ঐক্যের মূর্তি নিয়ে থামছে না বিতর্ক

প্রশ্ন উঠছে, ঐক্যের নামে এই উচ্চতার দৌড় কেন? সাড়ে চার বছর ধরে মোদী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র স্লোগান তুললেও পটেলের মূর্তির বড় অংশ কিন্তু বানিয়ে আনতে হয়েছে চিন থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮ ০৮:১৬
Share:

গগনচুম্বী: বল্লভ-মূর্তি উদ্বোধনের আগে। এএফপি

ভোরের আলো ফুটলেই দৌড়তে হবে। ঐক্যের জন্য।

Advertisement

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তির নীচে দাঁড়িয়ে দুনিয়াকে তাক লাগাবেন নরেন্দ্র মোদী। ঐক্যের জন্য।

গতকালই প্রধানমন্ত্রী টোকিওতে বলে এসেছেন, ‘‘৩১ অক্টোবর সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মবার্ষিকীতে গোটা দুনিয়ার নজর কাড়ব। গুজরাতে তাঁর জন্মভিটেতে দুনিয়ার সবচেয়ে উঁচু মূর্তি গড়া হয়েছে। ঐক্যের মূর্তির উদ্বোধন করব আমি।’’

Advertisement

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ঐক্যের নামে এই উচ্চতার দৌড় কেন? সাড়ে চার বছর ধরে মোদী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র স্লোগান তুললেও পটেলের মূর্তির বড় অংশ কিন্তু বানিয়ে আনতে হয়েছে চিন থেকে। ক’দিন আগেও শ’তিনেক চিনা কর্মী গুজরাতে এই মূর্তির কাজ করছিলেন। কারণ রাহুল গাঁধীরা প্রশ্ন তুলছেন, সর্দার পটেলও মোদীর হাতে ‘মেড ইন চায়না’?

বিতর্ক কি শুধু এখানেই শেষ? যে পটেলকে নিয়ে মোদী ভোটের আগে ঐক্যের বার্তা দিতে চাইছেন, তিনি তো কংগ্রেসেরই নেতা। আনন্দ শর্মা তাই কটাক্ষ করলেন, ‘‘বিজেপির এমন কোনও নেতা নেই যাঁর স্মৃতিতে পটেলের মূর্তির চার ভাগের এক ভাগ উচ্চতার মূর্তি তৈরি করা যায়। পটেল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। গাঁধীই তাঁকে সর্দার উপাধি দিয়েছিলেন।’’

আনন্দ শর্মা থেকে সীতারাম ইয়েচুরিদের প্রশ্ন, প্রায় ছ’শো ফুট উঁচু পটেলের মূর্তি বানিয়েই কি প্রধানমন্ত্রী গর্বিত হচ্ছেন? নিজের হাতে আরএসএসকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা লিখেছিলেন সর্দার পটেল। সেই নির্দেশনামাটি যেন মূর্তির নীচে বাঁধাই করা থাকে। তাহলেই প্রধানমন্ত্রীর গর্ববোধ সম্পূর্ণ হবে। বর্ষীয়ান ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, আরএসএস বলপ্রয়োগের মাধ্যমে হিন্দু রাজ্য তৈরি করতে চায় বলে মনে করতেন পটেল। কোনও সরকার যে তা বরদাস্ত করবে না তাও পটেল স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন।

পটেলের মূর্তি নিয়ে অসন্তোষ আছে গুজরাতেও। যে নর্মদাতটে পটেলের মূর্তি উদ্বোধন করবেন মোদী, সেখানকার ২২টি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান খোলা চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁদের দাবি, মোদী যেন না আসেন। পটেলের মূর্তি আর ঐক্যের দৌড় নিয়ে পোস্টারও ছিঁড়ে ফেলছেন এলাকার তফসিলি জনজাতির মানুষ। সেখানে বীরসা মুন্ডার ছবি লাগিয়ে পুলিশ দিয়ে পাহারা দেওয়াচ্ছে গুজরাত সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন