Coronavirus

বেলাগাম সংক্রমণে দিশেহারা পুণে-মুম্বই-ঠাণে

অন্য রাজ্যগুলি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে, কেন মহারাষ্ট্র পারল না, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:০২
Share:

গ্রাফিক:শৌভিক দেবনাথ।

দেশে করোনা সংক্রমণের গোড়ার দিকের প্রবণতা ছিল, মোট আক্রান্তের তিন ভাগের এক ভাগই মহারাষ্ট্রে। সেই প্রবণতা থেকে কার্যত এখনও বেরোতে পারেনি কোঙ্কন উপকূলের এই রাজ্য। চিত্রটা সামান্য পাল্টালেও এখনও দেশের মোট আক্রান্তের ২২ শতাংশই মহারাষ্ট্রের। মৃত্যুর নিরিখে আরও ভয়ানক অবস্থান রাজ্যের। দেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৩৭ শতাংশই মহারাষ্ট্রে। কেন এমন ভয়ানক ভাবে বাড়ল মহারাষ্ট্রের সংক্রমণ? কেনই বা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিক জনঘনত্ব, বোঝার আগেই ছড়িয়ে পড়া, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, বেশি টেস্টিং, অসচেতনতা— এমন একাধিক ফ্যাক্টর একসঙ্গে মহারাষ্ট্রে যুক্ত হওয়াতেই অতিমারি ভয়াবহ আকার নিয়েছে।

Advertisement

মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল ১০ লক্ষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লক্ষ ১৫ হাজার ৬৮১। দেশে কোভিড সংক্রমণের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা মহারাষ্ট্রের অর্ধেকের কিছুটা বেশি। আবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ অনেক রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা যা, মহারাষ্ট্রে সক্রিয় করোনা রোগী তার চেয়ে বেশি। পশ্চিমবঙ্গে বসে মহারাষ্ট্রের করোনা সংক্রমণের চিত্র বুঝতে এই পরিসংখ্যানই যথেষ্ট। কিন্তু মুম্বই তো ভিন্‌গ্রহে নয়। এই দেশেরই একটা রাজ্য। অন্য রাজ্যগুলি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে, কেন মহারাষ্ট্র পারল না, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। উঠছে প্রথম দিকে সরকারের উদাসীনতার প্রশ্নও।

মহারাষ্ট্রের সংক্রমণের প্রকৃতি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, প্রথম দিকে বস্তি এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল বেশি। সেই সংক্রমণ কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না। কিন্তু জুনে এসে দেখা গেল, বস্তি এলাকায় সংক্রমণ অনেকটাই কমে এসেছে। ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে বস্তি এলাকার বাইরে। বচ্চন পরিবার, অনুপম খেরের পরিবার থেকে শুরু করে বলিউডের অনেক তারকা, কলাকুশলীর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। অর্থাৎ উচ্চবিত্তদের মধ্যেও ঢুকে পড়েছে করোনা। অন্য দিকে, গোড়া থেকেই সংক্রমণ ছিল মূলত শহরকেন্দ্রিক। মুম্বই দিয়ে শুরু হয়েছিল। তার পর বৃহন্মুম্বই, সেখান থেকে পুণে, ঠাণে। মূলত এই তিন শহরেই মহারাষ্ট্রের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। শুক্রবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ৩২২জন। মহারাষ্ট্রে সেখানে শুধু পুনেতেই আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৭১০। মুম্বইয়ে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ৩০৬, ঠাণেতে ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৯৩৪।

Advertisement

আরও পড়ুন: মতান্তরও রয়ে গেল, পাঁচটি বিষয়ে ঐকমত্য মস্কো-বৈঠকে​

আরও পড়ুন: রদবদল কংগ্রেসে, রাহুলের ইচ্ছে মেনেই​

মৃত্যুর হারেও দেশে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ মহারাষ্ট্রকে নিয়েই। ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেবে দেশে মৃত্যু হয়েছে ৭৬ হাজার ২৭১ জনের। সেখানে শুধু মহারাষ্ট্রেই মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ২৮২। অর্থাৎ, দেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৩৭ শতাংশই মহারাষ্ট্রে। ১০ সেপ্টেম্বরের পরিসংখ্যানে ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত ১ হাজার ২০৯ জন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই ৪৯৫।

মহারাষ্ট্রে প্রথম করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ৯ মার্চ। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার অন্তত এক থেকে দেড় মাস আগেই মুম্বইয়ে ঢুকে পড়েছিল করোনার জীবাণু। আর যখন প্রথম ধরা পড়েছিল, তত ক্ষণে ছড়িয়ে পড়েছিল বাণিজ্যনগরীর বস্তি থেকে উচ্চবিত্ত মহল, সর্বত্র। লক্ষণহীনরা তো বুঝতেই পারেননি, যাঁরা অসুস্থ হয়েছিলেন, তাঁরাও ভাইরাল ফিভার বা অন্য মরসুমি সর্দি-কাশি ভেবেছিলেন। তাঁদের সংস্পর্শে আসা লোকজনও অসুস্থ হয়েছিলেন। এর অন্যতম কারণ, বলিউড তারকাদের হামেশাই বিদেশে যাতায়াত। বাণিজ্যনগরীতে শিল্প মহলের ধনী শ্রেণির মানুষের ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। আবার এই উচ্চবিত্ত শ্রেণির বাড়ি-অফিসে প্রচুর নিম্মবিত্ত শ্রেণির মানুষ কাজ করেন। ফলে সবার অগোচরেই তখন বেড়ে গিয়েছে সংক্রমণ।

মহারাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসের লড়াইয়ে এবং বিশেষ করে বস্তি এলাকায় উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্ফেরুল ফাউন্ডেশন’। বস্তিবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো, হ্যান্ড ওয়াশিং সেন্টার চালু করা, বিনামূল্যে টেস্টিং-এর ব্যবস্থা করা, ভেন্টিলেটর দান করা-সহ নানা ভাবে মুম্বইবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছে স্ফেরুল ফাউন্ডেশন। সংগঠনের কর্ণধার ও বিশিষ্ট চিকিৎসক গীতা বরার মতে, ‘‘জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকেই রাজ্য সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু তখন আমরা কেউই বুঝতে পারিনি। ফলে ওই সময়ই ব্যাপক হারে ছড়িয়েছে। পরবর্তী কালে টেস্টিং, কনট্যাক্ট ট্রেসিং, আইসোলেশন থেকে যাবতীয় ব্যবস্থা করা সত্ত্বেও আর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি। মোকাবিলার পন্থা বা পরিকাঠামো যত বেড়েছে, সংক্রমণ ছড়িয়েছে তার কয়েক গুণ দ্রুত হারে।’’

দ্বিতীয় কারণ অবশ্যই প্রচুর মানুষের বাস। ভারতের মধ্যে প্রথম তো বটেই জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের মধ্যে মুম্বই ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন সিটি। মুম্বই শহরাঞ্চলে রয়েছে প্রচুর বস্তি। এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বস্তি ধারাভিও মুম্বইয়ে। এক বার সেই সব এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সংক্রমণ রোখা অত্যন্ত কঠিন। তবে আশার কথা, বস্তি এলাকার সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তার অন্যতম কারণ অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বস্তিতে সংক্রমণ ছড়ালে ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলে ওই সব এলাকায় সরকার, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞদের নজর ছিল সবচেয়ে বেশি। তাই ধীরে ধীরে প্রায় নিয়ন্ত্রণে এসে গিয়েছে।

কিন্তু শহরবাসীর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বলছে, বহু মানুষ এখনও মাস্ক না পরে ঘুরছেন। বিনা প্রয়োজনে বাইরে বেরোচ্ছেন, জমায়েত করছেন। ক্রিকেট-ফুটবল খেলছেন। পাশাপাশি বহু মানুষকে রুজি-রুটির টানেও বাইরে বেরোতে হচ্ছে। জুলাই থেকে লোকাল ট্রেন চালু হয়েছে। সেই পরিষেবা শুধুমাত্র রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কর্মীদের জন্য হলেও তাতেও সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। উচ্চবিত্ত মহলে ধীরে ধীরে ফের পার্টিও চালু হয়েছে ঘরোয়া ভাবে। সামগ্রিক ভাবে এই সচেতনতার অভাব, বা বেপরোয়া মনোভাব অথবা প্রয়োজন— সব কিছু মিলিয়েই লাগামহীন এই সংক্রমণ। অথচ এই সময়েই দরকার ছিল কড়া লকডাউন। চিকিৎসক গীতা বরার মতে, ‘‘আমেরিকা-ব্রিটেনে আমাদের দেশের মতো এত কড়া ও সর্বাত্মক লকডাউন হয়নি। কিন্তু ওই সব দেশে লকডাউন হয়েছে সংক্রমণ যখন প্রায় শীর্ষে পৌঁছেছে, সেই সময়। আমাদের ক্ষেত্রে উল্টো হয়েছে। মহারাষ্ট্রে যেমন এই সময় দরকার ছিল কড়া লকডাউন। কিন্তু মানুষকে তো আর সারা জীবন ঘরবন্দি করে রাখা যায় না। তাঁরা খাবেন কী? করোনার চেয়েও তাঁদের বেশি দুঃশ্চিন্তা হয়েছে রোজগার। তাই বাইরে বের হতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার আগের চেয়ে ভয়ও অনেকটা কমেছে মানুষের মনে। ফলে এখন জোর করেও তাঁদের আটকে রাখা মুশকিল।’’

টেস্টিং বেশি হওয়াও মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে মনে করেন গীতা বরা। তিনি বলেন, ‘‘দেশের অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে মহারাষ্ট্রে টেস্টিং অনেক বেশি হচ্ছে। এমনকি কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে মোট যত টেস্ট হচ্ছে, শুধুমাত্র মুম্বইয়েই তার চেয়ে বেশি টেস্টিং করছি আমরা। তবে টেস্টিং আরও বাড়াতে হবে।’’ মহারাষ্ট্রে গ্রাম-শহরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল। আবার মুম্বইয়ের সঙ্গে কার্যত পুণে এবং ঠাণেকে আলাদা করাই মুশকিল। তাই এই তিন শহরে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে বলে মত স্ফেরুল ফাউন্ডেশনের কর্ণধারের।

তবে আশার কথা, মুম্বইয়ে সংক্রমণ কিছুটা কমেছে। এখন বরং উদ্ধব ঠাকরে প্রশাসনের দুঃশ্চিন্তা বেড়েছে পুণেকে নিয়ে। গীতা বরা বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। এর পর ক্রমেই সংক্রমণ আরও কমবে বলে আশা করা যায়। কিছু ক্ষেত্রে হার্ড ইমিউনিটিও শুরু হয়ে গিয়েছে। আরও উল্লেখযোগ্য বিষয়, এখন আশঙ্কাজনক রোগীর সংখ্যা কমছে। আক্রান্তদের সিংহভাগেরই মৃদু সংক্রমণ। এক সময় হাসপাতালে যে ভেন্টিলেটরের আকাল ছিল, এখন তা-ও নেই। সরবরাহ বাড়লেও আগের মতো আশঙ্কাজনক রোগীর সংখ্যা বেশি হলে হাসপাতালে স্থান সঙ্কুলান করাই মুশকিল হয়ে যেত।’’

তবে কি আরব সাগরের ঢেউয়ের মতোই প্রবহমান গতিতে মহারাষ্ট্রে চলতে থাকবে করোনার সংক্রমণ? প্রথম দিকে মনে করা হয়েছিল, অগস্টে মহারাষ্ট্রে সংক্রমণের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছতে পারে। কিন্তু সেপ্টেম্বরেও সংক্রমণ ভয়ানক ভাবে ঊর্ধ্বমুখী। ফলে নতুন করে এখন আর শিখরে পৌঁছনোর সময় নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী বা অনুমান করতে চাইছেন না চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের সর্বত্র এক সময়ে শিখরে পৌঁছবে না, এটা ঠিক। তবে গীতা বরার মতে, ‘‘মুম্বইয়ের এখনকার যে প্রবণতা, তাতে অক্টোবরের শেষ নাগাদ শিখরে পৌঁছতে পারে। পুরো মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সেটা পৌঁছতে নভেম্বরের শেষ বা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।’’

সংক্রমণহীন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আরও একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে। মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যকর্তারাও জানাচ্ছেন, রাজ্যে এখন যে আক্রান্তের সন্ধান মিলছে, তাঁদের সিংহ ভাগেরই কোনও লক্ষণ নেই। শুধুমাত্র কনট্যাক্ট ট্রেসিং-এর মাধ্যমে তাঁদের টেস্ট করা হচ্ছে এবং পজিটিভ রিপোর্ট আসছে। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তিরও প্রয়োজন হচ্ছে না। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা তো বেড়েই চলেছে। সংক্রমণের এই চোরাস্রোত আটকানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের কাছে।

একটা অভিনব উপায়ের কথা বলেছেন চিকিৎসক গীতা বরা, ‘‘রক্তে অক্সিজেন সরবরাহের মাত্রা কমে গেলেই করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল। অক্সিমিটারের মাধ্যমে সেটা বোঝা যায়। কিন্তু গরিব-নিম্নবিত্তদের অক্সিমিটার কেনার সামর্থ্য নেই। বাজার, বাস-ট্যাক্সি-অটো স্ট্যান্ড, বস্তিতে যেমন সাধারণের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তেমনই এই সব জায়গায় অক্সিমিটার রাখা যেতে পারে। যে কেউ সেখানে পরীক্ষা করে নিতে পারেন। অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ এর নীচে নেমে গেলেই কোভিড টেস্ট করিয়ে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রেও গরিবদের জন্য বিনামূল্যে টেস্টের ব্যবস্থা করা উচিত সরকারের।’’

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন