National News

অনিল অম্বানীর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বদলে গেল ওয়েবসাইটে! বরখাস্ত দুই সহ-রেজিস্ট্রার

তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় দুই কোর্ট মাস্টার (যা আসলে সহকারী রেজিস্ট্রারের পদমর্যাদার সমান) মানব শর্মা এবং তপনকুমার চক্রবর্তীকে বুধবার সন্ধ্যাতেই প্রধান বিচারপতির নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:৩৬
Share:

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির রায় পাল্টে আপলোড করায় বরখাস্ত দুই সহকারী রেজিস্ট্রার।

বিচারপতি নির্দেশ দিলেন এক রকম। আর ওয়েবসাইটে আপলোডের সময় সেই নির্দেশ কার্যত হয়ে গেল উল্টো! তাও আবার দেশের শীর্ষ আদালতে!এবং হাই প্রোফাইল ব্যবসায়ী অনিল অম্বানীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলায়। নজিরবিহীন এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করেছেন সুপ্রিম কোর্টেপ্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হতেই নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে দুই সহকারী রেজিস্ট্রারকে বুধবার সন্ধ্যাতেই পত্রপাঠ বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

Advertisement

অনিল অম্বানীর বিরুদ্ধে সুইডিশ টেলি কমিউনিকেশন সংস্থা এরিকসনের দায়ের করা মামলায় বিচারপতি রোহিংটন ফলি নরিম্যানের নির্দেশ ছিল, রিলায়েন্স কমিউনিকেশন্স-এর কর্ণধারকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে হবে। গত ৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোডের সময় সেই নির্দেশ কার্যত পুরো উল্টো হয়ে যায়। তাতে লেখা হয়, অবমাননাকারী হিসেবে অভিযুক্তকে পরবর্তী শুনানিতে ‘সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার প্রয়োজন নেই’।

তাতে কার্যত হতভম্ব হয়ে যান এরিকসনের আইনজীবীরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম আইনজীবী দুশ্যন্ত দাভে বিচারপতি নরিম্যানের গোচরে আনেন।

Advertisement

পুরো বিষয়টি শুনে বিচারপতি নরিম্যান আশ্চর্য হয়ে যান। তিনি ১০ জানুয়ারির মধ্যে সঠিক নির্দেশ ফের ওয়েবসাইটে আপলোড করার নির্দেশ দেন। সংশোধিত তথা সঠিক নির্দেশই তখন আপলোড করা হয় এবং তাতে দেখা যায়, অবমাননায় অভিযুক্তকে সশরীরে হাজির থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: ডুবছে পিএফ-পেনশনের ২০ হাজার কোটি, অবসরের পাওনা অনিশ্চিত ১৪ লক্ষ কর্মীর

আরও পড়ুন: রাফাল নিয়ে সিএজি রিপোর্ট মোদীকে ঢাল দিলেও তরোয়াল দিল বিপক্ষকে

একই সঙ্গে আদালতের তথ্য তথা বিচারপতির রায় ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে বিকৃত করা’র অভিযোগে তদন্তের পক্ষে সওয়াল করেন বিচারপতি নরিম্যান। প্রধান বিচারপতিও বিষয়টি খুঁটিয়ে দেখে তদন্তে সায় দেন। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় দুই কোর্ট মাস্টার (যা আসলে সহকারী রেজিস্ট্রারের পদমর্যাদার সমান) মানব শর্মা এবং তপনকুমার চক্রবর্তীকে বুধবার সন্ধ্যাতেই প্রধান বিচারপতির নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

সংবিধানের ৩১১ ধারায় এবং ১১(১৩) ধারায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ওই ধারায় ‘নজিরবিহীন’ পরিস্থিতিতে আদালাতের যে কোনও কর্মীকে যে কোনও সময় বরখাস্তের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে প্রধান বিচারপতিকে। ওই ধারায় বরখাস্তের আগে শৃঙ্খলাভঙ্গ বা অন্য কোনও প্রক্রিয়াও মানার প্রয়োজন নেই। দুই সহকারী রেজিস্ট্রারের ক্ষেত্রে সেই ক্ষমতাই প্রয়োগ করেন বিচারপতি।

আবার আদালত অবমাননার ক্ষে্ত্রে নির্দিষ্ট আইনেই বলা হয়েছে, প্রথমবার আদালতে সশরীরে হাজির হতেই হবে অভিযুক্তকে। পরবর্তী শুনানিগুলিতে তিনি হাজির না থাকার আর্জি জানাতে পারেন।

আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও রিলায়েন্স কমিউনিকেশন এরিকসনকে তাদের পাওনা ৫৫০ কোটি টাকা দিচ্ছে না বলে সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করে সুইডিশ সংস্থা। সেই মামলাতেই রায় ‘বিকৃত’ করে বা পাল্টে ওয়েবসাইটে আপলোড করেন ওই দুই সহকারী রেজিস্ট্রার। মামলার শুনানি চলছে বিচারপতি রোহিংটন ফলি নরিম্যানের এজলাশে। সংশোধিত ওই নির্দেশ অনুযায়ী গত ১২ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজিরাও দেন অনিল অম্বানী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন