অসম বিধানসভা

তিন বছরে ডি-ভোটার সমস্যা সমাধানের দাবি কংগ্রেসের

২০২০-র মধ্যে রাজ্যে ডাউটফুল (ডি) ভোটার সমস্যা চিরতরে মিটিয়ে ফেলার দাবি জানাল কংগ্রেস। আজ বিধানসভায় প্রস্তাবটি তোলেন বিধায়ক আব্দুল খালেক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৮
Share:

২০২০-র মধ্যে রাজ্যে ডাউটফুল (ডি) ভোটার সমস্যা চিরতরে মিটিয়ে ফেলার দাবি জানাল কংগ্রেস। আজ বিধানসভায় প্রস্তাবটি তোলেন বিধায়ক আব্দুল খালেক। রাজ্য সরকার জানায়, রাজ্যের জনসংখ্যার অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে কেন্দ্রও চিন্তিত। রাজ্যে ডি-ভোটার সমস্যা সমাধানে রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর। কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ দলের অবস্থান থেকে সরে এসে বিধানসভায় জানান, ‘‘বরাকের ক্ষেত্রে নীতিগত ভাবে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়া প্রয়োজন।’’

Advertisement

পরিষদীয় মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি জানান, ১৯৯১ সালে দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২৩.৮৭ শতাংশ। তুলনায় অসমে জনসংখ্যা বাড়ে ৫৩.২৬ শতাংশ। ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধির হার ক্রমেই বেড়েছে। ২০১৫ সালের হিসেবে ১২৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৩১টি কেন্দ্রে ৪০ থেকে ৮০ শতাংশ জনসংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে। যার মধ্যে ৯০ শতাংশ কেন্দ্রই ছিল নামনি অসমে। ২০১৫ সাল থেকে ১০০টি বিদেশি শণাক্তকরণ আদালতে বিদেশি শণাক্তকরণের কাজ চলছে।

সরকারি হিসেবে, অসম পুলিশ গত বছর অক্টোবর পর্যন্ত ৬ লক্ষ ২১ হাজার ৬৮৮টি মামলার মধ্যে ৬ লক্ষ ১৪ হাজার ২০২টি মামলার তদন্ত শেষ করেছে। ৪ লক্ষ ৮৮ হাজার ১৮৯টি মামলা বিভিন্ন আদালতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ২ লক্ষ ৪২ হাজার ২৬১টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন ৭৮ হাজার ৯১৬ জন।

Advertisement

খালেক প্রশ্ন তোলেন, বাকি মানুষদের আর কতদিন বাংলাদেশি তকমা ঘাড়ে ঘুরতে হবে? বিধায়ক ওয়াজেদ আলি চৌধুরি ও কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ অভিযোগ করেন, প্রকৃত ভারতীয়দেরও পুলিশ গ্রেফতার করে ডিটেনশন শিবিরে বন্দি করছে। কমলাক্ষ বলেন, ‘‘স্বাধীনতা সংগ্রামী রেবতী দাসকে যদি বিদেশি বলে গ্রেফতার করা হয়ে থাকে, তবে বাকিদের কী অবস্থা বোঝাই যাচ্ছে! প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ডি-ভোটার সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও তা কার্যকর হয়নি। নাগরিকত্ব আইন সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা থাকবে।’’ যদিও তাঁর দল কংগ্রেস নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী নিয়ে বিজেপির বিরোধিতা করছে। কিন্তু কমলাক্ষ বরাকের ক্ষেত্রে সংশোধনীর পক্ষেই মত দেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি বরাকের ক্ষেত্রে নীতিগত ভাবে বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পক্ষে। বিজেপি যে সংশোধনী বিল এনেছে সেই বিলে প্রকৃত উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে না।’’ বাগবরের বিধায়ক শেরমান আলি ১৯২১ থেকে তথ্য উদ্ধৃত করে জানান, রাজ্যে সংখ্যালঘুদের বৃদ্ধির হার আশঙ্কাজনক। তাদের শিক্ষার বিস্তার, জন্ম নিয়ন্ত্রণ প্রসার করার আশু প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

পাটোয়ারি বলেন, ‘‘ডি-ভোটারের সংজ্ঞা ও শণাক্তকরণ আদালত ও নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। সেখানে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। আইনের পথে ডি-ভোটার সমস্যা সমাধানে যা করার রাজ্য সরকার করছে। বিদেশি শণাক্তকরণ ও বহিষ্কারের প্রক্রিয়া এত জটিল ও সময় সাপেক্ষ যে তা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে করা সম্ভব নয়।’’ তিনি মেনে নেন, এখনও অনেক বাংলাদেশি শণাক্ত হওয়া বাকি। সব বাংলাদেশি শণাক্ত না হওয়া ও বৈধ ভারতীয়দের অভিযোগ মুক্ত না করা পর্যন্ত সরকার ক্ষান্ত হবে না বলে তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন