—ফাইল চিত্র।
ফের ভেস্তে গেল নাগরিকত্ব আইন সংশোধন নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠক। সমাধান সূত্রের খোঁজে আগামী মঙ্গলবার আবার ওই বৈঠক হবে দিল্লিতে। আজ বৈঠক ভেস্তে গেলেও বাংলাদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের বাদ দিয়েই ওই আইনটি কমিটির বৈঠকে পাশ করানোর জন্য সংশোধনী জমা দেন এক বিজেপি সাংসদ। আগামী বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হবে বলে কমিটি সূত্রের খবর।
অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র চুড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বাংলাভাষীদের মধ্যে বিজেপির বিরোধী হাওয়া তীব্র হচ্ছে। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের কথায়, ‘‘তার মোকাবিলায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। লক্ষ্য অসমের বাঙালি হিন্দুদের ভোট নিজেদের দিকে টানা।’’ তিনসুকিয়া হত্যাকাণ্ডের পরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিপক্ষে একজোট হয়েছে অসমের প্রায় ৭০টি সংগঠন। যৌথ সংগঠন মঞ্চের বক্তব্য, বাংলাভাষীদের ভোটে লোকসভার আসন জেতার অঙ্কেই নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী আনতে চাইছে বিজেপি। অসম বিজেপির একটি বড় অংশও ক্ষুব্ধ। সব মিলিয়ে সংশোধনী নিয়ে তুমুল বিড়ম্বনায় বিজেপি। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের এক কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘‘নোট বাতিল, জিএসটি চালু করে অর্থনীতির বিপর্যয় ডেকে এনেছিল মোদী সরকার। এ বার নাগরিক পঞ্জি বিল ও নাগরিকত্ব সংশোধনী নিয়ে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে তারা।’’
মূলত বাংলাদেশি হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিতর্ক থেকে বাঁচতে সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ৭টি রাজ্যের ১৬টি জেলায় পড়শি দেশ থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ শিখদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু করেছে সরকার। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই বিজ্ঞপ্তিতে পশ্চিমবঙ্গ, অসম বা ত্রিপুরার মতো বাংলাদেশ লাগোয়া কোনও রাজ্যের উল্লেখ নেই। বিজেপির পরিকল্পনা হল, শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগেই যেন কমিটি এতে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়।
স্বাভাবিক ভাবেই এ ভাবে তাড়াহুড়ো করার বিপক্ষে বিরোধী দলগুলির বাঙালি সাংসদেরা। এক সাংসদের মতে, বিলটির সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একাধিক রাজ্যের মানুষের ভাগ্য কী ভাবে জড়িত, তা নিয়ে ধারণাই নেই বহু সাংসদের। অসম কী ভাবে উত্তপ্ত হচ্ছে, কী ভাবে যুবকেরা আলফায় নাম লেখাচ্ছেন, তা নিয়ে আগামী বৈঠকে আলোচনা চান দল নির্বিশেষে এই কমিটির পশ্চিমবঙ্গ-অসমের অ-বিজেপি সাংসদেরা।