—প্রতীকী চিত্র।
মেয়েকে ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় তড়িঘড়ি বিয়ে দিয়ে দেওয়া এবং আবার ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলেন বাবা। উত্তরপ্রদেশের ফিরোজ়াবাদের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত।
আদালত সূত্রে খবর, মেয়ে যখন নাবালিকা, তখন থেকে তার উপর যৌন নির্যাতন করে এসেছেন বাবা। এক সময়ে মেয়ে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ে। তখন তার বিয়ে দিয়ে দেন বাবা। মেয়ে মা হওয়ার পরে আবার তাকে ধর্ষণ করেন বাবা।
মামলাকারী মা এবং মেয়ে। মামলায় অভিযুক্ত বাবা। পুলিশ সূত্রে খবর, মেয়ের ১২ বছর বয়স থেকে তাকে ধর্ষণ করতেন বাবা। সাত বছর ধরে এই অত্যাচার চলে। মাত্র ১৪ বছর বয়সে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ২০১৪ সালে একটি সন্তানের জন্ম দেয় নির্যাতিতা। তার পর বাবা তার বিয়ে ঠিক করেন। এবং এর কিছু দিন পর আবার মেয়ের সঙ্গে একই আচরণ করেন ওই ব্যক্তি।
২০১৯ সালের ৩ মে বাবার বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণের অভিযোগ করেন মেয়ে। তিনি জানান, বাবার জন্য ছোট থেকে ভয়ে ভয়ে দিন কাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু আর নয়। মাকে তিনি সব খুলে বলেছেন। মা-ও বলেছেন থানায় যেতে।
বিচারকে মেয়েটি বলেন, ‘‘আমার বয়স যখন ১২ (২০১২ সাল), এক দিন বন্ধ ঘরে বাবা আমার সঙ্গে জঘন্য কাজ করল। সেই শুরু। এই ভাবে চলতে থাকে। ২০১৪ সালে বাবা আমার বিয়ে দেয়। কারণ, আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলাম। আমি একটি সন্তানের জন্ম দিই। ওই বিয়ের পর বাবা আবার আমায় ধর্ষণ করে। আমি আর পারছিলাম না...।’’
সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তে নেমে সাক্ষ্যপ্রমাণ এবং চিকিৎসার রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে রিপোর্ট তৈরি করে পুলিশ। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চার্জশিট জমা পড়ে আদালতে। সম্প্রতি মামলাটি ওঠে আদালতে।
তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ প্রমাণ হওয়া সত্ত্বেও প্রৌঢ় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, স্ত্রী এবং মেয়ে তাঁকে ফাঁসাচ্ছেন। আদালতে দাঁড়িয়ে অভিযুক্তের দাবি, ‘‘বিয়ের আগে মেয়ের একটি সম্পর্ক ছিল। সেই যুবকের সঙ্গেই ওর বিয়ে দিয়েছি। মেয়ের সন্তানের বাবা ওই যুবক, আমি নই।’’
যদিও সমস্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। গত শুক্রবার দোষী প্রৌঢ়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৩২৩ (ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত), ৫০৬ (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় মামালা দায়ের হয়েছিল। তবে নির্যাতিতা অভিযোগ দায়েরের সময় সাবালিকা হওয়ায় পকসো মামলা দায়ের হয়নি। আদালতের নির্দেশ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে দোষীকে ৭১ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। ওই অর্থ পাবেন তাঁর ২৪ বছর বয়সি মেয়ে। সময়ের মধ্যে জরিমানা দিতে না-পারলে অতিরিক্ত সাজা ঘোষণা করা হবে।