কংগ্রেসকে নিয়ে সিপিএমে সেই ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’

সিপিএমের রাজনৈতিক লাইন হল, কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও নির্বাচনী সমঝোতা নয়। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে সেই লাইন মেনেই চলতে হবে। তবে তার মধ্যেই কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও আঁতাঁত সম্ভব কি না, রাজ্য কমিটিকেই তার রাস্তাও খুঁজে দেখতে হবে!

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৯
Share:

সিপিএমের রাজনৈতিক লাইন হল, কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও নির্বাচনী সমঝোতা নয়। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে সেই লাইন মেনেই চলতে হবে। তবে তার মধ্যেই কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও আঁতাঁত সম্ভব কি না, রাজ্য কমিটিকেই তার রাস্তাও খুঁজে দেখতে হবে!

Advertisement

আগামী মাসে ৭টি পুর-নির্বাচন ও ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার দাবি তুলেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। সূর্যকান্ত মিশ্রদের সেই দাবির মুখে ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ অবস্থানই নিয়েছে সিপিএমের শীর্ষ কমিটি। পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত, পুর বা পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা যাবে না। যা বলা হচ্ছে না, তা হল, তলে তলে আসন সমঝোতা হতেও পারে। যেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে, সেখানে সিপিএম প্রার্থী না-ও দিতে পারে। কিন্তু বিধানসভা ভোটের মতো যৌথ প্রচার করা যাবে না। কেন্দ্রীয় কমিটি তার পরেই রায় দিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে প্রকাশ্য আঁতাঁত দলের লাইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না। এ বার আগেই আলিমুদ্দিনকে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি।

দলীয় সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সঙ্গে অঘোষিত আঁতাঁত সম্ভব কি না, তা নিয়ে ২৬ ও ২৭ এপ্রিল রাজ্য কমিটির বৈঠকে কথা হবে। সেখানে সীতারাম ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় পাঠানোর বিষয়েও আলোচনা হবে। এ ক্ষেত্রে রাজ্য কমিটি পলিটব্যুরোর কাছে সুপারিশ করবে। ইয়েচুরির নাম ঠিক হলেও তাঁকে বাম-কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা যাবে না। পলিটব্যুরোয় প্রকাশ কারাট-এস আর পিল্লাইরা ইয়েচুরির ফের রাজ্যসভায় যাওয়ার বিরুদ্ধে। যুক্তি, দলের প্রথা অনুযায়ী দু’বারের বেশি কাউকে রাজ্যসভায় পাঠানো যায় না।

Advertisement

কেন্দ্রীয় কমিটিতে সূর্যকান্ত মিশ্ররা দক্ষিণ কাঁথি উপনির্বাচনে বিজেপির উত্থান তুলে ধরে যুক্তি দেন, তৃণমূল ও বিজেপির মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির জোট না হলে এমনই হবে। তাতে কেরল-শিবিরের মন গলেনি। আজ সকালে অরবিন্দ কেজরীবাল কেরল হাউসে গিয়ে পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিজেপির মোকাবিলায় বিরোধী শক্তিগুলির একজোট হওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু পিনারাই জানান, জোটে কংগ্রেসকে রেখে লাভ নেই। দিল্লিতে কংগ্রেস নেতা অরবিন্দ সিংহ লাভলির বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে তিনি বলেন, কংগ্রেসের অবস্থা সব রাজ্যে খারাপ। নেতারা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। সেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রশ্ন আসছে কী করে!

এই চাপের মুখে সীতারাম বলেন, ‘‘শুরুতে অ-কংগ্রেসি ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির সঙ্গে কথা হবে।’’ তালিকায় অবশ্য তৃণমূল নেই। ইয়েচুরির যুক্তি, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তৃণমূলের পাল্টা হল সারদা-নারদ!’’ শুধু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে কংগ্রেস-সহ সব দলের সঙ্গেই কথা বলবে সিপিএম। ইয়েচুরি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি ভবনে ধর্মনিরপেক্ষ নজরদারি জরুরি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন