অলোক বর্মার আইনি লড়াইয়ে তাঁর পাশে দাঁড়াল কংগ্রেস।
সিবিআইয়ের গৃহযুদ্ধে ডিরেক্টর অলোক বর্মার আইনি লড়াইয়ে তাঁর পাশে দাঁড়াল কংগ্রেস।
অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে। তাঁর যুক্তি, নরেন্দ্র মোদী সরকার যে ভাবে বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ‘পুরোপুরি বেআইনি ও স্বেচ্ছাচারিতা’। রাহুল গাঁধী আগেই অভিযোগ তুলেছেন, সিবিআই ডিরেক্টর হিসেবে বর্মা রাফাল নিয়ে তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছিলেন বলেই মোদী তাঁকে সরিয়ে দিয়েছেন।
সিবিআই প্রধান বাছাই করে যে তিন সদস্যের কমিটি, লোকসভায় প্রধান বিরোধী কংগ্রেসের দলনেতা হিসেবে খড়্গে তার অন্যতম সদস্য। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন প্রধানমন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর অধীনস্থ কর্মিবর্গ দফতর। খড়্গে সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানোয় সমীকরণ দাঁড়াল, কমিটির তিন জন সদস্যের মধ্যে প্রথম জনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় জনের কাছে মামলা দায়ের করলেন তৃতীয় জন।
সরকার অবশ্য আগেই যুক্তি দিয়েছে, বর্মাকে ডিরেক্টরের পদ থেকে সরানো হয়নি। স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার সঙ্গে তাঁর সংঘাতের ফলে দু’জনকেই ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
আস্থানার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছিল বর্মার দফতর। তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ী সানা সতীশ বাবুর কাছ থেকে আস্থানার হয়ে ঘুষ নিয়েছিলেন দুবাইয়ের ব্যবসায়ী মনোজ প্রসাদ। মনোজকে গত মাসে গ্রেফতার করে সিবিআই। আজ দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালত মনোজের জামিনেরআবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
সরকারের একটি সূত্রের খবর, এই মনোজ আসলে গোয়েন্দা সংস্থা র’-এর হয়ে দুবাইয়ে কাজ করতেন। সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেক্টর আস্থানার সঙ্গে র’-এর উচ্চপদস্থ কর্তা সমন্ত গয়ালের যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন সিবিআই অফিসার অজয় বস্সি। সরকারি সূত্রের খবর, পরিস্থিতি সামলাতে এখন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মাঠে নেমেছেন। গয়ালকে ডেকে পাঠিয়ে গোটা ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছেন ডোভাল।
এ সব যা-ই হোক, বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ কংগ্রেস। খড়্গের যুক্তি, সিবিআই ডিরেক্টরের মেয়াদ দু’বছরের জন্য নির্দিষ্ট। তার আগে তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ছুটিতে পাঠানোর জন্য ওই কমিটির ছাড়পত্র নেওয়া দরকার ছিল। সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অলোক বর্মা নিজেই মামলা করেছেন। আগামী ১২ নভেম্বর তার শুনানি। সেই মামলার শরিক হিসেবেই খড়্গে তাঁর মামলাটি দায়ের করেছেন। সরকারের যুক্তি, কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের সুপারিশ মেনেই বর্মা ও আস্থানাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু খড়্গে সুপ্রিম কোর্টে জমা করা পিটিশনে বলেছেন, সিভিসি-র এই ক্ষমতাই নেই। তাই ২৩ অক্টোবরের সিভিসি এবং কর্মিবর্গ দফতরের দু’টি নির্দেশই খারিজ করা হোক।