Coronavirus

করোনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল, দাবি চিনা সংস্থার

কোভিড-১৯ ভাইরাসকে প্রতিহত করতে জিন প্রযুক্তির সাহায্যে এই এডি৫-এনকোভ টিকা তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২০ ১৭:৫৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে গোটা বিশ্বে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে করোনা। মানবশরীরে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সাফল্য আসতে শুরু করল। করোনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল হয়েছে বলে সম্প্রতি দাবি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘মডার্না আইএনসি’ সংস্থা। এ বার একই কৃতিত্ব দাবি করল চিনের ‘কানসিনো বায়োলজিকস আইএনসি’। তাদের তৈরি এডি৫-এনকোভ টিকা নোভেল করোনার হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে বলে দাবি করেছে ওই সংস্থা।

Advertisement

কানসিনো বায়োলজিকস আইএনসি-র তরফে জানানো হয়েছে, ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি ১০৮ জনের উপর এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করে তারা। টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যেই তাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধকারী ‘টি’ কোষ তৈরি হয়ে যায়। আর ২৮ দিনের মধ্যেই তৈরি হয়ে যায় অ্যান্টিবডি। তবে একেবারেই প্রাথমিক স্তরে এই পরীক্ষা করা হয়েছে। কোভিড প্রতিরোধে এই টিকা কতটা কার্যকর, তা দেখতে কয়েক হাজার জনের উপর তা প্রয়োগ করতে হবে।

কোভিড-১৯ ভাইরাসকে প্রতিহত করতে জিন প্রযুক্তির সাহায্যে এই এডি৫-এনকোভ টিকা তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী, যাঁদের উপর পরীক্ষামূলক ভাবে টিকা প্রয়োগ করা হয়, তাঁদের ৮১ শতাংশের ত্বকে ফোলা ও লাল ভাব দেখা দেয়। চুলকানি এবং ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়ার সমস্যায়ও ভুগতে শুরু করেন অনেকে। তবে এই টিকা প্রয়োগের পর প্রত্যেকের মধ্যে যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তা হল, জ্বর, পেশীর যন্ত্রণা এবং মাথাব্যথা।

Advertisement

আরও পড়ুন: লাদাখে ভারতীয় জওয়ানদের আটকে রেখেছিল চিন? দাবি খারিজ সেনার​

এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে কোভি়ড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার মানুষের। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকা, চিন ছাড়াও বিশ্বের বহু দেশই করোনার প্রতিষেধক তৈরিতে হাত লাগিয়েছে। তবে সবচেয়ে প্রথম এই কাজে হাত লাগায় ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা পিএলসি। খুব শীঘ্র দ্বিতীয় দফায় চ্যাডক্স১ এনকো-১৯ টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করতে চলেছে তারা।

তার জন্য ৫ থেকে ১২ বছর বয়সি এবং সত্তরোর্ধ্বদের নিয়ে পরীক্ষা করতে চলেছে তারা। বিভিন্ন বয়সের মানুষের শরীরে এই টিকার কী প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় তা দেখা হবে। পরীক্ষার তৃতীয় দফায় ১৮ বছর এবং তার বেশি বয়সের মানুষদের নিয়ে পরীক্ষা হবে। এই পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই মার্কিন সরকার ১২০ কোটি ডলার অর্থসাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পরীক্ষা সফল হলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে এই টিকার ৩০ কোটি ডোজও কিনে নেবে বলে জানিয়েছে আমেরিকা।

এ ছাড়াও ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গেও চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার। পরীক্ষা সফল হলে সেপ্টেম্বরে তাদের ১০ কোটি ডোজ সরবরাহ করবে তারা। তবে আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে কমতে শুরু করেছে তাতে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রোজেনেকার এই উদ্যোগ সফল হওয়ার ৫০ শতাংশ সুযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডের জেনার ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর এড্রিয়ান হিল। তাঁর কথায় টিকা পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক রোগীই পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠবে।

আরও পড়ুন: ঠান্ডাযুদ্ধের কিনারার দিকে ঠেলে দিচ্ছে আমেরিকা’, বিস্ফোরক চিনের বিদেশমন্ত্রী​

করোনার টিকা তৈরিতে ভারতের তরফেও উদ্যোগে খামতি নেই। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (বিবিআইএল) যৌথ ভাবে কোভিড-১৯-এর টিকা তৈরিতে হাত লাগিয়েছে। পুণেতে আইসিএমআরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের জিনের গঠন নির্ধারণ করা গিয়েছে। যাঁর উপর এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে, তাঁকেও বিবিএল-এ পাঠানো হয়েছে।

টিকা তৈরি হলে প্রথমে পশুদের উপর তা প্রয়োগ করা হবে। তার পর তা প্রয়োগ হবে মানবদেহে। এই উদ্যোগে পিএমকেয়ার তহবিল থেকে ইতিমধ্যেই ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এক বছরের আগে এই টিকা হাতে পাওয়া যাবে না। ভারতে আরও বেশ কিছু সংস্থা করোনার টিকা তৈরিতে হাত লাগিয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জাইডাস ক্যাডিলা, সিরাম ইনস্টিটিউট, বায়োলজিক্যাল ই এবং মিনভ্যাক্স।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন