মন বুঝতে বাড়ি বাড়ি যাবেন কেরলের মন্ত্রীরা

কেরলে এ বার ২০টির মধ্যে মাত্র একটি আসনে জিতেছে সিপিএম। বাকি ১৯টিই পেয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯ ০২:০৮
Share:

লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পরে বাংলায় জনসংযোগ যাত্রায় নেমেছে তৃণমূল। দলের সব বিধায়ককে নিজেদের এলাকায় জনসংযোগ কর্মসূচিতে সামিল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপর্যয়ের জেরে আরও এক ধাপ এগিয়ে কেরলের শাসক সিপিএম জনসংযোগের লক্ষ্যে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী-সহ রাজ্যের মন্ত্রী ও বিধায়কদের বাড়ি বাড়ি পাঠাচ্ছে।

Advertisement

কেরলে এ বার ২০টির মধ্যে মাত্র একটি আসনে জিতেছে সিপিএম। বাকি ১৯টিই পেয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ। বিজেপির আতঙ্কে সংখ্যালঘু ভোটের মেরুকরণ হয়েছে কংগ্রেসের পক্ষে, এমনই কারণ উঠে এসেছে বামেদের পর্যালোচনায়। কিন্তু বিজেপিকে রুখতে রাজ্যের মানুষ কেন শাসক সিপিএমের দিকে না গিয়ে কংগ্রেসকে বেছে নিলেন, ভোটের প্রচারের সময়ে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে কোনও খামতি ছিল কি না— এই সব প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজছেন পিনারাই বিজয়ন, কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনেরা। সেই জন্যই কেরল সিপিএমের সিদ্ধান্ত, আগামী ২২ থেকে ২৮ জুলাই রাজ্য জুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের মন বোঝার চেষ্টায় নামবেন রাজ্য কমিটির সদস্যেরা। মুখ্যমন্ত্রী থেকে সাধারণ বিধায়ক, সকলকেই সামিল হতে হবে ওই অভিযানে।

দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং কেরলের প্রাক্তন সাংসদ এ বিজয়রাঘবনের কথায়, ‘‘মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোথাও যে বিচ্ছিন্নতা দেখা দিয়েছে, লোকসভা ভোটের ফলে তা স্পষ্ট। আমরা যা বলতে চেয়েছিলাম, হয় তা মানুষের কাছে ঠিক ভাবে পৌঁছয়নি নয়তো তাঁরা সেই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত হননি। মানুষ কী বলতে চান, আমাদের কাছে তাঁরা কী প্রত্যাশা করেন, সে সবই বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের কাছে বুঝতে চাই আমরা।’’ এক সপ্তাহের কর্মসূচিতে সব বাড়িতে পৌঁছনো অবশ্য সম্ভব নয়। রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত, এর পরে এলাকা ধরে ধরে কিছু পরিবারকে নিয়ে মুখোমুখি বৈঠকে বসবেন সিপিএমের নেতা-কর্মীরা।

Advertisement

চার বছর আগে কলকাতায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় প্লেনামে সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটাতে যে সব সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে, এখন সেই বিষয়ে পর্যালোচনা করে রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মত, হোয়াটসঅ্যাপ-সহ নানা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে সঙ্ঘ-বিজেপি যে ভাবে মানুষের মগজে পৌঁছে যাচ্ছে, তার মোকাবিলায় আগের চেয়ে ঢের বেশি পরিশ্রম দরকার। টাকা-পয়সা এবং সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহারের বহরে তারা বিজেপির সঙ্গে এঁটে উঠতে পারবে না বুঝেই সিপিএম ‘ব্যক্তিগত ভাবে’ সংযোগের উপরে জোর দিতে চাইছে। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলছেন, ‘‘লোকসভা ভোটের ফলাফল দেখার পরে পুরনো সেই আপ্তবাক্য আমাদের মাথায় রাখতে হবে— ফিরে যেতে হবে মানুষের কাছেই। তাঁরাই পথ দেখাবেন। কেরলে বাড়ি বাড়ি নেতা-মন্ত্রীদের যাওয়ার পরিকল্পনা সেই চেষ্টারই অংশ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন