাবাহিনী জানায়, গত কালই জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩ প্যারা কম্যান্ডো ও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পর্বতারোহী বাহিনীর সদস্যরা খোনসায় হাজির হয়েছিলেন। আজ কপ্টারে তাঁরা পংখং এলাকায় পাহাড়ে নামেন। কয়েক
দিন নাগাড়ে বৃষ্টির পর এ দিন আবহাওয়া ভাল থাকায় উদ্ধারকাজে সুবিধা হয়। শুরু হয় খাদে নেমে উদ্ধার কাজ। দেহগুলি বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তাতে পচনও ধরেছে। সেনাসূত্রে খবর, উদ্ধারে স্থানীয় উপজাতিরাও হাত মিলিয়েছিলেন। এমনকী, যখন সেনা ও বিমানবাহিনী নিখোঁজ হেলিকপ্টারটির খোঁজ পাচ্ছিল না, তখন স্থানীয় উপজাতি পুরোহিতরা লাপান গ্রামের মরং (পবিত্র পূজাস্থল)-এ তন্ত্রসাধনাও করেন।
রাজ্য পুলিশের ডিজি এস নিত্যানন্দম জানান, দেহাংশগুলি সড়কপথে খোনসা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে সেগুলি ডিব্রুগড় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানোর কথা। এ দিন টিরাপের জেলাশাসকের দফতরে কমলেশের স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
দেহ উদ্ধারের পরে এ দিন পাহাড়ে শোক পালন করা হয়। যে পাহাড়ে ধাক্কা মেরে কপ্টারটি ভেঙেছে, তার পাদদেশে মোমবাতি জ্বেলে গ্রামবাসীরা মৃতদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকি আগামী কাল ডিব্রুগড়ে গিয়ে তাঁদের শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। ১৯৮৩ সালের ১৫ অগস্ট জন্মগ্রহণ করেন কমলেশ। ২০১০ সালের আইএএস ছিলেন। ২০১৩ সালে টিরাপের জেলাশাসক হিসেবে যোগ দেওয়া জোশী সম্প্রতি দিল্লিতে বদলি হয়েছিলেন। দুর্ঘটনার দিন মোহনবাড়ি বিমানবন্দর থেকে তাঁর দিল্লি যাওয়ারই কথা ছিল।