শপথের মঞ্চে শক্তি দেখাল বিজেপি 

মঙ্গলবার গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিজয় রূপাণীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন হিন্দু ধর্মগুরুর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিজেপির দখলে থাকা ১৮ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। শরিক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন বিহারের নীতীশ কুমার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৬
Share:

ছবি: পিটিআই।

কষ্টার্জিত জয়। নির্বাচনী সেই ব্যর্থতা মুছে দিতে গুজরাতে দলের ষষ্ঠ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে ‘মেগা শো’-এ পরিণত করলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা।

Advertisement

মঙ্গলবার গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিজয় রূপাণীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন হিন্দু ধর্মগুরুর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিজেপির দখলে থাকা ১৮ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। শরিক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন বিহারের নীতীশ কুমার। সংসদ ছুটি। তাই পৌঁছে যান রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকড়ী, রবিশঙ্কর প্রসাদের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও। এমনকী দলে প্রায় ব্রাত্য হয়ে যাওয়া লালকৃষ্ণ আডবাণীকেও ডাকা হয়েছিল এই অনুষ্ঠানে।

আগামী বছর আট রাজ্যে নির্বাচন। গুজরাত যে তাদের গুরুতর সতর্কবার্তা দিয়েছে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন মোদী-শাহেরা। এ যাত্রায় ভোট বৈতরণী পার হলেও আগামী বছর মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান বা ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজ্যে ক্ষমতা ধরা রাখা বা কর্নাটকে ক্ষমতা দখল যে সহজ হবে না, সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। রক্তের স্বাদ পেয়ে পাল্টা আঘাত হানতে মরিয়া কংগ্রেসও। তা বুঝেই আজ এক মঞ্চে সব নেতাকে হাজির করিয়ে কার্যত দলের ঐক্যের ছবি তুলে ধরারই চেষ্টা করল বিজেপি। দলের এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘গুজরাতের ফলাফলে দলে যে প্রভাব পড়েনি, তা বোঝাতেই এই শক্তি প্রদর্শন।’’

Advertisement

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ভালয় ভালয় মিটলেও দু’টি বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই। প্রথমত, শপথে এসেও কেন অনুষ্ঠানের শুরুতেই রূপাণীকে ফুল দিয়ে ফিরে গেলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান? দ্বিতীয়ত-অনুষ্ঠান শুরুর কিছু আগে টিভিতে দেখা যায়, আডবাণী উত্তেজিত ভাবে কিছু বলছেন প্রধানমন্ত্রীকে। বিষয়টি কী, তা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে দলেও।

ভোটের ফলই বুঝিয়ে দিয়েছে গুজরাতের গ্রামাঞ্চলে বিজেপি বিপুল ভাবে হেরেছে। পাতিদার ভোটও অনেকটাই বিপক্ষে গেছে। লোকসভা নির্বাচনের কথা ভেবে কোনও পাতিদার বিধায়ককে মুখ্যমন্ত্রী করার পক্ষে সওয়াল করেছিল দলের একাংশ। নেতৃত্ব বদলালে দলের দুর্বলতার ছবি প্রকট হয়ে ওঠার আশঙ্কায় রূপাণীতেই ভরসা রাখেন মোদী-শাহ। উপমুখ্যমন্ত্রী করা হয় পাতিদার নেতা নিতিন পটেলকে। নিতিন ছাড়া আরও পাঁচ পাতিদার স্থান পেয়েছেন রূপাণী মন্ত্রিসভায়। লক্ষ্য পাতিদারদের ক্ষোভ কমিয়ে তাদের ভোট বিজেপির বাক্সে ফেরানো। এ দিন সব মিলিয়ে রূপাণী ছাড়াও ৯ জন পূর্ণমন্ত্রী ও ১০ জন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। মন্ত্রিসভার একমাত্র মহিলা প্রতিমন্ত্রী হলেন সৌরাষ্ট্রের বিভাবরী দাভে।

বিজেপি জানিয়েছে, চলতি মন্ত্রিসভায় সব শ্রেণির প্রতিনিধিদের জায়গা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। দল যে রাজ্যের সব শ্রেণির মানুষের উন্নয়নে তৎপর, তা বোঝাতে ওবিসি সম্প্রদায়ের ছ’জনকেও মন্ত্রী করা হয়েছে। এছাড়া ২ জন রাজপুত, ৩ জন আদিবাসী, এক জন করে দলিত ও ব্রাহ্মণ এবং মুখ্যমন্ত্রী নিজে জৈন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। এ দিনই অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেম্যোক্রেটিক রির্ফম (এডিআর) জানিয়েছে, মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া ৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে। মন্ত্রিসভার ১৮ জন অর্থাৎ মোট মন্ত্রীদের ৯০ শতাংশই কোটিপতি। সবথেকে ধনী হলেন বোটাড এলাকার বিধায়ক সৌরভ যশোবন্তভাই দালাল পটেল। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১২৪ কোটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন