Borosil

কর্মীর মৃত্যুতে দু’বছরের বেতন পরিবারকে, সন্তানের পড়ার খরচ, কোভিডে অঙ্গীকার বোরোসিলের

অতিমারিতে কর্মী, বেতন ছাঁটাইয়ের মধ্যে ব্যতিক্রমী ঘোষণা বোরোসিলের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২১ ১৪:৪০
Share:

কোভিডে কর্মীদের পাশে বোরোসিল।

অতিমারির প্রকোপ কোথায় গিয়ে থামবে জানা নেই। এক-দু’বছর পর যদি সঙ্কট কেটেও যায়, ক্ষয়ক্ষতি পূরণ হবে কী করে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দেশের তাবড় সংস্থা। কিন্তু এই বিপদের দিনেও লাভ-লোকসানের হিসেব কষার পরিবর্তে ব্যতিক্রমী হয়ে উঠল দেশের অন্যতম বৃহৎ কাচের সামগ্রী উৎপাদনকারী সংস্থা বোরোসিল। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে সংস্থার কোনও কর্মীর মৃত্যু হলেও, সেই ধাক্কা কাটিয়ে না ওঠা পর্যন্ত তাঁর পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করল তারা। শুধু তাই নয়, স্নাতকোত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ওই কর্মীর ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচও বহন করবে বলে জানিয়েছে বোরোসিল।

Advertisement

প্রায় এক সপ্তাহ ৩ লক্ষের উপর ঘোরাফেরার পর শনিবার দেশে দৈনিক সংক্রমণ ৪ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ফের সাড়ে ৩ হাজারের বেশি করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে দেশে। তাতে গোটা দেশে যখন আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছে, তেমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাতে সংস্থার নয়া নীতি সামনে আনেন বোরোসিল লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রীবর খেরুকা। বোরোসিলের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে কোনও কর্মীর যদি মৃত্যু হয়, তিনি যা বেতন পান, পরবর্তী দু’বছর তাঁর পরিবারের হাতে মাসে মাসে ওই বেতন তুলে দেওয়া হবে। এ ছাড়াও স্নাতক স্তর পর্যন্ত ওই কর্মীর ছেলেমেয়ের পড়ানোর খরচ বহন করবে সংস্থা’।

শুধুমাত্র বোরোসিল লিমিটেড নয়, বোরোসিল রিনিউয়েবল লিমিটেড এবং তাদের ভর্তুকিপ্রাপ্ত সমস্ত সংস্থার কর্মীরাই এই সুবিধা পাবেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রিয়জনকে হারানোর যে ক্ষতি, তা কোনও ভাবেই পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। তবে প্রাথমিক ভাবে শোকের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে এবং নতুন করে জীবন শুরু করতে এই সাহায্য কিছুটা হলেও কাজে লাগবে শোকার্ত পরিবারগুলির।’ শ্রীবর বলেন, ‘মুনাফা বা ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দেখে বোরোসিলের আসল সম্পদ বোঝা সম্ভব নয়। তাই যে কোনও ভাবেই হোক না কেন এই সম্পদকে আগলে রাখতে হবে আমাদের। আশাকরি সেই দিকেই এগোচ্ছি আমরা। আমার বিশ্বাস এই সঙ্কট কাটিয়ে আবার ভাল সময়ে ফিরব আমরা’।

Advertisement

অতিমারির প্রকোপে সম্প্রতি সন্তোষ ছলকে, বিজয় শ্রীসৎ, তুষার পাঞ্চল এবং শিবশঙ্কর বিস্ত নামে বোরোসিলের ৪ কর্মীর মৃত্যু হয়। তার পরই সংস্থার তরফে কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় এই মুহূর্তে বিধ্বস্থ গোটা দেশ। টাকা থাকলেও হাসপাতালে শয্যা এবং অক্সিজেনের জোগানের অভাবে প্রিয়জনকে বাঁচাতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। আবার ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানোর সামর্থ না থাকায়, বিনা চিকিৎসায়ও মারা যাচ্ছেন বহু মানুষ। সংক্রমণও ছড়িয়ে পড়ছে দাবানলের গতিতে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে লকডাউনের আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়েছে। তাতে রুটি-রোজগারে টান পড়ার দুশ্চিন্তাও দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বোরোসিলের এই মানবিক ঘোষণায় কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তা কমেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার কর্মীরা। নেটমাধ্যমেও বোরোসিলের এই পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করছেন নেটাগরিকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন