হিন্দুত্বের ঠিকাদার নয় সঙ্ঘ, কটাক্ষ কংগ্রেসের

সরকারি ভবনে আরএসএসের ‘শাখা’ বন্ধের কথা বলে পাঁচ রাজ্যে ভোটের মুখে বিতর্কের মোড় ঘুরিয়ে দিল রাহুল গাঁধীর দল। সেটা ঘটল মধ্যপ্রদেশে তাদের ইস্তাহার অঙ্গীকারপত্রে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩২
Share:

সরকারি ভবনে আরএসএসের ‘শাখা’ বন্ধের কথা বলে পাঁচ রাজ্যে ভোটের মুখে বিতর্কের মোড় ঘুরিয়ে দিল রাহুল গাঁধীর দল। সেটা ঘটল মধ্যপ্রদেশে তাদের ইস্তাহার অঙ্গীকারপত্রে।

Advertisement

আরএসএস তথা সঙ্ঘকে আগেই ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন রাহুল। গাঁধী-হত্যার পিছনেও ‘আরএসএসের লোক’ আছে বলে প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন। এ বারে ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের ইস্তাহার জানিয়ে দিল, ক্ষমতায় এলে তারা রাজ্যে সরকারি ভবনে আরএসএসের ‘শাখা’ চালানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে। সরকারি কর্মীদের ‘শাখা’য় যাওয়াও নিষিদ্ধ করা হবে। এই ইস্তাহার দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছে বিজেপি।

কংগ্রেস যেন এটাই চাইছিল। দলের এক নেতা বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধী যখন মন্দিরে যান, তখন বিজেপি নরম হিন্দুত্বের অভিযোগ করে। কিন্তু আগেই রাহুল স্পষ্ট করে দিয়েছেন, হিন্দুত্ব আর হিন্দুবাদ এক নয়। আমরা এ বার আরও স্পষ্ট করে জানালাম, আরএসএস হিন্দুত্বের একমাত্র ঠিকাদার নয়। আমরা সব পঞ্চায়েতে গোশালাও করব। নরেন্দ্র মোদী যে সর্দার পটেলের মূর্তি পুজো করছেন, তিনিই আরএসএসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। আমরা ইস্তাহারে পটেলের নামে ‘কৃষক-পুত্র স্বাবলম্বী’ প্রকল্পও ঘোষণা করেছি। চালু করা হবে বিবেকানন্দ যুব শক্তি মিশনও।’’

Advertisement

শিবভক্ত রাহুল হিন্দুত্বেও আছেন, আবার সরকারি ভবনে আরএসএসকে ‘নিষিদ্ধ’ করার কথা বলে সংখ্যালঘু ভোটও টানতে চাইছেন। সুকৌশলে পটেলের নামেও প্রকল্প ঘোষণা করছেন— এ সব দেখে ফাঁপরেই পড়েছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্রকে আজ তাই হিন্দুত্বের সুর চড়িয়ে বলতে হয়েছে, ‘‘কংগ্রেসের যেন একটাই লক্ষ্য। মন্দির বানাতে দেবে না, ‘শাখা’-ও চলতে দেবে না। দিগ্বিজয় সিংহ তো আরএসএসকেই নিষিদ্ধ করতে বলছেন।’’ মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সভাপতি রাকেশ সিংহ বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের সাহস থাকলে আরএসএসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেখাক। ক্ষমতায় আসবে না জেনেই ওরা অসম্ভব কথা বলছে।’’ বিজেপি নেতারা বলছেন, ‘শাখা’ হয় ভোর বেলায়। তা-ও কোনও সরকারি ভবনে নয়। খোলা মাঠে। কংগ্রেস আসলে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের বাজারে হাওয়া ঘোরাতে চাইছে। আর এর মোকাবিলা করতে বিজেপিকেও রাম মন্দিরের হাওয়াকে আরও জোরালো করে তুলতে হবে। তখন বোঝা যাবে, রাহুল কোন পক্ষে।

কংগ্রেস বলছে, আরএসএসকে তো নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না! শিবরাজ সিংহ সরকার ২০০৬ সালে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকারি কর্মীদের ‘শাখা’-য় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। এটি বেআইনি। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমও কংগ্রেসের এই প্রতিশ্রুতিতে দোষ দেখছেন না। তাঁর মতে, আরএসএস মুখে যতই সাংস্কৃতিক সংগঠন বলুক, আসলে তো রাজনৈতিক সংগঠন। কমল নাথও বলেছেন, ‘‘সরকারি কর্মীরা ‘শাখা’-য় লাইন দিয়ে কী করবেন? বরং নিজের দফতরে বসে মানুষের দীর্ঘ লাইনের সুরাহা করুন।’’ কংগ্রেস নেতাদের সাফ কথা, বিজেপি সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ। একের পর এক দুর্নীতি মাথাচাড়া দিচ্ছে। এই সময় রাম ছাড়া আর কোনও গতিও নেই ওদের। কিন্তু শুধু ভোটের সময়ে বারবার রাম-নাম জপে বিজেপি বৈতরিণী পেরোতে পারবে না। মানুষ ধরে ফেলেছে তাদের ধোঁকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন