রাফাল চুক্তি নিয়ে সিএজি-র রিপোর্ট ঢাল করার মতো রসদ দিল মোদী সরকারকে। তবে অনেক প্রশ্নও তুলে দিল। যা আজ থেকেই হয়ে উঠল রাহুল গাঁধীর অস্ত্র।
রাফালের দাম এতদিন প্রকাশ করেনি মোদী সরকার। যুক্তি ছিল, দাম জানাজানি হলে বিমানে কী কী যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে, তা-ও জানাজানি হয়ে যাবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সেই অনুরোধ মেনে কেন্দ্রীয় সরকারের হিসেব পরীক্ষক সংস্থা সিএজি রাফালের দাম প্রকাশ করেনি। রাফাল চুক্তির অঙ্গ হিসেবে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে যে বরাত পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ, তা নিয়েও সিএজি রিপোর্ট চূড়ান্ত হয়নি। তা সত্ত্বেও রিপোর্টটি কংগ্রেস তথা বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সিএজি বলেছে, ইউপিএ-র প্রস্তাবিত চুক্তির সঙ্গে তুলনা করলে মোদী সরকার ২.৮৬ শতাংশ সস্তায় রাফাল কিনেছে। কিন্তু সিএজি মনে করিয়ে দিয়েছে, সেই চুক্তিতে ফরাসি সংস্থা ‘দাসো এভিয়েশন’ প্রযুক্তির হাতবদলে রাজি হয়েছিল। যা মোদী সরকারের চুক্তিতে নেই। এই চুক্তিতে যে আগের মতো ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি নেই এবং তাতে ফরাসি সংস্থার লাভ হয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছে সিএজি। রিপোর্টে এ-ও বলা হয়েছে যে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হিসেবের ভুলেই ‘সর্বনিম্ন দরপ্রদানকারী’ হয়ে রাফালের বরাত পায় দাসো।
সিএজি রিপোর্টে জানিয়েছে, রাফালের দাম বেড়ে যাওয়ার পিছনে মূল কারণ ছিল যুদ্ধবিমানে ভারতের প্রয়োজনমতো ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম থাকবে। কিন্তু ২০০৭-এ দাসো এমন অনেক ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল, যা প্রয়োজন নেই বলে ২০১৫-য় জানিয়ে দেয় বায়ুসেনা। কারণ, এ দেশেই ডিআরডিও তা তৈরি করবে। দাসো রাজি হয়নি। ২০১৬-য় রাফাল চুক্তির আগে বায়ুসেনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে জানায়, ছয় ধরনের যুদ্ধাস্ত্র কেনার দরকার নেই। যদি ভবিষ্যতে আরও যুদ্ধবিমান কেনা হয়, তখন সেগুলি যোগ করা যেতে পারে। মন্ত্রক সেই যুক্তি খারিজ করে দেয়। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর দাবি, ‘‘এখানেই আসল দুর্নীতি লুকিয়ে রয়েছে।’’ তাঁর যুক্তি, রাফালকে ভারতের প্রয়োজন মতো যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে সাজাতে ১২৬টি বিমানের জন্য ইউপিএ সরকার ১৪০০ মিলিয়ন ইউরো দিতে রাজি হয়েছিল অর্থাৎ বিমান প্রতি ১১.১১ মিলিয়ন ইউরো। মোদী সরকার ৩৬টি যুদ্ধবিমানের জন্য একই যুদ্ধাস্ত্র কিনতে প্রায় একই অর্থ, ১৩০০ মিলিয়ন ইউরো দিচ্ছে। অর্থাৎ বিমান প্রতি ৩৬.১১ মিলিয়ন ইউরো। এছাড়া, এতদিন সরকার দাবি করছিল, ৯ শতাংশ কম দামে মূল বিমান কেনা হয়েছে। তা-ও খারিজ করে দিয়েছে সিএজি। তা উল্লেখ করে রাহুল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী, অরুণ জেটলি, নির্মলা সীতারমণ কখনও ৯ শতাংশ, কখনও ২০ শতাংশ সস্তায় রাফাল কেনা হয়েছে বলেছিলেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy