ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে ভরাডুবির কারণ নিয়ে এখনও আলাপ-আলোচনা চলছে। তার আগে কেরল, অসম ও পুদুচেরিতে কংগ্রেসের হারের কারণ নিয়ে সনিয়া গাঁধীর কাছে রিপোর্ট জমা পড়ল। অশোক চহ্বাণের নেতৃত্বে তৈরি কমিটি শুধু নির্বাচনী জোট, প্রচারের খামতি নিয়ে মাথা ঘামায়নি। তার সঙ্গে রাজ্যের পদাধিকারী নেতাদের দায়িত্ব, তাঁদের কাজকর্মে খামতির দিকেও রিপোর্টে আঙুল তোলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
কংগ্রেস নেতারা মনে করছিলেন, চহ্বাণ কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ার পরে, কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। তার পরে সাংগঠনিক রদবদল শুরু হয়ে যাবে। বাস্তবে পাঁচটির মধ্যে তিনটি বিধানসভা ভোটের রিপোর্ট জমা পড়তেই সংগঠনে রদবদল শুরু হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যানের পদ থেকে নাদিম জাভেদকে সরিয়ে মহম্মদ ইমরান প্রতাপগঢ়ীকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইমরান জনপ্রিয় উর্দু কবি। মোরাদাবাদ থেকে লোকসভা ভোটে লড়ে হেরে যান। বিভিন্ন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে যে সব সম্পাদকরা যুক্ত থাকেন, তাঁদের মধ্যেও রদবদল হয়েছে। ২০১৪-য় নরেন্দ্র মোদীকে টুকরো টুকরো করে কাটার কথা বলে বিতর্কে জড়ানো ইমরান মাসুদকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে।
পাঁচ বিধানসভা ভোটে একমাত্র তামিলনাড়ুতে ডিএমকে-র কাঁধে ভর করে কংগ্রেস জয়ের মুখ দেখেছে। কেরল, অসমে জয়ের আশা করলেও হার মানতে হয়েছে। পুদুচেরিতে কংগ্রেস ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। বাংলায় ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। চহ্বাণ কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, সাংগঠনিক দুর্বলতা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব, দলের ভাবমূর্তি, টিকিট বণ্টনে দেরির খেসারত দিতে হয়েছে কংগ্রেসকে। অসমে অনেক আসনে আঞ্চলিক দল কংগ্রেসের হিন্দু অসমিয়া ভোটে ভাগ বসিয়েছে।
এই হার থেকে শিক্ষা নিতে কংগ্রেস এখন আগামী বছরের পঞ্জাব ভোটের আগে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ইতি টানতে চাইছে। পঞ্জাবে জন্য তৈরি কমিটি গত কয়েক দিন ধরেই দিল্লিতে রাজ্যের নেতা, বিধায়ক, সাংসদদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। আগামিকাল ওই কমিটির সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহর সঙ্গে বৈঠক করবেন। তার আগে কমিটির সদস্য মল্লিকার্জুন খড়্গে, হরিশ রাওয়ত, জে পি আগরওয়ালরা আজ রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
রাহুলও পর্দার পিছনে থেকে পঞ্জাবে ক্যাপ্টেনের সঙ্গে বাকি নেতাদের দ্বন্দ্ব মেটাতে সক্রিয় বলে সূত্রের খবর। ক্যাপ্টেন আজ দিল্লি পৌঁছেছেন। তার আগে আম আদমি পার্টির তিন বিধায়ককে কংগ্রেসে যোগদান করিয়েছেন। গত ভোটযুদ্ধে বলেছিলেন, এটাই শেষ লড়াই। সূত্রের বক্তব্য, বিজেপি-অকালি জোটে ভাঙনের পর আপ-এ ভাঙন ধরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে আরও পাঁচ বছরের ইনিংস খেলতে তৈরি ক্যাপ্টেন।