Ram Mandir

রামমন্দির নিয়ে কোর্টে যেতে চায় না কংগ্রেস

কংগ্রেস আদালতে যেতে চাইছে না ঠিকই। তবে এটাও ঘটনা যে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় মোদী সরকার, যোগী সরকার ও সঙ্ঘ অস্বস্তিতে পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২১ ০৭:০৮
Share:

ফাইল চিত্র।

রামমন্দিরে দানের টাকা নয়ছয়। চাঁদা তুলে মানুষের টাকা লুট করছে বিজেপি— এই অভিযোগে এক সপ্তাহ ধরে সরব কংগ্রেস। বিজেপির পাল্টা দাবি, বিরোধীরা অযোধ্যায় রামমন্দির চায় না বলেই এ সব মিথ্যে কথা বলে মন্দির নির্মাণে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসতেই আলোচনায় সেই রামমন্দির। অনেকের মতে, এতে আপাতত অস্বস্তি বাড়লেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লাভের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে বিজেপির। কারণ, হোক না দুর্নীতির অভিযোগ, মন্দির প্রসঙ্গ রাজনীতির ময়দানে এলেই পুরনো আবেগ উস্কে দিতে চাইবে গেরুয়া শিবির। আর কোভিড পরিস্থিতি সামলাতে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ ঢাকা দেওয়ারও চেষ্টা চালিয়ে যাবে তারা। জাতপাতের অসন্তোষ, সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকেও দৃষ্টি সরানো সম্ভব হবে। এই ভাবনা কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টির নেতৃত্বকে সতর্ক করে তুলেছে। সে কারণেই কংগ্রেস সাংবাদিক বৈঠক করে দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণ করলেও আদালতে যাওয়ার প্রশ্নকে আজ এড়িয়ে গিয়েছে। দলের নেতাদের মতে, কোর্টে গেলে কোনও কারণে যদি নির্মাণে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত— সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করবে বিজেপি। যা রাজনৈতিক ভাবে কংগ্রেসকে চাপের মধ্যে ফেলে দিতে পারে।

কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আজ সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “অযোধ্যার মেয়র, বিজেপি নেতা হৃষিকেশ উপাধ্যায়ের ভাইপো দীপনারায়ণ উপাধ্যায় ২০ ফেব্রুয়ারি মন্দিরের আশপাশের প্রায় ৭ হাজার বর্গমিটার জমি ২০ লক্ষ টাকায় কেনেন। যা সরকারের জমির ন্যূনতম মূল্যের চেয়ে অনেকটাই কম। কয়েক মাসের মধ্যেই, ১১ মে ওই জমিই রামমন্দির ট্রাস্টকে আড়াই কোটি টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়।” বিক্রির দলিলের প্রতিলিপি দেখিয়ে সুরজেওয়ালার প্রস্তাব, সুপ্রিম কোর্ট এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিক। ৭৯ দিনে জমির দাম কী ভাবে ১২০০% বেড়ে গেল, তার জবাব দিন প্রধানমন্ত্রী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেস মুখপাত্রের অভিযোগ, “রামমন্দিরের চাঁদা বিজেপি নেতারা লুট করছে। এর তদন্ত হচ্ছে না কেন?” প্রশ্ন হল, সর্বোচ্চ আদালত তদন্তের নির্দেশ দেবে কোন অভিযোগের ভিত্তিতে? কংগ্রেস কি নির্দিষ্ট অভিযোগ জমা দিয়ে মামলা করবে ট্রাস্টের বিরুদ্ধে? এই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে সুরজেওলার মন্তব্য, ‘‘যা করার আদালতের নিজে থেকেই করা উচিত। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই ট্রাস্ট তৈরি হয়েছিল।’’

Advertisement

কংগ্রেস আদালতে যেতে চাইছে না ঠিকই। তবে এটাও ঘটনা যে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় মোদী সরকার, যোগী সরকার ও সঙ্ঘ অস্বস্তিতে পড়েছে। মোদী সরকারই অযোধ্যার ট্রাস্ট গঠন করে ১৫ জনের মধ্যে ১২ জনকে মনোনীত করেছে। ট্রাস্টে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের আমলারা রয়েছেন। ট্রাস্টের সচিব চম্পত রাই ও সরকার মনোনীত সদস্য অনিল মিশ্র— দু’জনেই আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত।

অযোধ্যা নিয়ে এই বিতর্কের মধ্যেই বিজনৌরে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছিল চম্পত রাইয়ের ভাইদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি সাংবাদিক বিনীত নারায়ণ সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ আনেন, এনআরআই অলকা লোহাটির গোশালার ২০ হাজার বর্গমিটার জমি দখল করতে ভাইদের সাহায্য করেছেন রামমন্দির ট্রাস্টের সচিব চম্পত রাই। যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ ওই সাংবাদিক-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও ধর্মীয় ভাবনায় আঘাত দেওয়ার অভিযোগ এনে এফআইআর করেছে। চম্পতের ভাই সঞ্জয় বনশলের অভিযোগে এফআইআর হয়েছে। বিজনৌর পুলিশ প্রধানের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে তারা দেখেছেন, চম্পত ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন