কুলভূষণ সুধীর যাদব।
ভারতের প্রাক্তন নৌসেনা অফিসার কুলভূষণ যাদবকে চরম সাজা শুনিয়ে ভারতের সঙ্গে তিক্ততা চরমে তোলার পরে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নাসির জানজুয়া আজ মন্তব্য করলেন, ‘‘ভারত ও পাকিস্তান চিরকাল শত্রু হয়ে থাকতে পারে না। দু’পক্ষকে আলোচনা করতে হবে। বিবাদেরও নিষ্পত্তি করতে হবে।’’
নয়াদিল্লির কূটনীতিকরা মনে করছেন, পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, জানজুয়াদের এ দিনের মন্তব্যে স্পষ্ট, কুলভূষণকে এখনই ফাঁসিতে চড়ানোর পরিকল্পনা ইসলামাবাদের নেই। তারা আসলে ভারতের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে চায় কাশ্মীরকে। এবং সেখানে কুলভূষণকে দর কষাকষির অন্যতম অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগাতে চায়। এর আগে সর্বজিৎ সিংহের ক্ষেত্রেও পাকিস্তান একই কৌশল নিয়েছিল।
পাক সূত্রের খবর, কুলভূষণকে যে পাক দলটি ধরেছিল, তাদের এক জন, মহম্মদ হাবিব জাহির এখন ভারতের হাতে। মনে করা হচ্ছে, এই হাবিবকে ছাড়ানোর জন্যেও কুলভূষণকে নিয়ে দর কষাকষির চেষ্টা করবে পাকিস্তান।
মোদী সরকার গত কালই পাকিস্তানকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে, সেনা আদালতে যা-ই হোক, কোনও ভাবেই যেন কুলভূষণকে ফাঁসিতে চড়ানো না হয়। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খ্বাজা মহম্মদ আসিফ আজ জানান, কুলভূষণ এখন সেনা আদালতের আপিল কোর্টে আর্জি জানাতে পারেন। সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষাও করতে পারেন। দিল্লিতে নিযুক্ত পাক হাইকমিশনার আব্দুল বসিতও বলেন, ‘‘কুলভূষণের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের কাছে সব প্রমাণ রয়েছে। তা রাষ্ট্রপুঞ্জকেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর প্রাণভিক্ষার আবেদন করারও অধিকার রয়েছে।’’ কুলভূষণকে নিয়ে পাকিস্তান যে তাড়াহুড়ো করছে না, তা বোঝানোর পাশাপাশি ভারতের উপরে কাশ্মীর নিয়ে চাপ তৈরির দায়িত্ব নেন নওয়াজ।
আরও পড়ুন:দলাই নিয়ে আরও চড়া বেজিংয়ের সুর
বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের ধারণা, ইসলামাবাদের কর্তারা এটা জানেন, ভারত-পাক উত্তেজনা বাড়লেই আন্তর্জাতিক মহল হস্তক্ষেপ করতে চাইবে। কূলভূষণের ক্ষেত্রেও ঘটেছে ঠিক সেটাই। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসের মুখপাত্র আজ বলেন, ‘‘কুলভূষণের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করার অবস্থায় আমরা নেই। তবে আলোচনার পথে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর প্রয়োজন।’’
আলোচনার কথা উঠলেই পাকিস্তান তাতে কাশ্মীরকে জুড়ে নিতে চায়। তাই অঙ্ক কষেই নওয়াজ আজ কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে মার্কিন মধ্যস্থতার প্রসঙ্গও খুঁচিয়ে তোলেন। এ সপ্তাহেই মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার দিল্লিতে আসছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালির মতো তিনিও ভারত-পাক উত্তেজনা কমাতে মার্কিন প্রয়াসের কথা বলতে পারেন, আশায় নওয়াজরা। ভারত কিন্তু নিকির প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করেছিল গত মাসেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy