Adani-Hindenburg Row

আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে কেন নীরব মোদী? প্রশ্ন কংগ্রেসের

আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগের সঙ্গে মোদী সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা গোটা বিষয়টি থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৫০
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘নীরবতা’র পরে এ বার ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়েও প্রশ্ন উঠল।

আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও শেয়ার দরে কারচুপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘নীরবতা’র পরে এ বার ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়েও প্রশ্ন উঠল।

Advertisement

কংগ্রেস আজ প্রশ্ন তুলেছে, মোদী কালো টাকা নিকেশ করতে নোটবন্দি করেছিলেন। বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে জমা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই মোদীই যখন দেখলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানি ভুঁইফোঁড় সংস্থা তৈরি করে করফাঁকির স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত দেশগুলিতে টাকার লেনদেন করছেন, তার পরেও হাত গুটিয়ে বসেছিলেন কেন?

আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে আমেরিকান সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতে গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানির বিরুদ্ধে করফাঁকির স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত দেশগুলিতে ভুঁইফোঁড় সংস্থা খুলে শেয়ারের দর কৃত্রিম ভাবে বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ। কংগ্রেসের জনসংযোগ দফতরের ভারপ্রাপ্ত নেতা জয়রাম রমেশ আজ প্রশ্ন তুলেছেন, পাঁচ বছর আগে ‘পানামা পেপার্স’ ও ‘প্যান্ডোরা পেপার্স’ বলে পরিচিত গোপন নথি ফাঁস হয়। তখনই জানা গিয়েছিল, গৌতম আদানির দাদা বিনোদ দ্য বাহামাস ও ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের মতো করফাঁকির স্বর্গরাজ্যে সংস্থা খুলেছেন। ভুইঁফোঁড়, স্রেফ কাগজে-কলমে বিভিন্ন সংস্থা খুলে শেয়ার দরে কারচুপি করছে। অর্থ মন্ত্রক সেই সময়ে বলেছিল, প্রধানমন্ত্রী নিজে একাধিক সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ইডি, সিবিআই, রাজস্ব গোয়েন্দা দফতর বিরোধীদের বিরুদ্ধে সক্রিয়। প্রধানমন্ত্রীর বন্ধুরা বাদে অন্য শিল্পপতিদের হেনস্থা করছে। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি এ বিষয়ে কী করেছে?

Advertisement

আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগের সঙ্গে মোদী সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা গোটা বিষয়টি থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আজ ফের যুক্তি দিয়েছেন, আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দরে পতন, তার জেরে গোটা শেয়ার বাজারে ধস নিয়ে যা করার শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি করবে। অর্থমন্ত্রীর মন্তব্য, “রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক হোক বা সেবি, আমার মত হল, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির সতর্ক থাকা উচিত। তাদের যথা সময়ে পদক্ষেপ করা উচিত। যাতে শেয়ার বাজার স্থিতিশীল থাকে।” বিরোধীরা সংসদে যৌথ সংসদীয় কমিটি বা প্রধান বিচারপতির নজরদারিতে তদন্তের দাবি তুললেও সরকারের মন্ত্রীরা বলেছেন, এর সঙ্গে সরকারের লেনদেন নেই।

রমেশের পাল্টা প্রশ্ন, এটা কী ভাবে সম্ভব যে, দেশের সব থেকে বড় শিল্পগোষ্ঠী, যাদের বিমানবন্দর, বন্দরের অধিকাংশ প্রকল্পের বরাত দেওয়া হয়েছে, তারা লাগাতার অভিযোগ সত্ত্বেও সমস্ত নজরদারি এড়িয়ে গিয়েছে? যে সরকার এত দিন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ধুয়ো তুলে রাজনৈতিক ফায়দা কুড়িয়েছে, তাদের কাছে কি গৌতম আদানি এতটাই প্রয়োজনীয়? আগামী দু’দিনও এ বিষয়ে নতুন প্রশ্ন তোলা হবে বলে কংগ্রেস ঘোষণা করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন