Coronavirus

পড়ুয়ারা সত্যিই প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালাচ্ছে কি? ‘নজরদারি’ চলছে!

পড়ুয়ারা সত্যিই ঘরের আলো নিভিয়ে প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালাচ্ছে কি না, তা নিয়ে নজরদারির অভিযোগ উঠল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৫০
Share:

ছবি: এএফপি।

নিছক অনুরোধ নয়। প্রধানমন্ত্রীর কথা মেনে স্কুলের পড়ুয়ারা সত্যিই ঘরের আলো নিভিয়ে প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালাচ্ছে কি না, তা নিয়ে নজরদারির অভিযোগ উঠল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে!

Advertisement

টুইটে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের অভিযোগ, রবিবার রাত ৯টায় ৯ মিনিটের জন্য বাড়ির আলো নিভিয়ে পড়ুয়ারা প্রদীপ কিংবা মোমের আলো হাতে তুলে ধরেছেন কি না, সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে তা জানাতে বলা হয়েছে সমস্ত স্কুলকে। এ জন্য ইন্টারনেট মারফত বাড়ি বাড়ি ফর্ম পাঠাচ্ছে অনেক স্কুল। মহুয়ার কটাক্ষ, “সাবধান! বড়দা কিন্তু নজর রাখছেন!” প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরিও। আলো নিভিয়ে দীপ জ্বালানোর বার্তা ৩ এপ্রিলই পৌঁছেছিল সিবিএসই স্কুলগুলির প্রিন্সিপালদের কাছে। তাঁদের পাঠানো চিঠিতে এই প্রতিকূল পরিস্থিতি যুঝতে প্রথমে ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপের কথা বলা হয়েছে। তার পরে এসেছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আয়ুষ মন্ত্রকের জারি করা আয়ুর্বেদিক টোটকার প্রসঙ্গ। আর ‘আসল কথাটি’ পাড়া হয়েছে শেষে। সেখানে লেখা, স্কুলের সমস্ত শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী এবং পড়ুয়ারা নিজের-নিজের বাড়িতে বিদ্যুতের আলো নিভিয়ে প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বালাতে পারেন। চলবে মোবাইলের টর্চও। চিঠির বয়ানে ‘জ্বালাতে পারেন’ লেখা হলেও, যে ভাবে কেন্দ্র নজরদারির জন্য প্রতি বাড়ি থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে চাইছে, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েই। তবে আইসিএসসি বোর্ডের তরফে তাদের স্কুলগুলিকে এমন কোনও নির্দেশ পাঠানো হয়নি। রাতে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে দাবি করা হয়, পড়ুয়াদের ফর্ম পাঠানো হয়েছে বটে, কিন্তু তা মূলত অ্যাপটি ডাউনলোড করার পদ্ধতি জানাতে। সঙ্গে দীপ জ্বালানোর পরামর্শ দেওয়া হলেও জোরাজুরি করা হয়নি।

করোনার দাপটে ক্লাসঘরে তালা। কিন্তু তাতে যেন পড়ুয়াদের প্রদীপ জ্বালানোয় বাধা না-পড়ে, তা নিশ্চিত করতে শুধু স্কুল নয়, মোমবাতি কিংবা প্রদীপ জ্বালানোর ‘অনুরোধ’ এসে পৌঁছেছে বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও। যেমন, লকডাউনে হস্টেলে আটকে থাকা পড়ুয়াদের প্রদীপ কিংবা বাতি জ্বালানোর অনুরোধ জানিয়েছেন জেএনইউয়ের উপাচার্য এম জগদীশ কুমার। আলো জ্বালানোর যজ্ঞে পড়ুয়াদের শামিল হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমা আখতারও। তবে যাদবপুর ও বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা তেমন কোনও নির্দেশ পাননি বলে জানিয়েছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ চিহ্নিত করতে দ্রুত রক্তপরীক্ষার নতুন নির্দেশিকা

জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদ জেএনইউএসইউয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকেত মুনের কটাক্ষ, “সারা বিশ্ব যেখানে বৈজ্ঞানিক উপায়ে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের পথ খুঁজছে, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ক্ষমতা বাড়াচ্ছে নিজেদের স্বাস্থ্য-পরিকাঠামোর, সেখানে প্রধানমন্ত্রী আলো জ্বালানো-নেভানোর খেলায় মজে!” আর জামিয়ার এক পড়ুয়ার মতে, “প্রধানমন্ত্রীর এখন উচিত দরিদ্র, দিনমজুর, কয়েকশো কিলোমিটার হেঁটেও বাড়ির পথ ধরা ঠিকাকর্মীর আর্থিক কষ্ট দূর করার চেষ্টা করা।”

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন