ভোটযুদ্ধে বিরোধীদের মোকাবিলায় দলের নেতা-কর্মীদের একজোট হওয়ার আহ্বান জানালেন অসমের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। মাইক হাতে ‘কংগ্রেস জিন্দাবাদ’ স্লোগান তুলে তিনি একই সঙ্গে বোঝাতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের সঙ্গে তাঁর বিবাদ এখন শুধুই অতীত। আজ এমনই ঘটনার সাক্ষী হল করিমগঞ্জ।
কয়েক মাস আগেই গগৈকে গদিচ্যূত করতে তৎপর ছিলেন হিমন্ত। কিন্তু নয়াদিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তাঁর বিদ্রোহে ভাঁটা পড়ে। এ দিন তাঁকে দেখা গেল একেবারেই অন্য মেজাজে।
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি, এআইইউডিএফকে রুখতে অসমে দলীয় নেতাদের একজোট হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। এ দিন এআইসিসি নেতা সি পি জোশীর গাড়িতেই শহরে পৌঁছন হিমন্তবাবু। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অঞ্জন দত্ত ছিলেন অন্য গাড়িতে। ব্লক মণ্ডল কংগ্রেসের পদাধিকারীদের সঙ্গে আলোচনায় দলের সমস্ত নেতা-কর্মীদের একজোট হয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন হিমন্ত। মাইকক্রোফোন টেনে নিয়ে ‘কংগ্রেস জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেন। বরাকের বেশির ভাগ পুরসভা কংগ্রেসের দখলে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। হিমন্ত বলেন, ‘‘কংগ্রেস কর্মীরা একজোট হয়ে কাজ করলে বিরোধী শক্তি অসমে মাথাচাড়া দিতে পারবে না।’’
এ দিকে, করিমগঞ্জে কংগ্রেসের কর্মী সম্মেলনে ব্যাপক অব্যবস্থা দেখা যায়। এআইসিসি নেতা সি পি জোশীর সঙ্গে জেলায় দলের নেতা-কর্মীদের আলোচনা শুরুর আগে থেকেই সভাস্থলে বিশৃঙ্খলা ছড়ায়। সভাস্থলের সামনের দিকে অনেক কংগ্রেস সমর্থক মোবাইল ফোন নিয়ে নেতাদের ছবি তুলতে থাকায়, পিছনের দিকে থাকা দলীয় কর্মীরা নেতাদের দেখতে পাননি। প্রবেশপথে পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি সামলানো হয়। এই অব্যবস্থার জেরে দুপুরের খাবার না খেয়েই করিমগঞ্জ থেকে বেরিয়ে যান সি পি জোশী, অঞ্জনবাবু, হিমন্তবিশ্ববাবুরা।
বরাকের তিন জেলা-সহ ডিমা হাসাওয়ের মণ্ডল ও ব্লক কংগ্রেসের পদাধিকারীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন সি পি জোশী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কয়েক জন নেতা-মন্ত্রীও। শতাধিক মোটরসাইকেল মিছিল করে জোশী-সহ অন্য নেতাদের স্বাগত জানিয়ে সভাস্থলে নিয়ে আসে। জোশীর ইচ্ছা ছিল, তিনি বৈঠকে কোনও বক্তব্য রাখবেন না। মণ্ডল, ব্লক কংগ্রেসের নেতারা প্রশ্ন করবেন। তিনি শুধু তার উত্তর দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কর্মীদের দাবিতে জোশীকেও বক্তব্য রাখতে হয়। কিন্তু করিমগঞ্জের বিধায়ক কৃপানাথ মালাহ, সংসদীয় সচিব মণিলাল গোয়ালা, জামালউদ্দিন আহমেদ কিছু বলার সুযোগ পাননি।
পরে এআইসিসি নেতা জোশী মণ্ডল কংগ্রেসের সদস্য, পুরসভার সদস্যদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। কিন্তু সেখানেও বিশৃঙ্খলা হওয়ায় দুপুরের খাবার না খেয়েই করিমগঞ্জ থেকে বেরিয়ে যান জোশী।
প্রাক্তন মন্ত্রী হিমন্ত সভাস্থল থেকে বেরনোর সময় টেট পরীক্ষায় পাশ করেও চাকরি না পাওয়া কয়েক জন তাঁকে ঘিরে ধরেন। পুলিশ তাঁকে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়।