সাক্ষাৎ: প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে বিরোধীরা। বুধবার রাষ্ট্রপতি ভবনে। পিটিআই
সংসদের বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে পারদ চড়াল দু’পক্ষই। বিরোধী শিবির এককাট্টা হয়ে ওবিসি বিল রাজ্যসভায় আটকে দেওয়ায় আজ তাঁদের এক হাত নেন নরেন্দ্র মোদী। তারপরেই রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়ায় গোটা বিরোধী শিবির। রাহুল গাঁধী, সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহেরা বিরোধীদের ১৩ দলকে একজোট করে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে নালিশ জানান।
আজ সকালে শাসক দলের অনগ্রসর শ্রেণির সাংসদেরা ওবিসি বিলের বিষয়ে ধন্যবাদ জানাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে মোদী ওই নেতাদের বলেন, ‘‘বিরোধীদের নেতিবাচক রাজনীতির কারণে বিলটি রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠাতে হয়েছে। পাশ করানো সম্ভব হয়নি।’’ সরকার যখন বিরোধীদের আক্রমণ শানাতে ব্যস্ত তখন চণ্ডীগড়ে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানানোয় ছাত্রদের বিরুদ্ধে যে ভাবে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে টুইট করেন রাহুল।
সেখানেই থেমে থাকেননি রাহুল। তৃণমূল-বাম-আরজেডি-জেডিইউ নেতাদের নিয়ে সটান হাজির হন রাষ্ট্রপতি সকাশে। সেখানে মোদী সরকার কী ভাবে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করছে তা নিয়ে অভিযোগ জানান রাষ্ট্রপতির কাছে। সাংবিধানিক পদে নিয়োগে গরমিল, ইভিএমে কারচুপির আশঙ্কা, অর্থ বিল করে রাজ্যসভার গুরুত্ব খাটো করা, ইতিহাস বদলের চেষ্টা করা, গো-রক্ষকদের তাণ্ডব, রাজ্যপালের পদকে অপব্যবহার, সিবিআই-ইডিকে বিরোধী নেতাদের পিছনে লাগানো, জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার মতো বিষয়গুলি রাষ্ট্রপতিকে জানায় ঐক্যবদ্ধ বিরোধী শিবির।
আরও পড়ুন:দর কষতেই সাজা, স্পষ্ট দিল্লির কাছে
উত্তরপ্রদেশে ভোটের পরে বিরোধীরা মনে করছেন যে পরের লোকসভায় মোদীকে ঠেকাতে হলে একজোট হতেই হবে। চলতি সপ্তাহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি এসে সেই ঐক্যের সুর অনেকটাই বেঁধে দিয়েছিলেন। মমতার সংসদ সফরের দিনই ১৩টি দল একজোট হয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে ইভিএম নিয়ে দরকার করতে গিয়েছিল। আজ স্থির হয়েছে সংসদের অধিবেশনের পরেও ওই ঐক্যবদ্ধ লড়াইকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
গত কাল সংসদ ভবনে সনিয়া গাঁধীর দেওয়া নৈশভোজের টেবিলেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। কংগ্রেসের এক নেতার মতে, আজ সংসদের অধিবেশন শেষের পর প্রথম যে লড়াইটি আসতে চলেছে সেটি হল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। আপাত ভাবে সংখ্যার বিচারে বিজেপি অনায়াসে তাদের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে পারবে। তা মাথায় রেখে এনডিএ-কে এক সঙ্গে ধরে রাখার প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছেন মোদী। বিজেপি সকলের গ্রহণযোগ্য কোনও মুখ তুলে ধরলে কংগ্রেস সমর্থনের কথা ভেবে দেখতে পারে। কিন্তু মোহন ভাগবতের মতো কাউকে বেছে নিলে বিরোধীরা একজোট হয়ে পাল্টা প্রার্থী দেবে।