ফরমান বিতর্কে দিল্লির কালীবাড়ি

পুজোর ঠিক মুখে মন্দির সোসাইটি জানিয়ে দিয়েছে, কালীবাড়ির অতিথিশালায় ঠাঁই পাবেন না ভিন্ন ধর্মের মানুষেরা। শুধু তাই নয়, অভিযোগ উঠেছে ৪০ বছরের পুরনো ওই পুজোতে এ বার ব্রাত্য সংখ্যালঘু সাংস্কৃতিক কলাকুশলীরাও।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:০২
Share:

রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায় সংখ্যালঘু-বিরোধী ভাবমূর্তি বদলাতে নেমেছে সঙ্ঘ পরিবারও! গত কাল সঙ্ঘ পরিবারের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ডাকা হয়েছিল বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথ মুনওয়ার ইউসুফকে। অনুষ্ঠানস্থল ছিল একেবারে নাগপুর। সঙ্ঘ পরিবারের সদর দফতর। এই আবহেই কিন্তু সংখ্যালঘু-বিরোধী অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ উঠছে রাজধানীর চিত্তরঞ্জন পার্ক কালী মন্দির সোসাইটির সভাপতি ও সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ অসিতাভ ভৌমিকের বিরুদ্ধে।

Advertisement

পুজোর ঠিক মুখে মন্দির সোসাইটি জানিয়ে দিয়েছে, কালীবাড়ির অতিথিশালায় ঠাঁই পাবেন না ভিন্ন ধর্মের মানুষেরা। শুধু তাই নয়, অভিযোগ উঠেছে ৪০ বছরের পুরনো ওই পুজোতে এ বার ব্রাত্য সংখ্যালঘু সাংস্কৃতিক কলাকুশলীরাও। অভিযোগ, সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ অসিতাভ ভৌমিক দায়িত্ব নেওয়ার পরেই এই ধরনের ফরমান জারি করা হয়েছে।

গত জুলাই মাসে কালী মন্দিরের পরিচালন সমিতির নির্বাচনে জিতে সভাপতি পদের দায়িত্ব নেন অসিতাভবাবু। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ও দীর্ঘ দিন পশ্চিম এশিয়ায় কর্মরত অসিতাভবাবু সক্রিয় ভাবে সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই যুক্ত রয়েছেন। ভিন ধর্মের জন্য জারি নতুন ফরমান নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অতিথিশালায় বাংলাদেশ থেকে অনেকে আসেন। তাঁদের অনেকে প্রায়শই মন্দির প্রাঙ্গণেই নমাজ পড়ে থাকেন। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’ তবে ভিন ধর্মের শিল্পীদের উপরে নিষেধাজ্ঞার অভিযোগ তিনি মানেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ কথা ঠিক চলতি বছরে পুজো কমিটির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কোনও অন্য ধর্মের শিল্পী নেই। কিন্তু তাঁদের উপরে কোনও নিষেধও নেই।’’ তিনি জানান, প্যান্ডেল বানানো, আলোর কাজের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই সংখ্যালঘু। তাঁদের কাজ করতে কোনও বাধা নেই। ভোগ বিতরণেও কোনও বাছবিচার করা হয় না। তাঁর অভিযোগ, বিরোধী শিবির তাঁকে অপদস্থ করতেই পরিকল্পিত ভাবে প্রচার চালাচ্ছে।

Advertisement

কেন? অসিতাভবাবুর দাবি, ‘‘স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি চক্রে আঘাত করাতেই অনেকের সমস্যা হয়েছে। গত ২০-২২ বছর ধরে টেন্ডার ছাড়াই প্যান্ডেলের বরাত একটি সংস্থাকে দেওয়া হচ্ছিল।’’ মন্দিরের প্রণামী-সংক্রান্ত দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করাও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের বড় কারণ বলে মনে করেন নতুন সভাপতি। তাঁর কথায়, ‘‘আগে এক বা দু’জনের উপস্থিতিতে প্রণামী বাক্স খোলা হত। এখন সিসিটিভির নজরদারিতে কুড়ি জনের সামনে তা খোলা হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement