ত্রিপুরায় বন্ধ। বৃহস্পতিবার রাস্তায় জ্বলছে টায়ার। ছবি: পিটিআই।
ত্রিপুরায় বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ ডেকেছে ত্রিপুরা সিভিল সোসাইটি। আগরতলার এই সংগঠনের মাথায় রয়েছেন তিপ্রা মথা বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা। সেই বন্ধের আগের দিন, বুধবার বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ত্রিপুরার খুমুলিঙে। তাঁদের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছে।
এই নিয়ে সরব হয়েছেন ত্রিপুরা মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। তিনি জানিয়েছেন, ত্রিপুরার মানুষ এ সব মেনে নেবেন না। বন্ধের বিরোধিতাও করেছে বিজেপি। তিপ্রা মথার তরফে নাম না-করে পাল্টা আঙুল তোলা হয়েছে বিজেপির দিকে। জানানো হয়েছে, একটি দলের তথ্যপ্রযুক্তি সেল ভুল ভাবে বিষয়টিকে দেখানোর চেষ্টা করছে।
আট দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় বন্ধ ডেকেছে ত্রিপুরা সিভিল সোসাইটি। তিপরাসা চুক্তি, অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিতকরণ-সহ বিভিন্ন দাবি রয়েছে তাদের। এই বনধের আগের দিন বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ত্রিপুরা বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বিজেপি কর্মীদের ছ’টি গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। এই নিয়ে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ত্রিপুরার মানুষ এ সব মেনে নেবেন না।
মুখ্যমন্ত্রী মানিক জানান, রাজনৈতিক নেতাদের ভয় পাওয়ার এই ‘সংস্কৃতি’ বন্ধ করতে হবে। রাজনীতি করার অধিকার সকলের রয়েছে। কিন্তু ক্ষমতা দেখানো উচিত নয়। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। বিজেপি মানুষের জন্য কাজ করে।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, তাঁর দল বন্ধের বিরোধী। পরে তিনি নিজের এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, বিজেপি কর্মীরা কাউকে ভয় পায় না। পাশাপাশি, জনজাতির উন্নয়নের জন্য ত্রিপুরা সরকার গত কয়েক বছরে অনেক কাজ করেছে বলেও তাঁর দাবি। মানিক্য রাজপরিবারকেও যথেষ্ট সম্মান দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিপ্রা মথা দলের প্রধান তথা মানিক্য রাজপরিবারের উত্তরসূরি প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মার অভিযোগ, বুধবার তাকারজালায় যা ঘটেছে, তা ভুল ভাবে পরিবেশন করা হচ্ছে। নাম না-করে বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি। নিজের দলের ‘ডিজিট্যাল যোদ্ধা’-দের এই নিয়ে সক্রিয় হতে বলেছেন।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরেই ত্রিপুরায় বিজেপি এবং তিপ্রা মথা কর্মীরা সংঘাতে জড়িয়েছে বার বার। অগস্টে খোয়াই জেলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’ শোনার সময়ে বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল।
বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার করলেও তিপ্রা মথা ত্রিপুরার সরকারে যোগ দেয়। যদিও তার পরে ক্রমেই দুই শরিক দলের সম্পর্কের অবনতি হয়। জুলাই মাসে তিপ্রা মথা বিধায়ক রঞ্জিত জানান, তিনি সরকার থেকে সমর্থন তুলে নিতে চান। জনজাতির মানুষদের জন্য কিছু করা হচ্ছে না। পরে প্রদ্যোতের হস্তক্ষেপে তা হয়নি। তবে রঞ্জিত সব সময় নিজের অসন্তোষ ব্যক্ত করেন প্রকাশ্যেই।