রস্টার তৈরির দায়িত্বে প্রধান বিচারপতি, রায় সুপ্রিম কোর্টের

এর আগে দু’বার প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চই রায় দিয়েছিল, প্রধান বিচারপতিই ‘মাস্টার অব রস্টার’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৮ ০৩:৪৭
Share:

কে কোন মামলা শুনবেন, তা ঠিক করার ক্ষমতা একমাত্র প্রধান বিচারপতির। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিল, প্রধান বিচারপতিই ‘মাস্টার অব রস্টার’। গত আট মাসে এই নিয়ে তৃতীয় বার।

Advertisement

প্রবীণ বিচারপতিদের এড়িয়ে প্রধান বিচারপতি স্পর্শকাতর মামলা নিজের পছন্দসই বিচারপতিদের বেঞ্চে পাঠাচ্ছেন— এই অভিযোগ তুলে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে চার প্রবীণ বিচারপতি কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। সেই সূত্র করেই প্রবীণ আইনজীবী শান্তি ভূষণ সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে প্রশ্ন তোলেন, প্রধান বিচারপতিই কি ‘মাস্টার অব রস্টার’? তাঁর হাতেই কি এই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা থাকা উচিত? না কি সেই ক্ষমতা পাঁচ প্রবীণ বিচারপতির কলেজিয়ামের হাতে থাকা উচিত?

এর আগে দু’বার প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চই রায় দিয়েছিল, প্রধান বিচারপতিই ‘মাস্টার অব রস্টার’। আজ শান্তি ভূষণের আর্জি খারিজ করে বিচারপতি এ কে সিক্রি ও বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চও রায় দিয়েছে, কার বেঞ্চে কোন মামলা যাবে, সেটা ঠিক করার ক্ষমতা প্রধান বিচারপতির হাতে থাকাই উচিত। পৃথক কিন্তু একই সুরের রায়ে দুই বিচারপতির মত— কলেজিয়ামের হাতে ক্ষমতা গেলে সুপ্রিম কোর্টের প্রাত্যহিক কাজে সমস্যা হবে। হাইকোর্টের ক্ষেত্রেও সে কথা প্রযোজ্য। প্রবীণ বিচারপতিদের তোলা প্রশ্ন কার্যত খারিজ করে দিয়ে বিচারপতিদের রায়— সাংবিধানিক বেঞ্চে শুধু প্রবীণ বিচারপতিরাই বসবেন, এটা ঠিক নয়। অন্য বিচারপতিদের ক্ষমতা, দক্ষতা, আগ্রহ অনুযায়ী মামলা বণ্টন করেন প্রধান বিচারপতি। বিষয়টি তাঁর প্রজ্ঞার উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্ট তাঁর ক্ষমতায় ফের সিলমোহর বসালেও, প্রধান বিচারপতি হিসেবে দীপক মিশ্রর ভূমিকা নিয়ে আজ বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন প্রবীণ আইনজ্ঞ ফালি নরিম্যান। সুপ্রিম কোর্টে ‘ঐক্যের অভাব’-এর দিকে প্রশ্ন তুলে নরিম্যানের যুক্তি, প্রধান বিচারপতির উচিত ছিল বিক্ষুব্ধ বিচারপতিদের কাছে এগিয়ে গিয়ে কথা বলা। নরিম্যান বলেন, ‘‘আমি আশা করেছিলাম, উনি দ্বিতীয় প্রবীণ বিচারপতি (জে চেলামেশ্বর)-র সঙ্গে কথা বলবেন।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘প্রধান বিচারপতি প্রাতিষ্ঠানিক গরিমা রক্ষা করতে পারেননি। প্রধান বিচারপতি যদি এক কথা বলেন, বাকি চার প্রবীণ বিচারপতি অন্য কথা বলেন— তা হলে মানুষ ভাববে কী?’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সুপ্রিম কোর্টও রায়ে বলেছে— জনগণের মনে বিচার বিভাগের প্রতি সম্মান নষ্ট হওয়াটাই প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতার প্রশ্নে সব থেকে বড় বিপদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন