ছবি: পিটিআই।
লকডাউনের ২৪ দিনের মাথায় তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার দাবি করল, দেশে করোনা-সংক্রমণ কমছে। লকডাউনের আগে দেশে যেখানে তিন দিনে করোনা রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছিল, সেখানে এখন সময় লাগছে ৬ দিনেরও বেশি। সেরে ওঠা করোনা-রোগী ও করোনায় মৃত্যুর অনুপাতের নিরিখে অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারত অনেক ভাল জায়গায় রয়েছে বলেও দাবি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
আজ মন্ত্রকের প্রাত্যহিক সাংবাদিক বৈঠকে যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল দাবি করেন, গত এক সপ্তাহের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, দেশে এখন প্রায় ৬.২ দিনে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। অর্থাৎ সংক্রমণের হার কমেছে। মন্ত্রক এই দাবি করলেও আজ বিকেল পর্যন্ত গত চব্বিশ ঘণ্টায় গোটা দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১০০৭ জন। মারা গিয়েছেন ২৩ জন। দেশে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১৩,৮৩৫। মোট মৃত্যু ৪৫২। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, গত কয়েক দিনে রোজ গড়ে হাজার জনের কাছাকাছি মানুষ সংক্রমিত হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্র কেন সংক্রমণ কমেছে বলে দাবি করছে?
উত্তরে লব আগরওয়ালের যুক্তি, মার্চের শেষ পনেরো দিনে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ছিল ২.১ শতাংশ। এপ্রিলের প্রথম পনেরো দিনে তা হয়েছে ১.২ শতাংশ। নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ৪০ শতাংশের কাছাকাছি কমেছে। তাঁর মতে, লকডাউন ও পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতির পাশাপাশি পরীক্ষার সংখ্যা বেড়েছে বলেই গোটা দেশে সংক্রমণের সংখ্যা কমেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, ১৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে করোনা-রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার যা হার, তা জাতীয় হারের চেয়েও কম। এই রাজ্যগুলিতে সংক্রমণের হারও কম। এই ১৯টি রাজ্যের তালিকায় বিহার ও ওড়িশা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ নেই।
আরও পড়ুন: লকডাউনের তোয়াক্কা না-করে ধুমধাম করে দেবগৌড়ার নাতির বিয়ে!
শুরু থেকে এ যাবৎ ১৭৬৬ জন করোনা-সংক্রমিত সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। লবের দাবি, মোট আক্রান্তদের মধ্যে আশি শতাংশের বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছেন। যে হার অনেক উন্নত দেশের থেকে ভাল। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত কাল চিন থেকে পাঁচ লক্ষ অ্যান্টিবডি পরীক্ষা-কিট ভারতে এসে পৌঁছেছে। সেই কিট কারা পাবে, সেই প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, যে রাজ্যগুলি কেন্দ্রের কাছে আগেভাগে অ্যান্টিবডি কিট চেয়ে রেখেছে, তাদের প্রথমে বিবেচনা করা হবে। তবে কিট বেশি দেওয়ার চেষ্টা করা হবে সেই রাজ্যগুলিকে, যেখানে বেশি সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। মূলত ‘হটস্পট’-গুলিতে সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে, তা বুঝতে ওই কিট ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন: ‘হটস্পট’ শাহিন বাগের আর্জি, আঙুল নয় ধর্মে
করোনা প্রতিরোধে বিসিজি টিকা কতটা কার্যকর হবে, আগামী সপ্তাহে আইসিএমআর তা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করবে। তবে সংস্থার কর্তা রমন গঙ্গাখেদকর বলেছেন, ‘‘পরীক্ষার ফল না-আসা পর্যন্ত আমরা কিন্তু স্বাস্থ্যকর্মীদেরও ওই টিকা নিতে সুপারিশ করব না।’’ ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্রে করোনা-সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২০৫। মৃত ১৯৪। মুম্বইয়ের ধারাভিতে আক্রান্ত ১০১। ষষ্ঠ রাজ্য হিসেবে আজ আক্রান্তের সংখ্যা হাজার পেরিয়েছে গুজরাতে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)