coronavirus

তামিলনাড়ুর সংক্রমণের কেন্দ্র এই বাজার আবার ফিরল রেড জোনে

৬৫ একর জায়গা জুড়ে থাকা ওই বাজারে আসা ৪৫৯ জনকে কোয়রান্টিনে রাখার জন্য ৪টি সেন্টার চালু করা হয়েছে। এ ছাড়াও ওঁদের সংস্পর্শে এসেছেন, এমন আরও ২৮৭ জনকেও রাখা হয়েছে ওই কোয়রান্টিন সেন্টারগুলিতে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ১৫:১৫
Share:

তামিলনাড়ুতে করোনা সংক্রমণের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই কোয়ামবেড়ুর পাইকারি বাজার। - ফাইল ছবি।

তামিলনা়ড়ুতে করোনা সংক্রমণের প্রায় ভরক‌েন্দ্র হয়ে উঠেছে কোয়ামবেড়ুর পাইকারি বাজার। তার ফলে, আশপাশের যে জেলাগুলিকে দিনকয়েক আগেও ‘অরেঞ্জ জোন’ ঘোষণা করা হয়েছিল, তাদের ফের ‘রেড জোন’-এ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে তামিলনাড়ু প্রশাসনের।

Advertisement

উত্তরের কুদ্দালোর থেকে দক্ষিণের দিন্ডিগুলের জেলাগুলি থেকে যাঁরা প্রায় রোজই আসেন কোয়ামবেড়ুর পাইকারি বাজারে আনাজপাতি, শাকসব্জি বেচতে, রাজ্য প্রশাসন সুত্রের খবর, তাঁদের মাধ্যমেই এই সংক্রমন ঘটেছে দ্রুত। কুদ্দালোরে সোমবার যে ১২২ জনের রক্তপরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হয়েছে, জানা গিয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকেরই নিয়মিত যাতায়াত ছিল ওই বাজারে। আরও সাড়ে ৪০০ জনের রক্তপরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে রাজ্য প্রশাসন। লাগোয়া ভিল্লুপুরম থেকে কোয়ামবেড়ুর পাইকারি বাজারে আনাজপাতি, শাকসব্জি বেচতে যাওয়া ৪৯ জনের রক্তপরীক্ষা করোনা পজিটিভ হয়েছে, সোমবার। রবিবার ভিল্লুপুরম থেকে কোয়ামবেড়ুর পাইকারি বাজারে যাওয়া আরও ৩৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।

তামিলনাড়ুর প্রশাসন সূত্রের খবর, এর ফলে, কুদ্দালোর, ভিল্লুপুরম, দিন্ডিগুল ও তেনকাসির এলাকাগুলিকে ফের ‘রেড জোন’ ঘোষণার কথা ভাবা হচ্ছে। রাজ্যের ১৪টি জেলার মধ্যে এই চারটি জেলাকেই দিনকয়েক আগে ‘রেড জোন’ থেকে ‘অরেঞ্জ জোন’-এ নামিয়ে আনা হয়েছিল। এখান থেকে যাতে চেন্নাই-সহ গোটা তামিলনাড়ুতে সংক্রমণ আরও ব্যাপক ভাবে না ছড়িয়ে পড়তে পারে, সে জন্য ওই জেলাগুলির সঙ্গে অন্য জেলাগুলির সীমানা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ভিল্লুপুরমের পুলিশ সুপার এস জয়রাম জানিয়েছেন, ৬৫ একর জায়গা জুড়ে থাকা ওই বাজারে আসা ৪৫৯ জনকে কোয়রান্টিনে রাখার জন্য ৪টি সেন্টার চালু করা হয়েছে। এ ছাড়াও ওঁদের সংস্পর্শে এসেছেন, এমন আরও ২৮৭ জনকেও রাখা হয়েছে ওই কোয়রান্টিন সেন্টারগুলিতে।

আরও পড়ুন: কোন জেলায় করোনা আক্রান্ত কত, মৃত কত, তালিকা দিল রাজ্য সরকার

আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় সহায়তা চায় তৃণমূল, বিজেপি রাজ্যে

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফল, আনাজপাতি ও শাকসব্জি আসে তামিলনাড়ুর এই কোয়ামবেড়ুর পাইকারি বাজারে। আসে বহু ট্রাক। দিনে গড়ে এক লক্ষ মানুষের যাতায়াত এই বাজারে। লকডাউনের সময়েও নিয়মকানুন না মেনে এই বাজারে মানুষ এসেছেন হাজারে হাজারে।

রাজ্য প্রশাসন সূ্ত্রের খবর, এই বাজারে দোকানের সংখ্যা ৩ হাজার ২০০। তার মধ্যে আনাজপাতির দোকানই আছে ১ হাজার ৯০০। ফলের দোকান ৮৩০টি। ফুলের দোকান ৪৭০টি। এই বাজার থেকে দিনে গড়ে ২০০ টন আবর্জনার জন্ম হয়।

লকডাউনের আগে এই বাজারে দিনে ৪০০টি ট্রাক আসত সাড় ৩ হাজার টন আনাজপাতি নিয়ে। লকডাউন পর্বে সেই ট্রাকের সংখ্য কমে হয়েছে ২৫০। নিয়ে আসছে দিনে আড়াই হাজার টন আনাজপাতি।

এই বাজারে গাজর, বিন্‌স, ক্যাপসিকাম আসে মেট্টুপালায়াম ও নীলগিরি থেকে। আলু আসে কর্নাটক ও উত্তরপ্রদেশের আগরা থেকে। পেঁয়াজ আসে কর্নাটক ও মহারাষ্ট্র থেকে। আদা আসে কর্নাটক ও কেরলের সীমান্ত থেকে। অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর অন্যান্য জেলা থেকে আসে লেবু।

যাঁরা এই বাজারে এত দিন যাতায়াত করেছেন তাঁদের জরুরি ভিত্তিতে রক্তপরীক্ষা করাতে বলেছে তিরুপ্পুর ও সালেম জেলা প্রশাসন। দিন্ডিগুলের জেলা কালেক্টর এম বিজয়ালক্ষ্ণী জানিয়েছেন, কোয়ামবেড়ুর পাইকারি বাজার থেকে ফেরা ১০০ জনের রক্তপরীক্ষার পর সোমবার ১০ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন খবর নিয়ে জানতে পেরেছে, কোয়মবত্তুর জেলা থেকে ওই বাজারে গিয়েছিলেন ২৮ জন। আর নীলগিরি থেকে গিয়েছিলেন ৪৩ জন। এঁরাও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কি না মঙ্গলবার তা পরীক্ষা করা হচ্ছে, জানিয়েছেন তামিলনাড়ুর ডেপুটি ডিরেক্টর অফ হেল্থ সার্ভিসেস চিকিৎসক জি রমেশ কুমার।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন