রাজস্থানে সাসপেন্ড পুলিশ

হাজতে যুবক ‘হত্যা’, বধূকে ধর্ষণের নালিশ

ওই ব্যক্তির দাবি, গোটা ঘটনাটি নিজের চোখের সামনে দেখেন তাঁর স্ত্রী। তাঁকেও পরে গণধর্ষণ করে পুলিশকর্মীরা। তাঁর নখ উপড়ে নেয়। মারের চোটে চোখ ও আঙুল জখম হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা 

জয়পুর শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০৩:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক দলিত মহিলাকে গণধর্ষণ ও তাঁর দেওরকে হেফাজতে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। রাজস্থানে চুরুর এই ঘটনায় ৬ পুলিশকর্মী ও এক অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৬ জুলাই সকালে নেমিচাঁদ নামে ২২ বছরের এক যুবককে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিনই রাতে হেফাজতে মারা যান তিনি। যদিও জয়পুরের এক হাসপাতালে ভর্তি ওই যুবকের বৌদি জানিয়েছেন, চুরুর সরদারশহর থানার দায়িত্বে থাকা এক অফিসার (এসএইচও) ও অন্যান্য পুলিশকর্মীরা তাঁকে ও তাঁর দেওরকে চুরির অভিযোগে তুলে নিয়ে গিয়ে বেআইনি ভাবে আটকে রাখে। তাঁকে গণধর্ষণ করে ও দেওরকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। ওই মহিলার স্বামী, সম্পর্কে নেমিচাঁদের দাদা দাবি করেছেন, ‘‘৩০ জুন চুরির অভিযোগে আমার ভাইকে তুলে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে পুলিশ। ৩ জুলাই ভাইকে নিয়ে ওরা বাড়ি আসে এবং ও’দিনই আমার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যায়। যাওয়ার পথেই ভাই স্ত্রীকে জানান, ওর উপর অত্যাচার চালিয়েছে পুলিশকর্মীরা। ৬ জুলাই পুলিশ আমার ভাইকে মেরে ফেলে ওরা।’’

ওই ব্যক্তির দাবি, গোটা ঘটনাটি নিজের চোখের সামনে দেখেন তাঁর স্ত্রী। তাঁকেও পরে গণধর্ষণ করে পুলিশকর্মীরা। তাঁর নখ উপড়ে নেয়। মারের চোটে চোখ ও আঙুল জখম হয়। নেমিচাঁদ মারা যাওয়ার পরেও ১০ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে আটকে রাখা হয় তরুণীকে। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, ৭ জুলাই নেমিচাঁদের শেষকৃত্য সেরে ফেলার জন্য চাপ দেয় পুলিশ আধিকারিকরা।

Advertisement

নেমিচাঁদের মৃত্যুর খবর সামনে আসার পরে এসএইচও রণবীর সিংহ ও ছয় পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। চুরুর পুলিশ সুপার রাজেন্দ্র কুমারকেও প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সরদারশহরের সার্কেল অফিসারকেও শুক্রবার রাতে সাসপেন্ড করা হয়। তার পরেই আক্রান্ত মহিলার সই-সহ লিখিত অভিযোগ ডিজিপি ভুপেন্দ্র সিংহের কাছে পাঠানো হয়।

শনিবার মহিলার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। নতুন এসএইচও মহেন্দ্র দত্ত শর্মার কথায়, ‘‘ওই মহিলার বিবৃতি অনুযায়ী আজ এফআইআর হয়েছে ওই পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটির সিআইডি ও সিবিআই তদন্ত হবে।’’

নেমিচাঁদের আর এক দাদা বলেছেন, ‘‘৬ জুলাই পুলিশ ভাইকে নিয়ে গ্রামে এসেছিল। তখনই বলেছিল, শেষবারের জন্য পরিবারকে দেখে নিতে। ও দিন আমার বৌদিকেও তুলে নিয়ে যায়। আট দিন পুলিশি হেফাজতে থাকার পরে, ১০ জুলাই যখন বৌদি ফেরেন, তখন ওঁর অবস্থা খুবই খারাপ।’’

নেমিচাঁদের পরিবারের অভিযোগের সঙ্গে যদিও পুলিশের দাবি মিলছে না। পুলিশ জানিয়েছে, ৩ জুলাই তাদের কাছে খবর আসে স্থানীয় গ্রামবাসীদের হাতে ‘চোর’ ধরা পড়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবককে তুলে নিয়ে আসে পুলিশবাহিনী। দেখা যায়, পুলিশের খাতায় আগেও নাম রয়েছে নেমিচাঁদের।

ও দিনই রাতে তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়। এর পরে ৬ জুলাই পুলিশ গ্রামে গিয়ে গ্রেফতার করে নেমিচাঁদকে। ও দিনই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের দাবি, ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, হৃদ‌্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি দাবি করেছেন দলিত অধিকারকর্মীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন