পরিষেবা কেন্দ্র উদ্বোধন করে আজ বরাক উপত্যকায় জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নবীকরণের কাজ শুরু হল। ১৯৬৬ বা ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকায় পূর্বপুরুষদের নাম ছিল কিনা, তা নিশ্চিত করবে এই পরিষেবা কেন্দ্র। কারও বাবা বা ঠাকুর্দা তখনকার ভোটার ছিলেন বলে জানালে নিমেষেই কমপিউটার সেই দাবি খতিয়ে দেখবে। পূর্বপুরুষের নাম পেলেই এই কেন্দ্র থেকে হাতে হাতে ‘লিগ্যাসি সার্টিফিকেট’ প্রদান করা হবে। এই সার্টিফিকেট সংগ্রহের জন্য অন্য কোনও নথির প্রয়োজন হবে না।
কাছাড় জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক এস এন সিংহ আজ এই কেন্দ্রটির উদ্বোধন করে জানিয়েছেন, “কাছাড়ে মোট ১৬০টি কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যে কেউ সেখানে গিয়ে পূর্বসূরিদের নাম থাকা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন।” ক’দিনের মধ্যে ঘরে ঘরে আবেদন পত্রও পৌঁছে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। সেই আবেদন পত্র পূরণ করে লিগ্যাসি সার্টিফিকেট-সহ জমা দিতে হবে। সঙ্গে লাগবে ভোটারের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের প্রমাণ পত্র। তিনি আশ্বস্ত করেন, ভোটার তালিকায় নাম না থাকলেই ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। সে ক্ষেত্রে আবেদন পত্রের সঙ্গে নির্ধারিত নথির একটি জমা দিলেই হবে। তবে এই সব নথি ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগের হতে হবে।
হাইলাকান্দির সার্কল অফিসার সরফরাজ হক জানিয়েছেন, ওই জেলায় মোট ৫৭টি পরিষেবা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নবীকরণ নিয়ে অসমের বাংলাভাষীরা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। অনেকের কাছে ১২ নথির একটিও নেই। বহু পরিবার রয়েছে যারা ১৯৭১ সালের আগের কোনও নথি ঘরে রেখে দেওয়ার প্রয়োজনই মনে করেননি। অগ্নিকাণ্ড, বন্যা-সহ নানা কারণে অনেকের নথি খোয়াও গিয়েছে। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য এই নবীকরণ প্রক্রিয়াকে কটাক্ষ করে বলেন, “এ এক চরম সঙ্কটের সময়।” শিলচর মহিলা মহাবিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “এখনই সবাই মিলে উত্তরণের পথ বের করতে হবে।”