আহমেদ পটেল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিরোধী শিবিরের আরও তিন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে গত কাল থেকে দিল্লিতে সক্রিয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ কংগ্রেস নেতৃত্বকেও তিনি ফের স্পষ্ট করে দিলেন, বিজেপি বিরোধী ভোট এক জায়গায় আনার ক্ষেত্রে যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী, সে রাজ্যে তাকে গুরুত্ব দিতেই হবে।
দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীবালের পাশে দাঁড়িয়ে কাল থেকেই চন্দ্রবাবু নায়ডু, বিজয়ন ও কুমারস্বামীকে নিয়ে সক্রিয় মমতা। আজ সকালে নীতি আয়োগের বৈঠকে এই চার জনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে বলেন। এর পরেই সন্ধ্যায় দিল্লির ‘বাংলা ভবন’-এ মমতার সঙ্গে দেখা করতে যান কংগ্রেসের আহমেদ পটেল। গুজরাতের আম আর ফুল নিয়ে। দু’জনের প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা হয়। পরে মমতা বলেন, ‘‘ভাল কথা হয়েছে।’’ কিন্তু কী নিয়ে কথা হল, তা নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। পটেল জানান, কাল মমতা ইদের শুভেচ্ছা জানাতে ফোন করেন। তখনই তিনি দেখা করার কথা জানান।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দু’জনের আলোচনায় কেজরীবালের প্রসঙ্গও ওঠে। সেখানেই মমতা জানান, এখন কংগ্রেসকেও ছোটখাটো আবেগ ছেড়ে মোদীর বিরুদ্ধে বৃহত্তর লড়াইয়ে যেতে হবে। একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী মেনে এগোতে যে রাজ্যে যে শক্তিশালী, তাকেই প্রাধান্য দিতে হবে। দিল্লির ক্ষেত্রে ব্যক্তি কেজরীবাল বিষয় নয়, কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো না মেনে যে কাজ করছে, তার বিরোধিতায় একজোট হওয়া দরকার। পটেলও জানান, কেজরীবালকে নিয়ে দিল্লি কংগ্রেসের আপত্তি থাকলেও তাঁর সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে।
মমতা কাল কলকাতায় ফিরবেন। পটেলের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের প্রেক্ষিতে কাল সনিয়া-মমতা সাক্ষাৎ হতে পারে বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। তবে কোনও তরফেই স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলেনি। পটেলের মাধ্যমেই সনিয়া মমতাকে ও মমতা সনিয়া-রাহুলকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
আজ উদ্ধব ঠাকরে, স্ট্যালিন, হেমন্ত সোরেন, অখিলেশ যাদবরাও কেজরীকে সমর্থন করেন। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন পর্যন্ত মিছিলে যান সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁদের মত, এটি অনেক বেশি কেন্দ্র বিরোধী লড়াই।
এ নিয়ে আজ প্রধানমন্ত্রীকে অভিযোগ জানালে তিনি কিছু বলেননি বলে জানান মমতা। তবে রাজনাথ ‘দেখবেন’ বলে জানিয়েছেন। নীতি আয়োগের বৈঠকের পরে মমতাকে প্রশ্ন করা হয়, পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রীও সেখানকার উপরাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব। কংগ্রেস কেন তাতে সামিল হচ্ছে না? মমতার জবাব, ‘‘সেটা কংগ্রেসই বলতে পারে।’’ বিরোধী জোটের কী হল? মমতা বলেন, ‘‘সে তো ইতিমধ্যেই আছে।’’