Disha Ravi

জামিনের শর্ত মেনে বন্ডের টাকা দিতে পারবে না দিশার পরিবার, জানালেন আইনজীবী

দিশার জামিনকে সমর্থন করে মঙ্গলবার নেটমাধ্যমে স্বস্তি ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন দিশার সমর্থনকারীরা।

Advertisement

সংবাদসংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:১০
Share:

আদালত চত্বরে দিশা রবি।

জামিন পেলেও জামিনের শর্ত মেটানোর সামর্থ নেই দিশা রবির, জানালেন তাঁর আইনজীবী। কৃষক আন্দোলন সংক্রান্ত ‘টুলকিট’ মামলায় দিশাকে মঙ্গলবার জামিন দেয় দিল্লির আদালত। শর্ত হিসাবে ১ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ড এবং দু’টি অতিরিক্ত ‘সিওরিটি’ দিতে বলা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু দিশার আইনজীবী জানিয়েছেন, এত টাকা দেওয়ার সামর্থই নেই দিশার পরিবারের। ফলে এখন প্রশ্ন, জামিনের শর্তের টাকা মেটাতে না পারলে কি পুলিশ হেফাজতেই থাকতে হবে দিশাকে?

Advertisement

দিশার জামিনকে সমর্থন করে মঙ্গলবার নেটমাধ্যমে স্বস্তি ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন দিশার সমর্থনকারীরা। কৃষক আন্দোলনের সমর্থনকারী ২২ বছরের এই পরিবেশবিদকে যে ষড়ৎন্ত্র করে এতদিন আইনি হেফাজতে রাখা হয়েছিল, সেই অভিযোগও করেন অনেকে। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুইটে লেখেন, ‘যখন কোনও প্রমাণ থাকে না, তখন চক্রান্তের আশ্রয় নাও— এই পুরনো তত্ত্বকে হাতিয়ার করেই অকারণ দীর্ঘায়িত করা হচ্ছিল দিশা রবির মামলাটিকে। দিশার আইনজীবী সেই চক্রান্তের তত্ত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করলেন আজ’।

টানা ১০ দিন হেফাজতে থাকার পরও দিশাকে আরও ৪দিন পুলিশ হেফাজতে রাখতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিল দিল্লি পুলিশ। মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশের সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা বলেন, ‘‘দিশাকে পুলিশি হেফাজতে রাখার পক্ষে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ প্রদর্শন করতে পারেনি।খুব সামান্য যে প্রমাণ দিল্লি পুলিশ আদালতে পেশ করেছে,তা অসম্পূর্ণ। শুধু তার ভিত্তিতে কেন কোনও পূর্ব অপরাধের রেকর্ড না থাকা এক ২২ বছরের তরুণীকে জামিনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।’’

Advertisement

দিশাকে ২৬ জানুয়ারির কৃষক র‌্যালির ষড়যন্ত্রকারী বলে অভিযোগ করেছিল দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল। আদালত জানিয়েছে, পুলিশ তার অভিযোগের সমর্থনে যথেষ্ট প্রমাণ পেশ করতে পারেনি আদালতে। মামলাটিতে রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে টুলকিট মামলায় দিশাকে জামিন দেয় আদালত। একই মামলায় অভিযুক্ত সমাজকর্মী নিকিতা জেকব এবং শান্তনু মুলুক আপাতত শর্তসাপেক্ষ জামিনের আওতায় রয়েছেন।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দিশাকে তাঁর বেঙ্গালুরুর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের সাইবার অপরাধদমন শাখা। দিশার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনেছিল তারা। কৃষক আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কৃষকদের আন্দোলন সংক্রান্ত একটি তথ্যপত্র বা ‘টুলকিট’ নেটমাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন সুইডেনের পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। দিল্লি পুলিশ জানায়, ওই টুলকিট তৈরি করে আসলে দিশাই পাঠিয়েছিলেন গ্রেটাকে। তিনিই ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে গ্রেটাকে ওই টুলকিট শেয়ার করতে অনুরোধ করেন বলেও অভিযোগ করে দিল্লি পুলিশ। তাদের অভিযোগ ছিল, ওই ‘টুলকিট’ বানানোর জন্য খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশন’-এর সঙ্গেও হাত মিলিয়েছিলেন দিশা। সাইবার সেলের যুক্তি ছিল, কৃষক আন্দোলনকে সমর্থনের নামে দিশা যা করেছেন, তা আদতে দেশদ্রোহ। আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় ভারতের দুর্নাম করার পাশাপাশি খলিস্তানপন্থীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন তিনি। দিশার বিরুদ্ধে খলিস্তানপন্থীদের নতুন করে উসকে দেওয়ার অভিযোগও এনেছিল দিল্লি পুলিশ। মঙ্গলবার দিশার আইনজীবী জানিয়েছেন, দিশা কোনও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। তাছাড়া ‘পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশন’ কোনও নিষিদ্ধ সংগঠনও নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন