জম্মুতে বৃহস্পতিবার রাতে পর পর বিস্ফোরণ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
প্রত্যাঘাত শুরু করল পাকিস্তান? বৃহস্পতিবার রাতে পর পর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে জম্মুতে। আখনুর, সাম্বার মতো জায়গায় সাইরেন বাজছে। পাকিস্তানের দিকে আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপার থেকে একাধিক রকেট উড়ে আসতে দেখা গিয়েছে। সম্পূর্ণ ‘ব্ল্যাকআউট’ করে দেওয়া হয়েছে এলাকায়। অর্থাৎ, গোটা এলাকার আলো বন্ধ। সূত্রের খবর, ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাক হামলা প্রতিহত করতে সক্রিয় হয়েছে। জম্মুর পাশাপাশি পঞ্জাব, রাজস্থানের বিভিন্ন এলাকাতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে।
নিরাপত্তা সংস্থা সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তানের মোট আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ভারত ধ্বংস করেছে। পাক হামলার নিশানায় ছিল মূলত জম্মু বিমানবন্দর, সাম্বা, আরএস পুরা, আরিনা এবং সংলগ্ন এলাকা। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ দিয়ে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি আটকানো হয়েছে বলে খবর। জম্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেও দু’টি পাকিস্তানি ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, রাজস্থানের জয়সলমেরে পাকিস্তানি ড্রোন ধ্বংস করেছে ভারত। বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। আকাশেও আগুনের ফুলকি দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ, জয়সলমেরেও হামলার চেষ্টা করেছে পাকিস্তান, যা ভারত আটকে দিয়েছে বলে দাবি।
সমগ্র জম্মু শহরে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জম্মু বিমানবন্দর, পঠানকোটের বায়ুসেনার ঘাঁটিতে সাইরেন বাজছে। সাইরেনের শব্দ শোনা গিয়েছে বারামুলা, কুপওয়ারার মতো এলাকাতেও। এ ছাড়া শহরের নানা প্রান্ত থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে।
শুধু জম্মু নয়, সীমান্ত সংলগ্ন পঞ্জাবের বিভিন্ন অংশেও ‘ব্ল্যাকআউট’ করা হয়েছে। পঞ্জাবের হোশিয়ারপুরের ডেপুটি কমিশনার আশিকা জৈন জানিয়েছেন, বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শহরে ‘ব্ল্যাকআউট’ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত ‘ব্ল্যাকআউট’ চলবে। অমৃতসর. চণ্ডীগড়েও ‘ব্ল্যাকআউট’ করা হয়েছে। বেজেছে সাইরেন।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। ওই হামলার জবাবে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত করা হয়। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একাধিক জঙ্গিঘাঁটি। পাকিস্তান দাবি করেছে, পহেলগাঁও কাণ্ডে তাদের কোনও হাত নেই। ভারতের হামলাকে ‘বিনা প্ররোচনায় কাপুরুষোচিত আক্রমণ’ বলে উল্লেখ করে ইসলামাবাদ। এর যোগ্য জবাব দেওয়া হবে বলেও জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। এই পরিস্থিতিতে সীমান্ত সংঘর্ষ, গোলাগুলি চলছিলই। এ বার পাকিস্তানের দিক থেকে সরাসরি আক্রমণ শুরু করা হল বলে মনে করছেন অনেকে। ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও তৈরি আছে। পাক ড্রোনগুলিকে ধ্বংস করা হচ্ছে অত্যাধুনিক অস্ত্রের মাধ্যমে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে পাক হামলা এবং তা প্রতিহত করার কথা বলা হয়েছে। বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘জম্মু, পঠানকোট এবং উধমপুরে সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে পাকিস্তান থেকে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলা প্রতিহত করেছে ভারত। কোনও হতাহতের খবর নেই। সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত প্রস্তুত।’’