National News

মেহবুবার পাশে নেই কংগ্রেস-এনসি, রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকেই জম্মু-কাশ্মীর

প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা মঙ্গলবার সেই সম্ভাবনা একেবারেই খারিজ করে দিলেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৮ ১৯:২৭
Share:

ওমর আবদুল্লা (বাঁ দিকে) ও গুলাম নবি আজাদ। -ফাইল চিত্র।

বিজেপি সঙ্গ ছেড়েছে বলে জম্মু-কাশ্মীরের পদত্যাগী মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির দল পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)-র সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে না কংগ্রেস। হাত মেলাচ্ছে না উপত্যকার বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্সও।

Advertisement

প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা মঙ্গলবার সেই সম্ভাবনা একেবারেই খারিজ করে দিলেন। ফলে, জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসনই জারি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দিল্লিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আজাদ বলেছেন, ‘‘পিডিপি-র জোট গড়ে বিরাট ভুল (হিমালয়ান ব্লান্ডার) করেছিল বিজেপি। আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আগেই সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলাম, এটা খুব ভুল হচ্ছে। দেরিতে হলেও বিজেপি সেই ভুলটা বুঝতে পেরেছে বলে আমরা খুশি। আঞ্চলিক দলগুলিকে নিজেদের নিয়েই জোট গড়তে দেওয়া উচিত।’’

Advertisement

প্রবীণ কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, বিজেপির মতো একটি সর্বভারতীয় দল পিডিপির মতো একটি আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট গড়ে সরকার চালাচ্ছিল বলে জম্মু-কাশ্মীরের পক্ষে তা সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে বিপজ্জনক হয়েছে। আর তাতে সর্বস্বান্ত হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর।

আরও পড়ুন- জঙ্গিদের জবাব দিতে ফের অভিযান কাশ্মীরে​

আরও পড়ুন- অভিযান বন্ধের মেয়াদ বাড়াতে আর্জি মেহবুবার​

রাজভবনে গিয়ে এ দিন উপত্যকার বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা জানিয়ে আসেন, বিজেপি বা পিডিপি, কাউকেই সমর্থন করে ফের সরকার গড়তে তারা রাজি নয়।

রমজানের মাসে উপত্যকা জুড়ে যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু, সেই সংঘর্ষ বিরতির সুযোগ নিয়ে উপত্যকায় একের পর এক নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। দু’টি ভিন্ন ঘটনায় খুন হয়েছেন সাংবাদিক শুজাত বুখারি এবং সেনা জওয়ান ঔরঙ্গজেব। ইদ মিটতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন। এর পরেই পিডিপি-র সঙ্গে কেন্দ্রের বিরোধ প্রকাশ্যে এসে পড়ে।

তারই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিজেপি আচমকা সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এ দিন রাজ্যপাল এন এন ভোরার কাছে পদত্যাগপত্র দেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।

জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রাম মাধব বলেছেন, ‘‘কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে ধরে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়াটার দরকার হয়ে পড়েছিল।’’

তবে বিজেপির সমর্থন প্রত্যাহারের আচমকা সিদ্ধান্ত নিয়ে কটাক্ষ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী, আম আদমি পার্টি (‘আপ’)-র নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল। এ দিন তাঁর টুইটে কেজরীবাল লিখেছেন, ‘‘কাশ্মীরের সর্বনাশ করে শেষ পর্যন্ত সরকার থেকে বেরিয়ে এল বিজেপি। অথচ এই বিজেপিই বলেছিল, নোটবন্দির ফলে কাশ্মীরে জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অর্থের জোগান বন্ধ হয়েছে।’’

প্রায় সাড়ে তিন বছরের সম্পর্ক ছিঁড়ে বেরিয়ে এল বিজেপি। যার জেরে ইস্তফা দিলেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। কারণ, বিজেপি-র সঙ্গে জোট বেঁধেই মেহবুবার দল পিপল্‌স ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) এত দিন উপত্যকায় সরকার চালাচ্ছিল।পরে মেহবুবা মুফতি সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, উপত্যকায় পেশীশক্তির জোর চলবে না।

মঙ্গলবার দুপুরে নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্তের কথা জানান বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব। তিনি বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে পিডিপি-র সঙ্গে পথচলা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সরকার থেকে সরে আসা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।’’ এর পরেই রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে আসেন। বিজেপি জম্মু কাশ্মীরে রাজ্যপালের শাসন চায়, বৈঠকে এমনটা জানিয়েছিলেন রাম মাধব।

জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় মোট ৮৭টি আসন। ২০১৪-র মে মাসে উপত্যকায় যে নির্বাচন হয়, সেখানে পিডিপি পেয়েছিল ২৮টি আসন। বিজেপি পেয়েছিল ২৫টি। এ ছাড়া ওমর আবদুল্লার দল ন্যাশনাল কনফারেন্স ১৫টি, কংগ্রেস ১২টি এবং অন্যান্যরা ৭টি আসন পেয়েছিল। বিজেপি এবং পিডিপি যৌথ ভাবে ম্যাজিক সংখ্যা ৪৪ ছাড়িয়ে ৫৩-য় পৌঁছয়। সেই জোটই এত দিন সরকার চালাচ্ছিল উপত্যকায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন