কুলভূষণ নিয়ে ফের শুরু গোপন কূটনীতি

কুলভূষণ যাদবকে নিয়ে সংবাদমাধ্যম থেকে সংসদ— ভারত-পাকিস্তান চাপানউতোর চলছে সর্বত্র। তার মাঝেই ভারতীয় নৌসেনার এই প্রাক্তন অফিসারকে দেশে ফেরাতে ফের গোপন দৌত্য শুরু করল দুই দেশে।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৭
Share:

কুলভূষণ যাদবকে নিয়ে সংবাদমাধ্যম থেকে সংসদ— ভারত-পাকিস্তান চাপানউতোর চলছে সর্বত্র। তার মাঝেই ভারতীয় নৌসেনার এই প্রাক্তন অফিসারকে দেশে ফেরাতে ফের গোপন দৌত্য শুরু করল দুই দেশে।

Advertisement

পাকিস্তানে কুলভূষণের সঙ্গে তাঁর মা ও স্ত্রী-র সাক্ষাতের পরেই ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ব্যাঙ্ককে পাক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নাসির খান জনজুয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন।

ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আগেও কুলভূষণ নিয়ে গোপন দৌত্য হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের একগুঁয়েমির জন্যই তা ভেস্তে যায়। দু’দেশের মধ্যে বিবাদ থাকলেও চরবৃত্তিতে অভিযুক্ত অফিসারদের নিয়ে কোনও পক্ষই সাধারণত প্রচার তুঙ্গে নিয়ে যায় না। বরং গোপনে এক জন অফিসারকে ফেরত দিলে অন্য পক্ষ কোনও অফিসারকে ফেরত দেয়। ভারতে এখন ২৯৮ জন আইএসআই অফিসার গুপ্তচর সন্দেহে হাজতবাস করছেন। আবার পাকিস্তানেও বন্দি ১০২ জন ভারতীয় অফিসার।

Advertisement

আরও পড়ুন: হাফিজের সংগঠনে আর্থিক অনুদান নিষিদ্ধ করল পাকিস্তান

ট্র্যাক-টু আলোচনায় ভারত জানিয়ে দেয়, কুলভূষণকে ফেরত পাওয়া তাদের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান অনুরোধ মানলে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। তখন পাকিস্তান কাবুলের জেলে বন্দি এক আইএসআই অফিসারকে ফেরত পেতে দিল্লির সাহায্য চায়। ২০১৪ সালে কাবুলের ভারতীয় দূতাবাসে আক্রমণের অভিযোগে ওই অফিসারকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

কিন্তু দিল্লি জানায়, তারা কোনও সাহায্য করতে পারবে না। কারণ, এটা আফগান সরকারের বিষয়। ফলে দু’দেশের মধ্যে ফের গোলমাল শুরু হয়। পাক সেনার মুখপাত্র আসিফ গফুর কুলভূষণ প্রসঙ্গে ভারত-বিরোধী বক্তব্য প্রচার করতে শুরু করেন। পাক বিদেশমন্ত্রী খাজা মহম্মদ আসিফ প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন যে, কুলভূষণকে ফেরত দেওয়া নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল। তার বদলে কিছু অফিসারকে ছাড়ার জন্য দিল্লিকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু ভারত অনমনীয়। এ নিয়ে প্রচার তুঙ্গে তুলতে পাক সংবাদমাধ্যমকেও ব্যবহার করা শুরু করে পাক সেনা।

এই অবস্থায় না চাইলেও ভারতকে পাক-বিরোধী বক্তব্য প্রচার করতে হয়। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের এক সূত্র আজ জানিয়েছে যে সম্প্রতি ত্রিপুরায় নাশকতামূলক কাজের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সন্দেহে এক আইএসআই অফিসার গ্রেফতার হয়েছেন। পাকিস্তান তাঁকেও ফেরত চাইছে। আবার ২০১৪ সালে পেশোয়ারের সেনা স্কুলে হামলায় যুক্ত সন্দেহে পাকিস্তান দু’জন ভারতীয়কে গ্রেফতার করেছে। পাক সেনাবাহিনীর অভিযোগ, ওই হত্যাকাণ্ড ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা র-এর কাজ। এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে দিল্লি। জঙ্গি সংগঠন তেহরিক ই তালিবান ওই হামলার দায়ও নিয়েছিল।

গত সেপ্টেম্বর মাসে নিউ ইয়র্কে এশিয়া সোসাইটিতে অজিত ডোভাল পাক দূতের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এ বার বড়দিনের সময়ে কথা হল ব্যাঙ্ককে। এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘সীমান্তে যতই গোলাগুলি চলুক, কথা কখনওই পুরোপুরি বন্ধ হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন