শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট। পার্টি কংগ্রেসে গিয়ে বাংলার প্রতিনিধিরা ঠিক কী সুরে সওয়াল করবেন, তা ঝালিয়ে নেওয়ার সময় আর পায়নি সিপিএম! অগত্যা হায়দরাবাদ পৌঁছেই পার্টি কংগ্রেসের প্রস্তুতি বৈঠক সারতে হচ্ছে বাংলার প্রতিনিধিদের।
হায়দরাবাদের বাঘলিঙ্গমপল্লিতে কাল, বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে সিপিএমের ২২তম পার্টি কংগ্রেস। এ রাজ্যের সিংহভাগ প্রতিনিধিই দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বৃহত্তর সমঝোতার তত্ত্বের পক্ষে। তবে পার্টি কংগ্রেসের জন্য নির্বাচিত ১৭৫ জন প্রতিনিধির সকলে হায়দরাবাদ যেতে পারছেন না। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েক জন জেলা সম্পাদককে নিজের এলাকায় থেকে যেতে হচ্ছে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য। আলিমুদ্দিনে রাজ্য নেতৃত্বের তরফে সমন্বয়ের জন্য থাকবেন রবীন দেব। প্রতি বারই পার্টি কংগ্রেসের প্রতিনিধি বাছাইয়ের সময় কিছু বিকল্প নাম ঠিক করে রাখা হয়। সেই বিকল্প তালিকা থেকেই কিছু প্রতিনিধি হায়দরাবাদ যাচ্ছেন।
দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, প্রবীণ নেতা বিমান বসু-সহ অনেকেই সোমবার রাতে পৌঁছে গিয়েছেন হায়দাবাদ। এক দল রওনা দিয়েছেন ট্রেনে। বাকিরা আজ, মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে পৌঁছে যাবেন। তার পরে সম্ভব হলে রাতে বা পরদিন পার্টি কংগ্রেসের উদ্বোধনী পর্বের পরে বাংলার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করবেন সূর্যবাবুরা। বিজেপির মোকাবিলায় কংগ্রেস-সহ সব ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সঙ্গে হাত মেলানো যে আশু প্রয়োজন, ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবের যুক্তি সামনে রেখে সেই সওয়ালই আরও জোরালো করতে চান তাঁরা। হাবিব বলেছেন, বৃহত্তর ঐক্যে যেতে না পারলে বামেরা বরং বিজেপি-বিরোধী শক্তির বিভাজন ঘটানোয় অভিযুক্ত হবে। আর বাংলায় তৃণমূলের রাজনীতি যে বিজেপির জমি শক্ত করছে, সেই বিশ্লেষণও আসবে পার্টি কংগ্রেসের আসরে।
ভোটের নির্ঘণ্টের সঙ্গে লড়াই করে পার্টি কংগ্রেস অবশ্য বাংলার সিপিএমের গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে! কোয়ম্বত্তূরে ২০০৮-এর পার্টি কংগ্রেসের পরেই ছিল পঞ্চায়েত ভোট। রাজ্যে বিধানসভা ভোটের জন্য এক বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল ২০১১-র পার্টি কংগ্রেস। আবার বিশাখাপত্তনমে ২০১৫-র পার্টি কংগ্রেস চলাকালীন বাংলায় ছিল কলকাতা-সহ অনেকগুলি পুরসভার ভোট। সূর্যবাবুর কথায়, ‘‘আমাদের অভ্যাস হয়ে গিয়েছে! এ ভাবেই ভাগাভাগি করে পার্টি কংগ্রেসে যেতে হয়! দরকারে কাউকে মাঝপথে ফিরেও আসতে হয়!’’